ঈদ মানেই আনন্দ। মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উত্সব ঈদ। বছরে দুইটি ঈদ থাকে। ঈদুল ফিতর আর ঈদুল আযহা। দুই ঈদেই ছুটি মেলে বেশ কয়েকদিনের। স্কুল, কলেজ, অফিস, আদালত সবস্থানেই ঈদের ছুটির আমেজ থাকে। ঈদের ছুটিতে কেউ নাড়ীর টানে গ্রামের বাড়িতে ছুটে যায়। আবার কেউ ছুটি কাটাতে দেশ কিংবা দেশের বাইরেই বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ান। কেউ আবার রাজধানীতেই থেকে যান। রাজধানীর স্থায়ী বাসিন্দারা তো ঈদের আনন্দ এখানেই উপভোগ করেন।
এবারও ঈদ কাটবে ঢাকাতেই। ঈদের আগের ছুটির দিনগুলোতো কোরবানির পশুর হাটেই কেটে যাবে। এরপর ঈদের দিন কিংবা ঈদের পরের কোরবানি সম্পন্ন করবেন। এরপর কী করবেন কোন পরিকল্পনা করেছেন? কোরবানির মাংস তো খাবেনই, আত্মীয় বন্ধুবাধবের বাড়িতে দাওয়াতও থাকবে। কিন্তু বাড়ির পরিবেশের বাইরে কোথাও ঘুরে আসার পরিকল্পনা করতে পারেন ঈদের ছুটিতে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে রাজধানীর আশপাশেই বিভিন্ন স্থানে ঈদের ছুটি কাটানোর দারুন পরিকল্পনা হতে পারে।
রাজধানীর আশপাশেই বেশ কয়েকটি রিসোর্ট রয়েছে। চাইলে ঈদের ছুটিতে পরিবারকে নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। দিনে গিয়ে দিনেই ফিরে আসা যাবে। রিসোর্টের মনোরম প্রকৃতিক পরিবেশে ছুটি দারুনভাবে উপভোগ করা যাবে। খোলমেলা প্রাকৃতিক পরিবেশ থাকে সেখানে। ঈদ উপলক্ষে রিসোর্টে বিশেষ অফারও থাকে। ভ্রমণপিপাসুদের আকর্ষণ করতেই রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন প্যাকেজ অফারের ব্যবস্থা রাখেন। তাহলে দেরি না করে এখনই পরিকল্পনা করে ফেলুন। ঢাকার আশেপাশে কিছু মনোরম স্থান ও রিসোর্ট সম্পর্কে ধারণা নিতে পারেন এই আয়োজনে।
জল ও জঙ্গলের কাব্য
টঙ্গীর পুবাইলের প্রায় ৯০ বিঘা জমির উপর গড়ে উঠেছে রিসোর্টটি। গ্রামীণ আবহ ফুটিয়ে তুলতে বাঁশ, পাটখড়ির বেড়া, দিগন্ত বিস্তৃত জলরাশি ও ছনের ছাউনি দিয়ে সাজানো হয়েছে পুরো রিসোর্ট। দর্শনার্থীদের জন্য় বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে। সেখানেই চাষ করা হয় শাক-সবজি। বিলে রয়েছে মাছ। যেগুলো রান্না করেই খাবার পরিবেশন হয় দর্শনার্থীদের জন্যে। সারা দিন ঘুরে আসতে প্যাকেজ অনুযায়ী খরচ হবে ১৫০০ থেকে ৩৫০০ টাকা। রাত্রী যাপনে খরচ হবে ৪৫০০ থেকে ৫৫০০ টাকা।
জিন্দা পার্ক
ঢাকার মধ্যেই অবস্থিত জিন্দা পার্ক। পূর্বাচল হাইওয়ের কাছেই এর অবস্থান। খোলামেলা পরিবেশ আর সবুজের মধ্যে ঘোরাঘুরি করতে সেখানে যেতে পারেন। পার্কের রেস্টুরেন্টে খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। জনপ্রতি টিকিট কেটে সেখানে যেতে হবে।
উত্তরার দিয়াবাড়ি
যারা উত্তরায় থাকেন তারা ১৫ নং সেক্টরে দিয়াবাড়ি ঘুরে আসতে পারেন। যেকোনো বিকেলেই পরিবার নিয়ে সেখানে বেরিয়ে আসুন। খোলামেলা পরিবেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ছোঁয়া পাবেন। সেখানে দর্শনার্থীদের জন্য় বিভিন্ন ব্যবস্থা রয়েছে। ছুটির সময়টা উপভোগ করতে পারবেন।
গোলাপ গ্রাম
সাভারের বিরুলায় রয়েছে গোলাপ গ্রাম। ঈদের ছুটিতে গ্রামের পরিবেশে ঘুরে বেড়াতে এটি হতে পারে সেরা পরিকল্পনা। কারণ এখানে রয়েছে আঁকাবাঁকা সরু পথ। পথের পাশ ঘেঁষেই রয়েছে অসংখ্য গোলাপের বাগান। তবে গরমকালে গোলাপ খুব একটা দেখা যাবে না। তবুও গ্রামের পরিবেশটা উপভোগ করে আসতে পারেন। গোলাপ বাগান উপভোগ করতে শীতের সময়টাই ভালো হবে।
ছুটি রিসোর্ট
গাজীপুরের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান ঘেঁষে নির্মিত হয়েছে ছুটি রিসোর্টটি। ইতোমধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এটি। প্রায় ৫০ বিঘা জায়গার উপর নির্মিত রয়েছে এই রিসোর্ট। এখানে রয়েছে শহুরে স্পোর্টস জোন, রেস্তোরাঁ, সুইমিংপুল। যারা ক্যাম্পিং করতে পছন্দ করেন তাদের জন্যও এটি সেরা পছন্দ হতে পারে। মাছ ধরার ও নৌকা ভ্রমণের ব্যবস্থাও রয়েছে। এখানে ২১টি কটেজ রয়েছে। যার ভাড়া পড়বে ৮ হাজার থেকে ১৭ হাজার টাকা।
সুবর্ণভূমি রিসোর্ট
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় মেঘনা নদীর তীরে রয়েছে সুবর্ণভূমি রিসোর্ট। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা রিসোর্টটি মন ভালো করে দেবে। এটি বিলাসবহুল রিসোর্ট। যার ভাড়া শুরু হবে ১১ হাজার থেকে। ২৮ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার প্যাকেজ পেয়ে যাবেন ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার মধ্যেই।
সি শেল এমিউজমেন্ট পার্ক ও রিসোর্ট
রাজধানীর কুড়িল ফ্লাই ওভার থেকে মাত্র ১০ মিনিট দূরত্বে ৩০০ ফুট রাস্তা সংলগ্ন পূর্বাচল রাজউক নতুন শহরের সেক্টর-৩-এ রয়েছে সি শেল এমিউজমেন্ট পার্ক ও রিসোর্ট। এটি বিনোদন পার্ক। এখানে রয়েছে সি শেল পার্ক, বৃত্তাকার বাগান, সুইমিং পুল, এবং পার্টি সেন্টার। ১০০ টাকা প্রবেশ মূল্য দিয়ে সারাদিন ঘুরে আসা যাবে। পার্কের বিভিন্ন রাইডগুলোর জন্য আলাদা খরচ। যেগুলো টিকিট মূল্য ৫০ থেকে ১০০ টাকা। সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে প্রতি ঘণ্টায় ২০০ টাকা খরচ হবে। রিসোর্টের এসি ও নন-এসি ডিলাক্স রুম ভাড়া পাওয়া যাবে ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকায়।