কোনটি পছন্দ? পাহাড় না সমুদ্র? যদি পাহাড়প্রেমী হন তবে ঘুরে আসতে পারেন বাংলার দার্জিলিং থেকে। এর জন্য বেশি দূর যেতে হবে না। কারণ বাংলার দার্জিলিং হচ্ছে নীলগিরি। যেখানে রয়েছে প্রকৃতির অবিরাম সৌন্দর্যের লীলাভূমি। বাংলাদেশের বান্দরবান জেলায় এটি অবস্থিত। জেলার সদর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে যেতে হবে এর সৌন্দর্য দেখতে। উঁচু পাহাড় আর মেঘের সমন্বয়ে নীলগিরির সৌন্দর্য যেন হৃদয়কে নাড়া দেয়। তাইতো বছরে একবার হলেও পর্যটকরা ছুটে যায় পাহাড়ের টানে। সেখানে রয়েছে প্রায় ২২০০ ফুট উঁচু পাহাড়। যার গোড়া থেকে চূড়া পর্যন্ত সবুজের চাদরে ঢাকা।
মাত্র তিন দিনের সময় হাতে নিয়েই ঘুরে আসতে পারেন নীলগিরি। কেউ কেউ তো একদিনের টানা জার্নি করে নীলগিরির সৌন্দর্য উপভোগ করে আসেন। নীলগিরি যেতে হলে প্রথমে বান্দরবান পৌছাতে হবে। ঢাকা থেকে নন এসির ভাড়া ৫০০-৫৫০ এবং এসি বাসের ভাড়া ৯০০-১৬০০ টাকা হবে। ৭-১০ ঘণ্টায় পৌছে যাবেন বান্দরবান।
বান্দরবান থেকে যেতে হবে নীলগিরি। মেঘের মেলা দেখতে খুব ভোরে রওনা করুন। বান্দরবন থেকে কয়েকটি মাধ্যম রয়েছে। জিপ, মহেন্দ্র, সিএনজি, লোকাল বাস এবং চান্দের গাড়ি দিয়ে নীলগিরি পৌঁছাতে পারেন। রিজার্ভ গাড়ি নিতে পারেন। পরিবারের সদস্য বেশি হলে কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে গেলে, অথবা কোনো গ্রুপে নীলগিরি ভ্রমণে গেলে রিজার্ভ গাড়ি করে নেওয়াই ভালো হবে। রিজার্ভ গাড়ি হলে নীলগিরি যাওয়ার পথের অন্য জায়গাও ঘুরে দেখা যাবে।
যারা একদিনেই নীলগিরি ঘুরে আসতে চাচ্ছেন তারা জিপ নিতে পারেন। গাড়ি অনুযায়ী ভাড়া পরবে। ৩-৬ হাজার টাকায় ভাড়া পাওয়া যাবে। চান্দের গাড়ি, সিএনজি, ছোট জিপও নীলগিরি পৌছে দিবে আপনাকে।
যাদের বাজেট কম তারা লোকাল বাসেও নীলগিরি পৌঁছাতে পারেন। তবে গন্তব্যে পৌছাতে সময় বেশি লাগবে। ১০০-১২০ টাকায় লোকাল বাসে ভ্রমণ করতে পারবেন।
নীলগিরি যাওয়ার পথে সেনা চেকপোস্ট রয়েছে। সেখানে পর্যটকদের নাম ও ঠিকানা লিপিবদ্ধ করা হয়। নিরাপত্তার খাতিরে বিকেল ৫টার পর নীলগিরির পথে কোনো গাড়ি যেতে দেওয়া হয় না।
নীলগিরি পৌছানোর পর পর্যটনকেন্দ্রে যেতে জনপ্রতি টিকিট কিনতে হবে। যার মূল্য হবে ৫০ টাকা। তাছাড়া গাড়ির জন্যও পার্কিং বাবদ ৪০০ টাকা দিতে হবে।
নীলগিরিতে থাকতে চাইলে কটেজে থাকতে পারেন। আগে থেকেই বুকিং দিতে হবে। এসব কটেজের বিভিন্ন রুমের ভাড়া পরবে ৫-১০ হাজার টাকা। তবে মৌসুমের উপর নির্ভর করে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। অফ সিজনে ভিড় কম হবে এবং ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যাবে।
নীলগিরিতে খাওয়া দাওয়ার জন্য ভালো মানের রেস্টুরেন্টও রয়েছে। সেখানে আগে থেকে খাবার অর্ডার করে রাখতে হবে। যদি একদিনেই ঘুরে আসতে চান তবে বান্দরবানে ফিরে খাবারের হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও ক্যাফেতে খাওয়া দাওয়া সেরে নিতে পারেন।
নীলগিরির পথে যেতে আরও কয়েকটি পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে। পর্যটকরা রিজার্ভ গাড়িতে গেলে শৈলপ্রপাত ঝরনা, মিলনছড়ি ভিউ পয়েন্ট, চিম্বুক পর্যটন কেন্দ্র ও সাইরু হিল রিসোর্টসহ কয়েকটি পর্যটনকেন্দ্র ঘুরে দেখতে পারেন। তবে আগে সরাসরি নীলগিরি চলে যাওয়াই ভালো। ফেরার পথে অন্য পর্যটনকেন্দ্রগুলো দেখে আসতে পারেন।