• ঢাকা
  • বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ঈদের ছুটিতে টাঙ্গুয়ার হাওরে যেতে চান? জেনে নিন হাউসবোটে ভ্রমণের কিছু তথ্য


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২৪, ০১:৩৭ পিএম
ঈদের ছুটিতে টাঙ্গুয়ার হাওরে যেতে চান? জেনে নিন হাউসবোটে ভ্রমণের কিছু তথ্য
ছবি: সংগৃহীত

ঈদের ছুটিতে অনেকেই বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণে যায়। এ সময় ভ্রমণের জন্য সুন্দর জায়গা হলো  টাঙ্গুয়ার হাওর। এবারের ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন টাঙ্গুয়ার হাওরের বর্ষার রূপ দেখতে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মিঠা পানির জলাভূমি এই টাঙ্গুয়ার হাওর সুনামগঞ্জ জেলায় অবস্থিত যাকে স্থানীয় লোকজন বলে নয়কুড়ি কান্দার ছয়কুড়ি বিল। বর্ষাকাল এই হাওর ভ্রমণের সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। মেঘালয়ের ঢলে নেমে আসা পানিতে তখন হাওর কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠে। এই জলরাশির ওপর মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকে হিজল ও করচগাছের বন। হাওরে জালের মতো ছড়িয়ে থাকা নদী, নালা ও খাল বর্ষায় মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়।

  • পর্যটকদের জন্য কয়েক বছর হলো হাওরে ভাসছে বিশেষায়িত সব হাউসবোট। টাঙ্গুয়ার হাওরের পর্যটকবাহী বেশির ভাগ হাউসবোটই সুনামগঞ্জ শহরের সাহেববাড়ির ঘাট থেকে ছেড়ে যায়। কিছু হাউসবোট তাহিরপুর উপজেলা সদরের থানা ঘাট থেকেও ছাড়ে। সুনামগঞ্জ নেমে সুরমা নদীর ওপর নির্মিত বড় ব্রিজের কাছে লেগুনা/সিএনজি/বাইক করে তাহিরপুরে যাওয়া যায়। সময় লাগবে প্রায় দেড় ঘণ্টা। তাহিরপুর থেকে হাউসবুট ভাড়া কম। তাহিরপুর থেকে হাওরে প্রবেশের দূরত্ব কমে আসে বলেই নৌকাভাড়া অপেক্ষাকৃত কম।
  • হাউজ বোট ভাড়া করতে হলে আগে থেকেই বুকিং করতে হয়। হাউজ বোটে ভ্রমণ করতে চাইলে আপনার কাজ হবে শুধু সুনামগঞ্জ বা তাহিরপুর পৌঁছানো। এরপর ভ্রমণের সব দায়িত্ব হাউজ বোটের। কোনোটার নাম ‘বর্ষা’, কোনোটা ‘জলনিবাস’ বা ‘মেঘদূত বাহারি নামের এসব হাউসবোটের নামেই ফেসবুক পেজ আছে। পেজে দেওয়া নম্বরে যোগাযোগ করে বুকিং করতে পারেন।
  • হাউসবোট বুকিং করার আগে তাদের প্যাকেজ সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন। হাউজ বোট সুনামগঞ্জ শহরের সাহেব বাড়ি ঘাট থেকে ছাড়বে নাকি তাহিরপুর থেকে ছাড়বে তা আগে থেকেই জেনে নিতে হবে। সাহেব বাড়ি ঘাট থেকেই হাউজবোট ছাড়লে তখন কষ্ট করে তাহিরপুর যাবার প্রয়োজন পড়ে না।
  • নৌকার ভাড়া কয়েকটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। যেমন নৌকার আকার, ধারণক্ষমতা, সুযোগ-সুবিধা, মৌসুম ইত্যাদি। এছাড়াও ছুটির দিনে ভাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিনের তুলনায় কিছুটা বেশি থাকে।
  • এক রাত থাকার জন্য ছোট নৌকাগুলোর ভাড়া পড়ে ৪ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা, মাঝারি আকারের নৌকাগুলোর ৬ হাজার থেকে ৮ হাজার এবং বড় নৌকাগুলোর ৮ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকার মতো।
  • বর্তমানে টাঙ্গুয়ার হাওর ঘুরে আসার জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন হাউজবোট রয়েছে। হাউসবোট ভেদে ১০-২৪ জন পর্যন্ত স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণ করা যায়। এসব নৌযানে খাবারদাবারসহ দুই দিন ও এক রাতের প্যাকেজ জনপ্রতি ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা।
  • এই হাউজবোটে প্রায় ২৪ ঘণ্টাই বিদ্যুতের ব্যবস্থা আছে। ফলে পর্যাপ্ত লাইট, ফ্যান ও ইলেকট্রনিকস গ্যাজেট চার্জের ব্যবস্থা পেয়ে যাবেন বোটের ভেতরেই। তারপরও অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে সাথে নিতে পারেন টর্চ, পাওয়ার ব্যাংক, ফোন/ক্যামেরা রাখার জন্য ওয়াটারপ্রুফ প্লাস্টিক ব্যাগ/জিপলক ব্যাগ, পর্যাপ্ত খাবার পানি, অতিরিক্ত জামা কাপর ও লাইফ জ্যাকেট। তাহিরপুর বাজারে আইপিএস ও লাইফ জ্যাকেট ভাড়া পাওয়া যায়। নৌকায় যদি বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ও লাইফ জ্যাকেট না থাকে তবে সেগুলো ভাড়া করে নিতে হবে।
  • হাউসবোটগুলো সকালেই হাওরের উদ্দেশে ঘাট ছাড়ে। এরপর টাঙ্গুয়ার হাওরের ওয়াচ টাওয়ারে গিয়ে বিরতি দেয়। ওয়াচটাওয়ার এলাকায় এসে পানিতে নেমে আশপাশের জলাবনে ঘুরে বেড়ানো যায়। ওয়াচটাওয়ারের ওপরতলায় উঠে হাওর অঞ্চলের সৌন্দর্য বেশ ভালোভাবে দেখতে পাওয়া যায়। সেখান থেকে বিকেল নাগাদ চলে যায় টেকেরঘাট, রাতে ওখানেই নোঙর করা থাকে। এখানকার শহীদ সিরাজ লেকে (নীলাদ্রি) সন্ধ্যা কাটান পর্যটকেরা। তারা দ্বিতীয় দিন টেকেরঘাট থেকে শিমুলবাগান, বারিকটিলা, জাদুকাটা নদী হয়ে সন্ধ্যার আগেই আবার সুনামগঞ্জের সাহেববাড়ি বা তাহিরপুর ঘাটে ফিরে আসেন।
Link copied!