• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসুন বাগেরহাট ষাটগম্বুজ মসজিদে


বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২৪, ১১:৪৮ এএম
ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসুন বাগেরহাট ষাটগম্বুজ মসজিদে

ভাবছেন এবার ঈদের ছুটিতে কোথায় ঘুরতে যাবেন। চিন্তা নেই, প্রিয়জনদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্যতম পুরাকীর্তি বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদ।

সুলতান নসিরউদ্দীন মাহমুদ শাহের (১৪৩৫-৫৯) আমলে খান আল-আজম উলুগ খানজাহান সুন্দরবনের কোল ঘেঁষে খলিফাবাদ রাজ্য গড়ে তোলেন। খানজাহান বৈঠক করার জন্য একটি দরবার হল গড়ে তোলেন যা পরে ষাটগম্বুজ মসজিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়।

তুঘলকি ও জৌনপুরী নির্মাণশৈলী এতে সুস্পষ্ট। ষাটগম্বুজ মসজিদ বাগেরহাট শহর থেকে মাত্র সাত কিলোকিটার দূরে খুলনা-বাগেরহাট মহাসড়কের উত্তর পাশে ষাটগম্বুজ বাস স্টপেজ লাগোয়া সুন্দরঘোনা গ্রামে অবস্থিত। হজরত খানজাহানের (র.) পৃষ্ঠপোষকতায় নির্মিত অপূর্ব কারুকার্যময় এ মসজিদটি খানজাহানের (মাজার) দরগাহ থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। স্থাপত্য কৌশলে ও লাল পোড়া মাটির ওপর লতাপাতার অলংকরণে পাঁচ শতাব্দীরও বেশি পুরনো এ মসজিদ এক বিশেষ স্থান অধিকার করে রয়েছে। ষাটগম্বুজ মসজিদ নামে পরিচিত হলেও এ মসজিদে মধ্যযুগীয় স্থাপত্যশৈলীর মোট ৮১টি গম্বুজ রয়েছে। এ মসজিদটি দেখতে প্রতিদিন অসংখ্য দেশি-বিদেশি দর্শনার্থী আসেন।

ষাটগম্বুজ ছাড়াও বাগেরহাট এলে ঘুরে দেখতে পারবেন খান জাহানের নির্মিত প্রাচীন রাস্তা, জিন্দাপীর মসজিদ, নয় গম্বুজ মসজিদ, সিংড়া মসজিদ, রণবিজয়পুর মসজিদ, চুনাখোলা মসজিদ, বিবি বেগনী মসজিদ, সাবেকডাঙ্গা পুরাকীর্তিসহ অন্যান্য ঐতিহাসিক নিদর্শন।

ষাটগম্বুজ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান বাচ্চু বলেন, প্রতিদিনই দেশি-বিদেশি পর্যটকরা আসেন। তবে ঈদের ছুটিতে ষাট গম্বুজ মসজিদ ও খান জাহান আলীর মাজার এলাকায় দর্শনার্থীদের ভিড় বেশি হয়। হাজারো দর্শকের পদচারণায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে এখানে।

ষাটগম্বুজ মসজিদের পাশেই রয়েছে একটি জাদুঘর। ইউনেস্কোর সহযোগিতায় বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এটি প্রতিষ্ঠা করেছে। ঐতিহাসিক এলাকাটি থেকে প্রাপ্ত প্রাচীন নিদর্শনগুলো এখানে সংরক্ষণ করা হয়েছে যাতে বাগেরহাটের ইতিহাস সম্পর্কে মানুষকে জানানো যায়।

এখানে তিনটি প্রদর্শনী কক্ষ রয়েছে যেখানে ‘বাগেরহাটের ঐতিহাসিক মসজিদের শহর’ সংক্রান্ত প্রাচীনলেখনী, সিরামিক, টেরাকোটা ও কারুকার্যময় ইটের নিদর্শন রয়েছে। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক দালানের ছবিও প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে।

বাগেরহাট জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান মো. যায়েদ বলেন, ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ষাটগম্বুজ মসজিদ ও হজরত খানজাহানের (র.) মাজারসহ বাগেরহাটের পর্যটন স্পটগুলো দেখতে প্রতি ঈদের ছুটিতে ব্যাপক পর্যটকের আগমন ঘটে। সাধারণের জন্য জনপ্রতি টিকেট এর দাম ত্রিশ টাকা। শিক্ষার্থীদের জন্য দশ টাকা। বিদেশি দর্শনার্থীর (সার্ক ভুক্ত) জন্য টিকেট মূল্য ২০০ টাকা, সার্কভুক্ত নয় এমন বিদেশি দর্শনার্থীদের জন্য টিকেট মূল্য ৫০০ টাকা। এ ছাড়াও প্রাইমারি লেভেলে পড়াশোনা করে এমন ছাত্র/ছাত্রীদের বিনামূল্যে প্রবেশের সুযোগ রয়েছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

গ্রীষ্মকালে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কেল্লা খোলা থাকে। মাঝখানে দুপুর ১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত আধঘণ্টার জন্য বন্ধ থাকে।

ঢাকা থেকে সড়ক পথে বিভিন্ন পরিবহনে মাত্র ৩ঘন্টায় আসা যাবে বাগেরহাট ষাটগম্বুজ মসজিদে। হজরত খানজাহান (র.) মাজার গেটে মানসম্মত দুটিসহ বাগেরহাট শহরে থাকার জন্য বেশ কয়েকটি হোটেল রয়েছে।

Link copied!