রাজার পাহাড়, নামটা শুনলেই কেমন যেন এক অন্যরকম অনুভূতি হয়। মনে নানা প্রশ্ন আসে, রাজার পাহাড়ে কি রাজার বসবাস? যদি রাজা না থাকে তাহলে কি আছে রাজার পাহাড়ে? কিংবা কেন হলো রাজার পাহাড়? এরকম বহু প্রশ্নে উত্তর পেতে আপনি আপনার পরিবার নিয়ে চলে যেতে পারেন শেরপুরে। এই পাহাড়ের অবস্থান ময়মনসিংহ বিভাগের শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলায়। এটি শ্রীবরদীর ঢেউফা নদীর তীরে অবস্থিত পাহাড় ও নদী পরিবেষ্টিত পর্যটন কেন্দ্র।
জনশ্রুতি আছে, প্রাচীনকালে এখানে এক স্বাধীন রাজা ছিলেন। তিনি অত্যন্ত প্রতাপশালী ছিলেন। আর তার নামানুসারে এই জায়গাকে রাজার পাহাড় বলা হয়।
রাজার পাহাড় এলাকার চারপাশ শুধু পাহাড় আর নদী ঘেরা। ঢেউফা নদীর তীরে গারো পাহাড়ের সবচেয়ে উঁচু রাজার পাহাড়ের চূড়ায় শতাধিক হেক্টর সমতল ভূমি রয়েছে। এই পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায় নানা রকম ফলের বাগানের দেখা মেলে। স্থানীয়রা বলে, পাগলা দারোগা নামে এক ব্যক্তি পাহাড়ের চূড়ায় গিয়ে বসবাস শুরু করেন। তার ছেলে মেয়েরাই এই পাহাড়ের বিভিন্ন কোণায় কোণায় ফলের বাগান করেন।
গারো পাহাড়ে যতগুলো পাহাড় আছে তার মধ্যে রাজার পাহাড়ের উচ্চতা সবচেয়ে বেশি। এই ভ্রমণে গেলে আকাশ ছোঁয়া বিশাল পাহাড়ের নৈস্বর্গিক দৃশ্য আপনার মনকে আরও প্রাকৃতিপ্রেমী করে তুলবে। এর চূড়ার বিশাল সমতল ভূমিতে যেতে সরু পথ আর অদ্ভুত নির্জনতা যে কাউকে মুগ্ধ করবেই। আর ওই পথে যেতে যেতে যখন কানে আসবে বুনো পাখির ডাক।
এই পাহাড়ের উপর হতে দূরের ভারতের কিছুটা সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। এছাড়া পাহাড়ের কাছে রয়েছে বিডিআর ক্যাম্প, ওয়ার্ল্ড ভিশন, বিট অফিস, কারিতাস এবং রাবার বাগান। পাহাড়ের আশেপাশে রয়েছে আদিবাসী জনপদ বাবেলাকোনার। এই গ্রাম্য বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও জীবনধারা আপনাকে আরও মুগ্ধ করবে।
যেভাবে যাবেন
বাংলাদেশের যে কোনো জায়গা থেকে প্রথমে শেরপুর যেতে হবে। আর ঢাকা থেকে যেতে চাইলে ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ড্রিমল্যান্ড, আনন্দ, তুরাগসহ আরও কিছু এসি ও নন-এসি বাসে শেরপুর যেতে হবে। মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে দুপুর ২ টার সময় শেরপুর যাওয়ার এসি বাস ছাড়ে। ভাড়া বাস অনুযায়ী ১০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা হতে পারে। শেরপুরে নেমে স্থানীয় পরিবহনে প্রায় ৩৪ কিলোমিটার দূরে শ্রীবরদী উপজেলার কর্ণঝোরা বাজারে যেতে হবে। বাজারের কাছেই রয়েছে রাজার পাহাড়।