শুক্রবার মানেই ছুটির দিন, পরিবারের দিন। সারা সপ্তাহের অনেকটা সময় তো অফিসকে দিতে হয় তাই শুক্রবার আসলেই সেদিনটা পরিবারকে সময় দিতে হয়। পরিবারের সঙ্গে ভালো সময় কাটাতে ঢাকাবাসীরা বেড়িয়ে আসতে পারেন আশেপাশের কোনও একটা জায়গা থেকে। এতে যেমন পরিবারকে সময় দেওয়া হবে তেমনি আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো হবে। তেমনই একটা জায়গা হলো পুরান ঢাকা। ইতিহাস, সংস্কৃতি আর অসাধারণ সব খাবারের স্বাদে পরিপূর্ণ এই শহর আপনাকে দেবে নানা অভিজ্ঞতা। তাই এই ছুটির দিনে ঘুরে আসুন পুরান ঢাকার কিছু ঐতিহাসিক স্থানে।
আহসান মঞ্জিল
বুড়িগঙ্গার পাড়ে নির্মিত বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা আহসান মঞ্জিল। এই মঞ্জিল আপনাকে যেমন মুগ্ধ করবে তেমনি ইতিহাসকেও জানাবে। এটি পূর্বে ছিল ঢাকার নবাবদের আবাসিক প্রাসাদ ও জমিদারীর সদর কাচারি যা বর্তমানে যাদুঘর। নবাব এবং তার উজির, নাজির সেনাপতিদের ব্যবহৃত পোশাক, ঢাল, তলোয়ার, কামানসহ বিভিন্ন অস্ত্র, থালা-বাসন, আসবাবপত্রসহ নানা রকম চোখ ধাঁধানো জিনিসের দেখা মিলবে এখানে।
জমিদার, নবাবদের সঙ্গে পরিচয় করাবে এই মঞ্জিল। তার সঙ্গে হবে বুড়িগঙ্গা দর্শনও।
বলধা গার্ডেনের আনন্দ
ঢাকা শহরের ওয়ারী এলাকায় অবস্থিত প্রাচীন উদ্যান বলধা গার্ডেন। ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত বাংলার এ অঞ্চলের এটি অন্যতম প্রাচীন উদ্যান। ভাওয়াল জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী ১৯০৯ সালে এই বাগান ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা করেন। বদলা গার্ডেনের আয়তন ৩.৩৮ একর।
এখানে দেখা পাবেন এমন কিছু গাছ যেগুলো দেশের আর কোথাও দেখা পাওয়া যায় না। নানান রকম দেশী-বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির গাছ আপনাকে যেমন দেবে প্রশান্তি তেমনি গাছেদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ। বিশেষ করে আপনার সন্তানের অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করতে এই গার্ডেন। এই বাগানের অন্যতম আর্কষণ ‘সেঞ্চুরি প্লান্ট’, যা ফুল ফোটে শতবর্ষে একবার। আরও আছে সূর্য ঘড়ি যা আপনাকে এবং আপনার সন্তাকে ইতিহাসের সঙ্গে পরিচয় করাবে।
ঋষিকেশ দাস রোড
ব্রিটিশদের সময় নির্মিত বড় বড় দালানের দেখা মেলে ঋষিকেশ দাস রোডে। এই সড়কের দুই ধারে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে ব্রিটিশ আমলে তৈরি ভবন।
এই রাস্তা আপনাকে নিয়ে যাবে শত বছর পূর্বে। মনে হবে আপনি যেন শত বৎসর পূর্বের কোন সড়ক ধরে হেটে যাচ্ছেন। কারণ শত বছর আগে নির্মিত এই বাড়িগুলো তো তারই পরিচয় বহন করে। অর্ধবৃত্তাকার খিলানযুক্ত বাড়িগুলোর ঘুলঘুলিতে দেখা মিলবে রঙিন কাঁচের চমৎকার কারুকাজ, পেডিমেন্টগুলোও দারুণ আলংকরিক। বাড়ির ব্যালকনিগুলোতেও দেখা যায় কাঠ ও লোহা দিয়ে তৈরি কারুকাজ।
বিউটি বোর্ডিং
এ শহরে বাস অথচ বিউটি বোর্ডিংয়ের কথা শুনেননি তা হয় না। পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঘুরে আসুন শিরীষ দাস লেইনে অবস্থিত বিউটি বোর্ডিংয়ে। গেলেই বুঝতে পারবেন এ যেন একটি প্রাণবন্ত সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এখানে এক সময় ঢাকার সব কবি, সাহিত্যিক, রাজনীতিক আর সাংস্কৃতির ব্যক্তিদের আড্ডা কিংবা মিলনস্থল ছিল। এখন ঐতিহ্যবাহী এই ভবনটি মোটেল ও রেস্তোরাঁ হিসেবে কাজ করে। এখনও দেখা মিলে কবি সাহিত্যিকদের। তাইতো পরিবার নিয়ে চলে যান এখানে।