সাধারণত মানুষের আবাস্থলে মানুষের আধিপত্যই থাকে বেশি। রাজত্য থাকে মানুষের হাতেই। তবে আইসল্যান্ডের উত্তর উপকূলের দ্বীপ গ্রিমসেতে দেখা যায় উল্টা চিত্র। পাখির এই রাজত্যে বাস করে মাত্র ২০ জন।
ইউরোপের দেশগুলির মধ্যে সবচেয়ে বিচ্ছিন্ন, নির্জন এলাকা গ্রিমসে, যার আয়তন সাড়ে ছয় বর্গকিমি। পুরো দ্বীপটি দখলে আছে নানা প্রজাতির পাখি। এখানে ১০ লক্ষ সামুদ্রিক পাখির বসবাস।
বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, এই দ্বীপটি মেরুবৃত্তের মধ্যে আইসল্যান্ডের একমাত্র বাসযোগ্য অঞ্চল। হাল্লা ইঙ্গলফসডত্তির নামের একজন ট্যুর গাইড এই জায়গাটির প্রেমে পড়ে। পরে তিনি সহ মোট ২০ জনের একটি দল আইসল্যান্ডের রাজধানী থেকে এখানে এসে গড়ে তুলে গ্রাম। আর এই গ্রামটিকেই ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে প্রত্যন্ত গ্রাম হিসাবে ধরা হয়ে থাকে।
এই দ্বীপে মানুষ, পাখি ছাড়াও বেশ কিছু স্থানীয় প্রজাতির ঘোড়া ও ভেড়ার পাল দেখা যায়। মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এই দ্বীপে নেই বিদ্যুত সংযোগ, নেই কোনও হাসপাতাল, ডাক্তার, পুলিশ স্টেশন। তিন সপ্তাহ পর পর এক জন চিকিৎসক এই দ্বীপে এসে সকলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে যান। এছাড়া যে কোন দুর্যোগ মোকাবিলায় তাদের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর গ্রিমসের নিস্তব্ধতা উপভোগ করতে এখানে নানা জায়গা থেকে পর্যটকরা ছুটে আসে। এমনকি পর্যটক হিসেবে আসে পাফিন নামের এক প্রজাতির পাখিও। এদের সাধারণত গ্রীষ্ম কালে দেখা যায়। তবে একই সঙ্গে যেসব পাখি, পাহাড়ের সুন্দর্য উপভোগ করতে আগ্রহী সেসব মানুষ ছুটে চলে গ্রিমসেতে। পাখি দেখে, পাখিদের ছবি তুলে। সামুদ্রিক পাখি ‘আর্কটিক টার্নস’, ‘রেজ়ারবিল’, ‘গিলেমোটস’ এবং ‘ব্ল্যাক ফুট কিটিওয়াক’-সহ আরও অনেক ধরণের পাখির দেখা মেলে গ্রিমসে।
এই দ্বীপের বাসিন্দাদের জন্য রয়েছে একটি ক্যাফে, লাইব্রেরি, সুইমিং পুল, স্কুল এবং গির্জা। যদিও স্থানীয় স্কুলঘরটি এখন একটি কমিউনিটি সেন্টার হিসাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। দিনে এক ঘন্টা খোলা থাকে একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরও।