• ঢাকা
  • শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শীতের শুরুতে ঘুরে আসুন ‘দেবতাখুম’


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২১, ০৩:০২ পিএম
শীতের শুরুতে ঘুরে আসুন ‘দেবতাখুম’

আমরা জানি বান্দরবানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ছোট-বড় অনেক খুম। খুম অর্থ হলো মূলত জলাধার। এই অনেক খুমের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর ও বড় খুম হলো দেবতাখুম। এর দৈর্ঘ্য হলো ৬০০ ফিট। জানা যায়, এসব খুমের মধ্যে লুকিয়ে থাকে বিশালাকার সব বন্যপ্রাণী। দেবতাকুম বা দেবতাখুম বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়িতে অবস্থিত একটি খুম।

বান্দরবান জেলা শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরের রোয়াংছড়ি উপজেলার শীলবাঁধা পাড়ায় দেবতাখুমের অবস্থান। খুমের গভীরতা এখানে ৫০ থেকে ৭০ ফিট। যারা ট্রাকিং কিরতে পছন্দ করেন তাদের জন্য দেবতাখুব হবে আদর্শ।  মাত্র ২-৩ হাজার টাকার মধ্যেই ডে লং ট্যুরে ঘুরে আসতে পারবেন দেবতাখুম থেকে।

দেবতাখুম কখন যাবেন

দেবতাখুম সবসময় যাওয়া যায়। একেক সময় এর একেক রূপ। বর্ষাকালে পানি প্রবাহ বেশি থাকে আর শীত কালে কমে যায়। কিন্তু একেবারেই ফুরিয়ে যায়না। তাই দেবতাখুব যাওয়ার সব থেকে ভালো সময় হলো বর্ষার পর পর আর শীতের একটু আগে। মানে সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাসে।

দেবতাখুম যেভাবে যাবেন

দেবতাকুম যেতে হলে প্রথমে বান্দরবান যেতে হবে। ঢাকা থেকে এসি/নন এসি সব ধরনের বাসই বান্দরবান যায়। নন এসির মধ্যে শ্যামলী, সৌদিয়া, ইউনিক, ডলফিন, সেন্টমার্টিন, এস আলম ইত্যাদি পরিবহনের বাস পাবেন। বাস ছাড়ে কলাবাগান, ফকিরাপুল ও সায়েদাবাদ থেকে। ভাড়া ৫৮০ থেকে ৬২০ টাকা। এসি বাসের ভাড়া ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে।

ট্রেনে যেতে চাইলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যেকোনো ট্রেনে উঠতে হবে। সোনার বাংলা এক্সপ্রেস, সূবর্ণ এক্সপ্রেস, তূর্ণা নিশীথা, চট্টলা, মহানগর ও গোধুলী সহ অনেকগুলো ট্রেইন ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ট্রেন ও আসন ভেদে ভাড়া ২০০ থেকে ১০০০ টাকার মধ্যে।

চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবানের বাস ছাড়ে নতুন ব্রিজ, দামপাড়া ও বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকে। বহদ্দারহাট থেকে ৩০ মিনিট পরপর ‘পূর্বাণী’ ও ‘পূরবী’ নামে দুটি পরিবহনের বাস ছাড়ে। ভাড়া ২২০ টাকা।

বান্দরবান থেকে দেবতাখুম যেতে হলে প্রথমে যাবেন রোয়াংছড়ি উপজেলার কচ্ছপতলী আর্মি ক্যাম্পে। প্রথমে বাসে করে রোয়াংছড়ি, পরে ওখান থেকে সিএনজি নিয়ে কচ্ছপতলী যাওয়া যায়। বান্দরবান থেকে প্রতি ঘণ্টায় রোয়াংছড়ির বাস ছাড়ে, ভাড়া ৬০ টাকা।

আর রোয়াংছড়ি থেকে কচ্ছপতলীর সিএনজি ভাড়া ১৫০ টাকার মতো। এছাড়া আপনি চাইলে বান্দরবান শহর থেকে সরাসরি জিপেও কচ্ছপতলী চলে যেতে পারেন। জিপ ভাড়া ১৮০০ টাকা। এক জিপে ১২/১৩ জন বসতে পারবেন।

ভেলা ছাড়া দেবতাখুমে যাওয়ার উপায় নেই। ভেলা নিয়ে যতোই এগিয়ে যাবেন। ততোই জায়গাটা সরু হবে! এমনো জায়গা ভেলা দিয়ে পাড় হবেন যেখানে সূর্যের আলো খুবই কমই ঢুকে। জুন থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত দেবতাখুমে যাওয়ার উপযুক্ত সময়। বৃষ্টির সময় খুম একদম পানি দিয়ে ভরা থাকে, তাই অনেকদূর পর্যন্ত ভেলা নিয়ে যেতে পারবেন।

যেখানে খাবেন

বাসস্ট্যান্ডের পাশেই অনেকগুলো রেস্টুরেন্ট আছে। ৫০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে সকালের নাস্তা হয়ে যাবে। কচ্ছপতলী পৌঁছে ট্রেকিং শুরু করার আগেই দুপুরের খাবারের অর্ডার দিয়ে নিন। নয়তো পরে খাবার পাবেন না। আপনি অর্ডার করলেই মূলত তারা রান্না করবে। মুরগী মাংস, ডাল আর আলু ভর্তা পাবেন। খাবার খরচ আসবে ১০০ থেকে ১৫০ টাকার মতো।

যেখানে থাকবেন

আপনি সকালে বান্দরবান থেকে দেবতাকুমের উদ্দেশ্যে রওনা দিলে সন্ধ্যার মধ্যেই আবার শহরে এসে পৌঁছাতে পারবেন। তাই আপনি চাইলে রাতের খাবার শেষে সেদিনই ঢাকা অথবা আপনার গন্তব্যে ফিরে আসতে পারেন। আর থেকে যেতে চাইলে বান্দরবান শহরে বিভিন্ন মানের বেশ কিছু হোটেল রয়েছে।

দেবতাকুম ভ্রমণ তথ্য ও সতর্কতা

  • কচ্ছপতলীতে গিয়ে আর্মি ক্যাম্পে রিপোর্ট করাতে জাতীয় পরিচয়পত্র বা অন্যকোনো ফটো আইডির ফটোকপি লাগবে। তারপরই দেবতাখুমে ঢুকতে পারবেন।
  • কচ্ছপতলীর পর থেকে ফোনে নেটওয়ার্ক পাবেন না
  • ট্রেকিংয়ের জন্য ট্রেকিং বুট ব্যবহার করুন। চাইলে প্লাস্টিক বা রাবারের স্যান্ডেল ব্যবহার করতে পারেন।
  • ভেলায় চড়ার জন্য লাইফ জ্যাকেট সঙ্গে করে নিয়ে যাবেন।
  • অনুমতি না নিয়ে আদিবাসীদের ছবি তুলবেন না।
  • পরিবেশ দূষণ থেকে বিরত থাকবেন।
Link copied!