রোববার ইতালির সিরি-আ-তে শেষ সারির দল জেনোয়ার বিপক্ষে খেলতে নামে পয়েন্ট টেবিলে পাঁচ নম্বরে থাকা দল এএস রোমা। প্রতিপক্ষ শক্তিশালী না হলেও পয়েন্ট টেবিলে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে ঘাম ঝরাতে হয়েছে ট্যামি আব্রাহাম আর মিখতারিয়ানদের।
ঘানার তরুণ ফরওয়ার্ড ফেলিক্স আফেনা-গ্যানের শেষ মুহূর্তের জোড়া গোলে জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়ে বিশ্বখ্যাত কোচ হোসে মোরিনহোর শিষ্যরা। নিজের ক্যারিয়ারের তৃতীয় আন্তর্জাতিক ম্যাচেই গোলের দেখা পেলেন ১৮ বছর বয়সী ফেলিক্স।
তবে ম্যাচের ফলয়াফল ছাপিয়ে গেছে পর্দার পেছনে গুরু-শিষ্যের গল্প। দলের সিনিয়ররা যখনে গোলের দেখা পাচ্ছিলেন না তখন এই তরুণ ফরওয়ার্ডকেই ম্যাচের ৭৪ মিনিটে বদলি খেলোয়ার হিসেবে মাঠে নামান অভিজ্ঞ রোমার পর্তুগীজ কোচ মোরিনহো।
মাঠে নামার মাত্র ১৬ মিনিটেই জয়সূচক গোল করে নিজের জাত চিনিয়েছেন ফেলিক্স আফেনা-গ্যান। অতিরিক্ত সময়ে করেন আরও একটি গোল। ম্যাচ শেষে মোরিনহো জানালেন তার শিষ্যের সফলতার গোপন রহস্য।
সংবাদ সম্মেলনে হোসে মরিনহো বলেন, মাঠে নামার আগে ফেলিক্সকে একজোড়া দামী নতুন ফুটবল বুট কিনের দেওয়ার কথা দিয়েছিলেন তিনি। তবে জুতো জোড়া পেতে হলে গোল করতেই হবে এমন শর্ত জুড়ে দেন কোচ।
কয়েক সপ্তাহ আগেই রোমার একাদশে ডাক পান তিনি। জানুয়ারিতে ক্লাবে যোগদানের পর থেকে রোমার যুব দলের হয়েই খেলছিলেন।
রোববার মাঠে নামার সাত মিনিটের মাথায় গোলপোস্টের বাম কোণে নিচু শটে জালে গড়ায় তার প্রথম গোল। এরপর ইনজুরি টাইমে, ডি বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শটে দুর্দান্ত গোলে রোমার জয় নিশ্চিত করেন এই ফরওয়ার্ড।
শিষ্যের পারফরম্যান্সে উচ্ছ্বসিত মরিনহো নিজেই জানালেন তার অভিজ্ঞতা। গোল ডটকমকে তিনি বলেন, “দ্বিতীয়ার্ধে জেনোয়ার খেলোয়াড়রা মাঝমাঠ থেকে নিচে নেমে খেলছিল, তাই সেখানে বল নিয়ে ঢোকার জায়গাও কম ছিল। সেকারণেই আমি ভেবেছি ফেলিক্স সম্ভবত এখানে তার শক্তি ও গতিকে কাজে লাগাতে পারবে।”
রোমা কোচ আরও বলেন, “ক্যাগলিয়ারি আর মিলানের সঙ্গে ম্যাচেও ওর ক্ষীপ্রতা বিপক্ষ দলের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করেছিল। আজকের ম্যাচেও সে দারুণ খেলেছে। যদিও পুরো দলই ভালো খেলেছে।”
ঘানায় স্কুল ফুটবল থেকে উঠে আসেন এই তরুণ ফরওয়ার্ড। জোড়া গোলের মাধ্যমে ঘানার যুব দলের হয়ে খেলা ফেলিক্স আফেনা-গ্যান জুতো আর ম্যাচ জয়ের সঙ্গে মূল একাদশেও জায়গা করে নিলেন পাকাপোক্তভাবে।
রোমার যুব দলের ট্রেনিং থেকেই তাকে পছন্দ করেন মরিনহো। তিনি জানান, “ফেলিক্স আরও চার বা পাঁচজন তরুণের সঙ্গে মৌসুমের শুরু থেকেই আমাদের মূল একাদশের সঙ্গে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল। প্রথম দেখায় গোলপোস্টের সামনে ওর ঠাণ্ডা মাথার খেলা আমাকে মুগ্ধ করে।”
রোববারের ম্যাচের আগে গুরু শিষ্যের আলাচারিতাও নিয়ে মরিনহো বললেন, “আমি তাকে কথা দিয়েছিলাম গোল করলে এক জোড়া জুতা কিনে দিব। কিন্তু সে ৮০০ ইউরোর একজোড়া দামী জুতো পছন্দ করে বসে। আর গোল করা পরই আমার কাছে এসে বলেছে, জুতার কথা ভুলে যাবেন না! আগামীকাল সকালেই কিনব।”