• ঢাকা
  • বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১, ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

চার বছর পর সিলেটে ফিরছে আন্তর্জাতিক ফুটবল


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ২৯, ২০২২, ০৩:৩৫ পিএম
চার বছর পর সিলেটে ফিরছে আন্তর্জাতিক ফুটবল
ছবি সংগৃহীত

সবশেষ ২০১৮ সালের অক্টোবরে সিলেটে আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেবার বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বের সব ম্যাচ হয়েছিল এই মাঠে। বাংলাদেশ দুই ম্যাচে অংশ নিয়ে একটি করে জয় ও পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছিল। সেই সিলেটে আন্তর্জাতিক ফুটবল ফিরছে প্রায় চার বছর পর।

মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে বিকেল সাড়ে ৫টায় সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে খেলতে নামবে স্বাগতিক বাংলাদেশ। দীর্ঘ ২১ বছর পর মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামছে জামাল ভুঁইয়ারা। এবারও জয় দিয়ে সিলেট রাঙাতে চান লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।

প্রস্তুতি শেষে গতকাল সোমবার (২৮ মার্চ) গণামাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন বাংলাদেশ কাপ্তান। এ সময় তিনি বলেছেন, "জয়ের লক্ষ্য নিয়ে আমরা মাঠে নামব। সে অনুযায়ী আমরা পরিকল্পনা করেছি। নিজেদের মাঠে আমাদের অবশ্যই জিততে হবে।"

সিলেটে ৯ বছর আগে সর্বপ্রথম নেপালের বিপক্ষে  খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। সে ম্যাচে দর্শকের চাপ নিতে পারেনি গ্যালারি। ক্রীড়া পাগল দর্শকরা সেদিন জেলা স্টেডিয়ামের প্রধান ফটক ভেঙে মাঠে প্রবেশ করেছিলেন। তবে বড় কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা ছাড়াই ম্যাচটি শেষ হয়েছিল। তাতেই সিলেট জানান দিয়েছিল, এখানে খেলা মানেই দর্শকদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস।

চলতি শতকের শুরুতে সপ্তাহের ব্যবধানে দুবার মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ-মঙ্গোলিয়া। দীর্ঘ ২১ বছর পর অচেনা এক মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামাটা চ্যালেঞ্জিং কি না জানতে চাইলে জামাল বলেন, "প্রতিটি ম্যাচই চ্যালেঞ্জিং। আমরা দীর্ঘদিন তাদের বিপক্ষে খেলিনি। তবে আমরা তাদের ভিডিওগুলো দেখেছি। তাদের খেলার ধরন ও খেলোয়াড়দের নিয়ে পর্যালোচনা করেছি। এসব হোমওয়ার্ক করেই আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। জয়ের জন্যই আমরা তাদের বিপক্ষে খেলতে নামব।"
 
অতীতের মতো এবারও সিলেটের মাঠে গ্যালারি কানায় কানায় পূর্ণ থাকবে বলে প্রত্যাশা করেছেন জামাল ভূঁইয়া। বলেছেন, "সিলেটে খেলা মানেই দর্শকের উপস্থিতি। গ্যালারি ফাঁকা থাকে না। এজন্য সিলেট স্টেডিয়াম আমি সবসময় পছন্দ করি। এবার তেমনটাই হবে বলে আশা করছি। বাংলাদেশের জয় দেখতে পাওয়াটাই তাদের প্রত্যাশা। আমরা শুধু সিলেট নয়, সারাদেশের সব দর্শক-সমর্থকদের প্রত্যাশা পূরণের জন্য নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দেব।"

মালদ্বীপের বিপক্ষে জয়ের লক্ষ্য নিয়ে মালেতে খেলতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে ২-০ গোলের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়। দেশে ফিরেই রিকভারির দিকে বাংলাদেশ গুরুত্ব দিয়েছে বলে জানিয়েছেন দলের কোচ জাভিয়ের কাবরেরা।

তিনি বলেন, "সিলেটে এসেই মালদ্বীপ ম্যাচের ভুলগুলো নিয়ে কাজ করেছি। ছেলেদের সঙ্গে খুবই ভালো সেশন গিয়েছে। ম্যাচের আগে আরেকটা সেশন পাবো। আমরা জয়ের বিকল্প কিছু ভাবছি না।"

আজকের ম্যাচের কৌশল কী হতে পারে জানতে চাইলে কোচ বলেন, "আমার মনে হয়েছে মঙ্গোলিয়া প্রাণ-প্রাচুর্যে ভরপুর দল। মালদ্বীপের মতো কৌশলী নয়, সম্ভবত ডিরেক্ট ফুটবল খেলে। তবে নিজেদের পরিকল্পনা নিয়েই আমাদের মনোযোগী হতে হবে। কিভাবে আমরা কৌশলগুলো রপ্ত করব, মাঠে প্রয়োগ করব, প্রতিপক্ষের চেয়ে আমাদেরকে এদিকে বেশি মনোযোগ দিতে হবে। আগের ম্যাচের মতো ৪-৪-২ এর বদলে এবার নতুন কিছু দেখতে পাবেন। মালদ্বীপে আমরা ওটা করেছি যাতে মালদ্বীপের বিল্ড-আপ ফুটবল আটকে দিতে পারি।"

রক্ষণভাগের শিষ্যদের প্রশংসা করে কোচ বলেন, "রক্ষণ আমাদের জমজমাট। আক্রমণভাগে রাকিব ও সুমন ভালো করছে। আবারও বলছি, আমাদের নিজেদের নিয়েই ভাবছি। মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে যেন মালদ্বীপ ম্যাচের ইতিবাচক দিকগুলো থাকে, পাশাপাশি চেষ্টা করছি ওই ম্যাচের চেয়ে আরও শক্তিশালী হয়ে যেন আমরা মাঠে নামতে পারি।"
 
এদিকে, ২১ বছর আগের দুঃখ ঘোচাতে মরিয়া মঙ্গোলিয়াও। নিজেদের প্রস্তুতি যথেষ্ট নয় মানলেও জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী দলটি।

দলটির কোচ ইচিরো অচোকা বলেছেন, "আমাদের প্রস্তুতি খুব একটা ভালো নয়, কিন্তু তারপরও আন্তর্জাতিক ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জুনে আমাদের সামনে এশিয়ান কাপের বাছাইপর্ব আছে। এই ম্যাচটা আমাদের জন্য প্রস্তুতির সুযোগ। অবশ্যই এই ম্যাচটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।"

মঙ্গোলিয়া অধিনায়ক টিসেন্ড আইয়ুশ বলেন, "বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে পারাটা সৌভাগ্যের। বাংলাদেশ দলের খেলা আমার স্মৃতিতে খুব ভালোভাবেই আছে। ২১ বছর আগের সেই ড্র মঙ্গোলিয়ার ফুটবল ইতিহাসে ছিল আমাদের প্রথম পয়েন্ট পাওয়া। মঙ্গোলিয়া থেকে এখানকার তাপমাত্রা অনেক ভিন্ন। লাওসে আমরা সাতদিন অনুশীলন করেছি। তাই প্রস্তুতিটা খুব একটা খারাপও না। লড়াই করতে প্রস্তুত আমরা।"

Link copied!