প্রথম দিনে ব্যাট হাতে বাংলাদেশি বোলারদের বিপক্ষে দাপট দেখিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা। সেখান থেকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশি বোলার খালেদ আহমেদ-মেহেদি মিরাজরা। বল হাতে খালেদের ৪ উইকেটের সঙ্গে স্পিনার মিরাজের ৩ উইকেটের সুবাদে প্রোটিয়ারা দ্বিতীয় সেশনে অলআউট হয়ে গেছে ৩৬৭ রানে।
ডারবানের কিংসমিডে দুই টেস্ট ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল টাইগার টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক। প্রথম দিনে বাংলাদেশি বোলারদের হতাশ করে ব্যাট হাতে ঝলক দেখান প্রোটিয়া দুই ওপেনার ডিন এলগার ও সারেল এরউই। এই দুই ব্যাটার দিনের দ্বিতীয় সেশনে তুলে নেন শতরানের জুটি। এরপর দলীয় ১১৩ রানের মাথায় বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন টাইগার পেসার খালেদ আহমেদ।
বিপজ্জনক হয়ে ওঠা প্রোটিয়া অধিনায়ক ডিন এলগার ব্যক্তিগত ৬৭ রানে উইকেটের পেছনে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরান সিলেটের এই বোলার। তার দেখানো পথে মিরাজও তুলে নেন আরেক ওপেনার সারেল এরউইয়ের উইকেট। তার স্পিন ঘুর্ণির বল সোজা উইকেটে আঘাত হানে। ফলে ব্যক্তিগত ৪১ রানে বিদায় নেন এই ওপেনার।
বাংলাদেশকে তৃতীয় শিকার এনে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার সরাসরি থ্রোতে কিগান পিটারসেনের রানআউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন। পয়েন্টে খেলে রান নিতে চেয়েছিলেন পিটারসেন এবং টেম্বা বাভুমা। কিন্তু সেখানে থাকা ফিল্ডার মিরাজ বিদ্যুৎ গতিতে বল থামিয়ে সেটা থ্রো করেন উইকেটকিপার প্রান্তে। বল সোজা গিয়ে আঘাত হানে স্ট্যাম্পে। যার ফলে ব্যক্তিগত ১৯ রানের ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে।
এরপর অভিষিক্ত রায়ান রিকেলটন ২১ রান করে এবাদতের বলে ফেরেন। তার বিদায়ের পর ৫৩ রানের জুটি গড়ে প্রথম দিনে আর বিপদ হতে দেননি টেম্বা বাভুমা এবং কাইল ভেরাইনি জুটি। ফলে প্রথম দিন শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৭৬.৫ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৩৩ রান।
প্রথম দিনে প্রোটিয়াদের দাপটের পর দ্বিতীয় দিনের শুরুতে দুই বলে টানা উইকেট তুলে বাংলাদেশকে চালকের আসনে বসান খালেদ আহমেদ। বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামের চোটের কারণে দলে জায়গা পেয়েই বাজিমাৎ করেছেন তিনি। এদিন নিজের নামের পাশে আর ১ রান যোগ করতেই ভেরাইনিকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলে ফেরান তিনি। এরপর উয়ান মুল্ডারকে পরের বলেই ফেরত পাঠান খালেদ। দারুণ ক্যাচ তালুবন্দী করেন মাহমুদুল হাসান জয়।
এরপর কেশভ মহারাজকে সঙ্গে নিয়ে টেম্বা বাভুমা ব্যক্তিগত সেঞ্চুরির দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে পরপর দুই বলে দুই জনকেই সাজঘরে ফিরিয়েছে মুমিনুল হকের দল। ৯৩ রান করা বাভুমাকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান স্পিনার মিরাজ। আর পেসার এবাদত হোসেন শিকার মহারাজ। সপ্তম উইকেট জুটিতে বাভুমা ও মহারাজ মিলে ৫৩ রান যোগ করেন। যেখানে মহারাজের অবদান ১৯ রান।
এদিন প্রথম সেশন শেষে ৮ উইকেটে স্বাগতিকদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩১৪ রান। লিজাড উইলিয়ামস ৬ এবং সিমন হারমার ৮ রান নিয়ে দ্বিতীয় সেশনের খেলা শুরু করে চার ওভার যেতে না যেতেই উইলিয়ামসকে জয়ের ক্যাচে পরিণত করেন পেসার খালেদ। এরপর শেষ উইকেট জুটিতে গুরুত্বপূর্ণ ৩৫ রান যোগ করেন হারমার-ওলিভার জুটি। ইনিংসের শেষ পেরেকটা ঠুকে দেন স্পিনার মিরাজ।
ফলে ১২১ ওভারে সবকয়টি উইকেট হারিয়ে ৩৬৭ রানে থামে স্বাগতিকদের ইনিংস। বোলিংয়ে বাংলাদেশের পক্ষে ৪ উইকেটের দেখা পান পেসার খালেদ আহমেদ। এছাড়া স্পিনার মেহেদি মিরাজ ৩ ও এবাদত হোসেন ২টি উইকেট শিকার করেন।