ছয় বছর পর বিশ্বমঞ্চে প্রত্যাবর্তন স্মরণীয় করে রাখলো জিম্বাবুয়ে। সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত করতে প্রাথমিক পর্বে শেষ ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না জিম্বাবুয়ের সামনে।
বাঁচা মরার লড়াইয়ে প্রথমে দুর্দান্ত বোলিং করে স্কটল্যান্ডকে ১৩২ রানে আটকে রেখেছিল জিম্বাবুয়ে। এরপর অধিনায়ক ক্রেইগ অরভিন ও সিকান্দার রাজার অনবদ্য ব্যাটিংয়ে স্কটিশকদের পাঁচ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবার সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত করেছে তারা।
এই জয়ে গ্রুপ ‘বি’ থেকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সুপার টুয়েলভে গ্রুপ দুইয়ে জায়গা পেয়েছে জিম্বাবুয়ে। সুপার টুয়েলভে তাদের প্রতিপক্ষ ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা ও নেদারল্যান্ডস।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) হোবার্টে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় স্কটল্যান্ড। ইনিংসের প্রথম ওভারে মাইকেল জোনসের উইকেট তুলে নেন জিম্বাবুইয়ান বোলার টেন্ডায় চাতারা।
তিন নম্বরে নেমে দ্রুত বিদায় নেন স্কটিশ উইকেটরক্ষক ব্যাটার ম্যাথিউ ক্রস। দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে স্কটল্যান্ড।
এরপর চার নম্বরে নামা অধিনায়ক রিচি বেনিংটনকে নিয়ে শুরুর চাপ সামাল দেন আরেক ওপেনার জর্জ মুনশি। অন্য প্রান্তে রিচি অস্ত্বস্তি বোধ করলেও আরেক প্রান্তে সাবলিলভাবেই রানের চাকা এগিয়ে নিয়েছেন মুনশি।
দলীয় ৬৪ রানে ব্যক্তিগত ১৩ রানে রিচি বিদায় নিলে ভাঙে তাদের ৪০ রানের জুটি। এরপর পাঁচ নম্বরে নামা কালাম ম্যাকলিওডকে নিয়ে আবারও জুটি গড়ার চেষ্টা করেন মুনশি।
৩৮ রানের ব্যবধানে এবার মুনশি নিজেই ফিরে যান। ব্যক্তিগত সাত চারে ৫১ বলে ৫৪ রানে তাকে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান জিম্বাবুইয়ান পেসার এনগ্রাভা।
এরপর দলীয় ১১৯ রানে জিম্বাবুইয়ান পেসার ব্লেসিং মুজারাবনি বলে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন মাইকেল লিস্ক।
শেষদিকে ম্যাকলেডের লড়াকু ২৫ বলে ২৫ রানের ইনিংসে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ১৩২ রানে থেমেছে স্কটিশদের ব্যাটিং ইনিংস। চার ওভারে ১৪ রানে দুই উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়ের সেরা বোলার টেন্ডাই চাতারা।
স্বল্প রানের লক্ষ তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। ওভারের দ্বিতীয় বলে দুর্দান্ত এক পুলে বাউন্ডারি মারার পরের বলেই লেগ বিফোর উইকেটে ফাঁদে পড়ে ফিরে যান ওপেনার রেজিস চাকাভা।
এরপর দ্বিতীয় ওভারে ওয়েসলি মাধেভারেও ফিরে গেলে শুরুতেই চাপে পড়ে জিম্বাবুয়ে। তৃতীয় উইকেট জুটিতে সেন উইলিয়ামসকে নিয়ে চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন অধিনায়ক ক্রেইগ অরভিন। যদিও তাদের জুটিতে রান আসছিল খুবই শ্লথ গতিতে।
দলীয় ৪২ রানে সেন বিদায় নিলে ভাঙে তাদের ৩৫ রানের জুটি। তবে অন্যপ্রান্তে ব্যাট দারুণ সাবলিল ছিলেন অধিনায়ক অরভিন।
এরপর দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সিকান্দার রাজাকে নিয়ে জয়ের পথে এগিয়ে যান অরভিন। ব্যাট হাতে এদিন শুরু থেকেই স্কটিশ বোলারদের উপর আধিপাত্য বিস্তার করেন তিনি।
ব্যাট হাতে সাম্প্রতিক সময়ের মতো আজকেও প্রতিপক্ষের বোলারদের উপর তান্ডব চালিয়েছেন সিকান্দার রাজা। তার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে জয়ের পথ সহজ হয়েছে জিম্বাবুয়ের।
ইনিংসের পনেরোতম ওভারের শেষ বলে আউট হওয়ার আগে রাজার ব্যাট থেকে আসে ২৩ বলে ৪০ রানের রাজকীয় ইনিংস। যেখানে ছিল তিন চার ও দুই ছক্কা।
রাজার বিদায়ে জয় পেতে খুব একটা সমস্যা হয়নি জিম্বাবুয়ের। শেষ পাঁচ ওভারে দরকার ছিল ২৭ রান। ১৬তম ওভারে ১০ রান তুলে সেটাকে আরও সহজ করে তোলেন অরভিন ও ছয় নম্বরে ব্যাটিং করতে নামা মিল্টন শুম্বা।
তবে জয় থেকে ১৪ রানের দুরত্বে অরভিনকে ফিরিয়ে রোমাঞ্চের ইঙ্গিত দেয় স্কটল্যান্ড। ফেরার আগে জিম্বাবুয়ে অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ছয় চারে ৫৪ বলে ৫৮ রানের ইনিংস।
বাকি থাকা সহজ পথ সহজেই পাড়ি দিয়ে জিম্বাবুয়েকে জয়ের বন্দরে পৌছে দিয়েছেন অলরাউন্ডার রায়ান বার্ল ও শুম্বা।