বছর, মাস, সপ্তাহ ও দিন পেরিয়ে অপেক্ষা কেবল কয়েক ঘণ্টার। তার পরই শুরু হয়ে যাবে ওয়ানডে বিশ্বকাপের মাঠের লড়াই। বিশ্বকাপের এবারের আসর বসছে ভারতে। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) আহমেদাবাদের আইকনিক নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী ম্যাচে মাঠে নামবে গত আসরের দুই ফাইনালিস্ট ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড। মাঠের লড়াইয়ে নামার আগে বিশ্বকাপ খেলুড়ে দলগুলোর আইসিসির কিছু নিয়ম জানা থাকা জরুরি।
বিশ্বকাপের ১৩তম আসর বসছে ১০ দলকে নিয়ে। দলগুলো হলো ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। এর মধ্যে ৯টি আইসিসির স্থায়ী সদস্য। আর বাকি দলটি আইসিসির সহযোগী দেশ নেদারল্যান্ডস।
ফরমেট
খেলা হবে রাউন্ড রবিন পদ্ধতিতে। অর্থাৎ প্রত্যেক দল একে অপরের সঙ্গে একটি করে ম্যাচ খেলবে। ফলে প্রতিটি দল ৯টি করে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে। তাতে লিগ পর্বে ম্যাচ হবে ৪৫টি। সেখান থেকে সর্বোচ্চ পয়েন্ট অর্জনকারী ৪ দল সেমিফাইনালে জায়গা করে নিবে।
সেমিফাইনালে ওঠার সমীকরণ
মোট ৭ ম্যাচ জিতলেই সেমিফাইনালে খেলা নিশ্চিত। ৬টিতে জয় পেলেও সেমি খেলার সম্ভাবনা থাকবে। কারণ, বৃষ্টিতে কিছু ম্যাচ বাতিল হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এক্ষেত্রে নেট রান রেটের ভিত্তিতে সেমিফাইনালিস্ট নির্বাচিত হবে। ফলে কেবল জিতলেই হবে না, রান তাড়ার দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে দলগুলোকে।
নিয়ম
একদিনের বিশ্বকাপের ১৩তম আসরে একাধিক নতুন নিয়ম চালু করছে আইসিসি। ইতোমধ্যে একাধিক গাইডলাইন দিয়েছে তারা। সেগুলো হলো-
১. বাউন্ডারি ৭০ মিটারের নিচে রাখা যাবে না। পিচে অধিক ঘাস রাখতে হবে। কারণ শিশির নিয়ন্ত্রণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে কিউরেটরদের তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
২. ২০১৯ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের ফাইনাল সুপার ওভারেও ম্যাচ টাই হয়। পরে বেশি চার-ছক্কা মারা দলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এতে ক্রিকেট বিশ্বে বিতর্কের জন্ম দেন। নানা সমালোচনার মুখে সেই নিয়মে এবার পরিবর্তন এনেছে আইসিসি।
এবারের ক্রিকেট মহাযজ্ঞে কোনো ম্যাচ টাই হলে মূল ইনিংসে বেশি চার-ছক্কা হাঁকানো দলকে জয়ী করা হবে না। এক্ষেত্রে দুই দলকেই একটানা সুপার ওভার খেলে যেতে হবে। শেষমেষ এতে যারা জিতবে, তারাই শেষ হাসি হাসবে।
৩. এ বছর ‘মানকাড’ পদ্ধতিতে ব্যাটারকে আউট করা যাবে। অতীতে আইসিসি মেগা ইভেন্টে এ নিয়ম দেখা যায়নি। তবে এবার প্রথম যার দর্শন মিলতে পারে। তাই বিশ্বকাপে ননস্ট্রাইক ব্যাটারদের বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে।
৪. প্রত্যেক ম্যাচ হবে দুই সেশনে। এক সেশনের জন্য ৩ ঘণ্টা ৫০ মিনিট বরাদ্দ থাকবে। মাঝখানে ৪৫ মিনিট বিরতি থাকবে। টসের ঠিক আগমুহূর্তে সেরা একাদশ প্রকাশ করতে পারবেন অধিনায়করা।
৫. একজন বোলার সর্বোচ্চ ১০ ওভার বোলিং করতে পারবেন। তবে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ওভার কমতে পারে। সেক্ষেত্রে ১ ইনিংসে নিজের কোটার মোট ওভারের এক-পঞ্চমাংশ বা ২০ শতাংশের বেশি বোলিং করতে পারবেন না তিনি।
৬. প্রথম পাওয়ার প্লেতে (১০ ওভার) মাত্র ২ ফিল্ডার ৩০ গজ বৃত্তের বাইরে থাকতে পারবেন। দ্বিতীয় পাওয়ার প্লেতে (১১ থেকে ৪০ ওভার) ৪ ফিল্ডার সেই সুযোগ পাবেন। আর তৃতীয় পাওয়ার প্লেতে (৪১ থেকে ৫০ ওভার) ৫ ফিল্ডার ওই অনুমতি পাবেন।
৭. লিগ পর্বে কোনো ম্যাচ টাই হলে সেটি সুপার ওভারে গড়াবে না। তবে নকআউট পর্বে সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সেমিফাইনালের কোনো ম্যাচ অথবা ফাইনাল টাই হলে সুপার ওভারে নিষ্পত্তি হবে।
৮. বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি (ডিএলএস) কার্যকর হবে। উভয় দল কমপক্ষে ২০ ওভার করে খেললে এই পদ্ধতিতে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে। এর কম হলে দুই দলের মধ্যে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে ম্যাচটি বাতিল বা পরিত্যক্ত বলে গণ্য হবে।
৯. সেমির জন্য রাখা হয়েছে রিজার্ভ ডে। ফাইনালেও সেই ব্যবস্থা থাকছে। নির্ধারিত তারিখে খেলা না হলের পরের দিন হবে। এক্ষেত্রে প্রথম দিন যেখান থেকে শেষ হবে, পরের দিন সেখান থেকে শুরু হবে।