দেখতে দেখতে প্রায় শেষ হয়ে এসেছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অষ্টম আসর। রাত পোহালেই ফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড ও পাকিস্তান। যে কোনো এক দলের ট্রফি উঁচিয়ে ধরার মধ্যে দিয়েই পর্দা নামবে এবারের আসরের।
এবারের বিশ্বকাপে বেশ কয়েকটি আলোচিত অঘটন ঘটেছে। অনেকগুলো টানটান রোমাঞ্চকর ম্যাচ দেখেছেন সমর্থকরা। অনেকে তো এই আসরকেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে সেরা আসর বলেও দাবি করেছেন।
তবে শুধু দলীয় নয়, বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার ব্যক্তিগত পারফর্মেন্স দিয়েও আলো ছড়িয়েছে পুরো বিশ্বকাপে। পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারতীয় ব্যাটার বিরাট কোহলির অবিশ্বাস্য ৮৩ রার বা ভারতের বিপক্ষে লিটন কুমার দাসের টর্নেডো ইনিংস তো এখনও সবার চোখে লেগে আছে
তবে আসর যেহেতু শেষের পথে। ফলে আলোচনা উঠছে কে হবেন এবারের টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়। পুরো আসর জুড়ে ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করা জিম্বাবুয়ের সিকান্দার রাজা, ভারতের সূর্যকুমার যাদব নাকি ইংলিশ ব্যাটার জস বাটলার বা পাকিস্তানি অলরাউন্ডার শাদাব খান।
সেরা ক্রিকেটার বাছতে ৯ জন ক্রিকেটারকে বেঁছে নিয়েছে আইসিসি। যাদের মধ্যে থেকে যে কেউই হতে পারেন এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়। তবে এবার সেরা খেলোয়াড় বাছাইয়ে ভোট দিয়ে অংশ নিতে পারবেন সমর্থকরাও।
এবার তাহলে দেখে নেওয়া যাক, কারা আছেন টুর্নামেন্ট সেরা হওয়ার লড়াইয়েঃ
বিরাট কোহলি (ভারত)
চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাঁচ ম্যাচে বিরাট কোহলির সংগ্রহ ২৯৬ রান, যেটা এই আসরের সর্বোচ্চ। পাকিস্তানের বিপক্ষে তার দুরন্ত ৮৩ রানের ইনিংসেই অবিশ্বাস্য ম্যাচ জিতেছিল ভারত।
সূর্যকুমার যাদব (ভারত)
ভারত সুপার টুয়েলভ থেকেই বিদায় নিলেও আসর জুড়ে ধারাবাহিক পারফর্ম করেছেন সূর্য। পাঁচ ম্যাচে ১৮৯ স্ট্রাইকরেটে এই ডানহাতি ব্যাটারের সংগ্রহ ২৩৯ রান। এই টুর্নামেন্টের মাঝখানেই টি-টোয়েন্টি ব্যাটারদের র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে উঠেছেন তিনি।
শাদাব খান (পাকিস্তান)
খাঁদের কিনারা থেকে উঠে এসে ফাইনাল খেলছে পাকিস্তান। টানা দুই ম্যাচ হারের পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ভুগছিল তারা। তখন ব্যাট হাতে ঝড়ো ফিফটিতে প্রথমে বড় সংগ্রহ গড়ার পর বল হাতে পাকিস্তানকে জিতিয়েছিলেন শাদাব খান। টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত ১০ উইকেট শিকার করেছেন তিনি।
শাহিন আফ্রিদি (পাকিস্তান)
ইনজুরি থেকে সেরে ওঠার পর বিশ্বকাপেই প্রথম কোনো প্রতিযোগীতামূলক ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন শাহিন। প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে অনুজ্জ্বল থাকলেও এরপর প্রতি ম্যাচেই ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করা শাহিনের চলতি বিশ্বকাপে ইকোনোমি মাত্র ৬.১৭। আসরে তার শিকার ১০ উইকেট।
স্যাম কারেন (ইংল্যান্ড)
চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বোলিং আক্রমণের অন্যতম ভরসা স্যাম। এই আসরেই প্রথম ইংলিশ বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন।
জস বাটলার (ইংল্যান্ড)
যাকে বলে সামনে থেকে নেত্বতৃ দেওয়া সেটাই যেন এবার করে দেখাচ্ছেন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার। পুরো আসরে এখন পর্যন্ত তার ব্যাট থেকে ১৪৩ স্ট্রাইক রেটে এসেছে ১৯৯ রান।
অ্যালেক্স হেলস (ইংল্যান্ড)
সতীর্থ জনি বেয়ারস্টোর ইনজুরিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছেন হেলস। সুযোগ কিভাবে কাজে লাগাতে হয় সেটাই এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দেখাচ্ছেন তিনি। সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে তার ৮৬ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস তো এখনও সবার চোখে লেগে আছে।
সিকান্দার রাজা (জিম্বাবুয়ে)
সাম্প্রতিক সময়ে বল হোক বা ব্যাট যেটাই হাতে পান তাতেই যেন দুর্দান্ত হয়ে ওঠেন জিম্বাবুয়ের রাজা। অন্যথা হয়নি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও! পাঁচ ম্যাচে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২১৯ রান। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ব্রেকথ্রু তো আছেই।
ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা (শ্রীলঙ্কা)
১৫ উইকেট নিয়ে এখন পর্যন্ত এই আসরের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি শ্রীলঙ্কান স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ছিলেন তিনি।