• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জনির আউটের পর লর্ডস ডাইনিংরুমে কী হয়েছিল, জানালেন লায়ন


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০২৩, ০৭:০৬ পিএম
জনির আউটের পর লর্ডস ডাইনিংরুমে কী হয়েছিল, জানালেন লায়ন

জনি বেয়ারস্টোর সেই আউট নিয়ে বিতর্ক যেন থামছেই না। অ্যাশেজ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে চতুর্থ ইনিংসে ক্যামেরন গ্রিনের বলে জনি বেয়ারস্টোকে অস্ট্রেলিয়ান উইকেটরক্ষক অ্যালেক্স ক্যারি স্টাম্পিং করে বিতর্কের জন্ম দেন। সেই আউটের আলোচনা চলতে থাকে সিরিজের শেষ দিন পর্যন্ত।

আউটের পর দুই দলের খেলোয়াড়দের কারণে লর্ডসের ড্রাইনিং রুম উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সেদিন হোম অফ ক্রিকেটের ড্রাইনিং রুমে আসলে কী ঘটেছিল তাই জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান লেগস্পিনার নাথাম লায়ন।

জনি বেয়ারস্টো যখন আউট হন দুই দল তার ১৫ মিনিট পরেই মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায়। সাধারণত দুই দলের খেলোয়াড়দের গন্তব্য থাকবে ড্রেসিং রুমের দিকেই। তাদের ছিলও তাই। কিন্তু ড্রেসিং রুম থেকে ফিরে মধ্যাহ্নভোজের জন্য দুই দলের খেলোয়াড়রা লং রুমের ড্রাইনিং টেবিলে একসঙ্গে বসে। এক টেবিলে বসলেও তারা দুই দলে ভাগ হয়ে যায়। দুই দলের সব খেলোয়াড়রা মুখোমুখি হয়ে বসে দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য। এই সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বলে জানান নাথাম লায়ন।

লায়ন বলেন, “এই সময় যেখানে কিছু অস্ট্রেলিয়ান ছেলে এবং কিছু ইংল্যান্ডের ছেলে ছিল। আমি একপাশে ক্রাসে হাতে নিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। সেখানে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ব্র্যাড হ্যাডিন ছিলেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত দেখে আমি দুই দলের মাঝে গিয়ে সবাইকে শান্ত করার চেষ্টা করি।”

জনি বেয়ারস্টো বিতর্কিত আউট হওয়ার পর মাঠের মধ্যে চড়াও হলেও এখানে সে অন্যরকম ছিলেন বলে জানান অস্ট্রেলিয়ান লেগ স্পিনার লায়ন। তিনি বলেন “জনি বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্নজনের কাছে অনেক কথা বলেছেন। তবে এগুলো হবেই। এতে আমার কোনো আপত্তি নেই।”

এমন আউট নিয়ে ইংল্যান্ডের কিছু সমর্থক সমালোচনার ঝড় তুলে দিচ্ছেন। ক্রিকেটীয় চেতনায় আউটের বিপক্ষে কথা বলছেন। তবে নাথাম বিষয়টা স্বাভাবিক ভাবেই দেখেছেন লায়ন। তিনি বলেন, “আমি ড্রেসিং রুমে ছিলাম, এমন স্টাম্পিং দেখে সেখানে লাফিয়ে উঠি। আমার কাছে মনে হয় এটা প্রতিদিনিই হওয়া উচিত।”

বেয়ারস্টো আউটের পর যে পরিস্থিতি এতটা বদলে যাবে সেটা কল্পনাতেও ভেবে ছিলেন না অজি ক্রিকেটার। লং রুমে অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়দের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। উসমান খাজার সঙ্গে এমসিসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঝামেলা বাঁধে, যা শেষ পর্যন্ত নিরাপত্তাকর্মীরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে তদন্ত করে তিন এমসিসির কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে ক্লাব। এরপর আলাদাভাবে একজন ইংলিশ সমর্থকের কথা বলেছেন এই লেগ স্পিনার। তিনি বলেন, “কাঁদতে কাঁদতে আমার কাছে একজন বৃদ্ধা এসেছিল। ইংলিশ এই ভদ্র মহিলা, মেম্বার এরিয়া থেকে এসেছিলেন। এসে বলেন আমার ঘরে ফিরে যেতে হবে। তবে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার তোমরা যারা আছো, তাদের কাছে ক্ষমা চাই। লর্ডসের ভেতরে সবাই তোমাদের যে প্রতিক্রিয়া দেখাল।”

জবাবে লায়ন বলেন, “আমি তাকে এ নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে না করেছিলাম। আমরা ঠিকঠাকই ছিলাম, স্লেজিংয়ের শিকার হওয়া নিয়ে আমরা ভাবি না। তবে অ্যাশেজ ক্রিকেট যে কতজনের ওপর কত উপায়ে প্রভাব ফেলতে পারে, কত মানুষের কর্মকাণ্ডেও প্রভাব ফেলতে পারে। সেটি আরেকবার বুঝেছি। একজন মহিলাকে সত্যিকার অর্থেই কাঁদতে দেখাটা একই সঙ্গে সুন্দর ও বিব্রতকর একটা মুহূর্ত ছিল।”

অ্যাশেজ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া ফিল্ডিংয়ের সময় বেন ডাকেটের পুল শট গিয়ে লায়নের পায়ে আঘাত করে। তিনি তখন মনে করেন, সেই সময় ছোট একটা বন্দুকের গুলি এসে তার পায়ে আঘাত হানে। এতে তিনি পায়ের কাফ মাসলে চোট পান এবং দল থেকে ছিটকে জান। এই খেলোয়াড় কোনো ইনজুরিতে না পড়ে টানা ১০০তম টেস্ট ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন। লায়ন আশা করছেন তিনি ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে পাকিস্তানের সঙ্গে টেস্ট ম্যাচের আগেই তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। তাকে আবারও মাঠে দেখা যাবে।

Link copied!