বাংলাদেশ বছর দুয়েক আগেও মাঠে নামলে বোলিং আক্রমণ ছিল স্পিন কেন্দ্রিক। কিন্তু এখন সেই প্রথা ভেঙে টাইগারদের বোলিং আক্রমণ সাজানো হয় পেসারদের নিয়ে। ভারতের মাটিতে বাংলাদেশ বিশ্বকাপ খেলতে যায় বিশ্বের দ্বিতীয় আক্রমণাত্মক পেস ইউনিট নিয়ে। টাইগারদের বোলিং ইউনিটে পেসারদের আধিপত্য গড়ে ওঠে। এটা শুরু হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ অ্যালান ডোনাল্ডের হাত ধরে। বাংলাদেশের পেস ইউনিটকে রূপকথার মতো বদলে দেওয়ার কারিগর এই সাবেক প্রোটিয়া ক্রিকেটার। তিনি যখন বাংলাদেশে বোলিং কোচ হিসেবে আসেন তখন তাকে শুনতে হয় স্পিনারদের দেশে স্বাগতম।
২০২২ সালের মার্চে বাংলাদেশ জাতীয় দলের পেস বোলিং কোচ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন অ্যালান ডোনাল্ড। এরপর স্পিন নির্ভর দেশকে বদলে দিয়ে পেস নির্ভরশীল করে গড়ে তুললেন সাদা বিদুৎ খ্যাত ডোনাল্ড। সাবেক এই প্রোটিয়া ক্রিকেটার বাংলাদেশে এসে প্রথমে যে কথাটা শুনেছিলেন, সেটা এখনো মনে রেখেছেন।
আইসিসিকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ বলেন, “আমি যখন ঢাকার মিরপুরে প্রথমবার আসি, তখন সবাই বলেছে, `স্পিন বোলারের দেশে স্বাগতম।’ মাঝে মধ্যে আমরা চার স্পিনারও খেলিয়েছি। সেখানে আমরা এভাবেই ম্যাচ জিততাম। কিন্তু আমি সবসময় বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ যদি দেশের বাইরে জিততে চায়; দেশের বাইরে সবসময়ই ভালো উইকেটে খেলা হয়। ওইসব উইকেট অনেক সময় স্পিন বান্ধব হয় না, যেখানে আমাদের খেলা হয়। এরপর সব পরিবর্তন হতে থাকে। পেসাররা ম্যাচ শুরু করে, পরে দুয়েকজন স্পিনার আসে।”
বাংলাদেশ আগে ৪ স্পিনার নিয়ে মাঠে নামতো। এখন তারাই ম্যাচের আগে তিন পেসার নিয়ে পরিকল্পনা সাজায়। এর পেছনে বড় অবদান ডোনাল্ডের। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় দলের প্রতিটা পেসারকে ধরে-ধরে শেখান আলাদা করে সবার সঙ্গে কাজ করেন। তার হাত ধরেই তো তাসকিন আহমেদ হারনো ছন্দ ফিরে পেয়েছেন। মুস্তাফিজুর রহমানের কাটারে ধার বেড়েছে। শরিফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ ও এবাদত হোসেনদের তৈরি করেছেন আগ্রাসী বোলিং হিসেবে। ডোনাল্ড বলেন, “বাংলাদেশের পেসারদের ভালো উন্নতি হয়েছে। এক এক জনের সঙ্গে আমার আলাদা আলোচনায় অথবা দলগত আলোচনায় যা বুঝেছি তাদের (পেসারদের) সেভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। তাই আমাকেই মানসিকতায় বদল আনতে হয়েছে। আমি বলেছি, ফ্ল্যাট উইকেটেই সবসময় খেলতে হবে এবং সব জায়গায় খেলতে হবে। বিশ্বের সব দেশের বোলারদের মানসিকতাই একইরকম। আমাদের কোনো এক্সপ্রেস পেস বোলার নেই। তবে আমাদের অনেক দক্ষ বোলার আছে। আমি তাদের একইভাবে ভাবতে শিখিয়েছি এবং আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে বোলিং করতে বলেছি।”