বিশ্বকাপে চরম দুঃসময় পার করছে বাংলাদেশ। বিশ্বমঞ্চে টাইগাররা টানা পাঁচ ম্যাচে পরাজয় বরণ করেছে। এই পাঁচ ম্যাচে সাকিব আল হাসানের দল প্রতিপক্ষের সঙ্গে বিন্দু মাত্র প্রতিন্দ্বন্দ্বীতা গড়ে তুলতে পারেনি। সবশেষ আইসিসির সহযোগী দেশ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে লজ্জার হারের স্বাদ নিতে হয়েছে। সাকিবদের এমন খারাপ সময়ে পাশে থাকছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এমনটাই জানান বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে গণমাধ্যমে সব থেকে বেশি সরব থাকেন বিসিবি বস পাপন। কিন্তু বিশ্বকাপ শুরু আগ থেকে তাকে এবার গণমাধ্যমে কথা বলতে দেখা যায়নি। তবে অবশেষে পাপন নিরবতা ভাঙলেন। রোববার (২৯ অক্টোবর) কলকাতায় বাংলাদেশের টিম হোটেলে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন বিসিবি বস। এসময় পাপন বলেন, “দল একটানা হারছে। এমন সময়ে কেউ ক্রিকেটারদের পাশে থাকবে না। তবে কেউ না থাকলেও আমরা তাদের পাশে আছি। সামনে তিনটা ম্যাচ ভালো করা ছাড়া উপায় নেই। এটা করতে গেলে দুটো জিনিস লাগবে। একটা হচ্ছে ওদের মধ্যে সাহস ও বিশ্বাসটা জাগিয়ে দিতে হবে, যে ওরা পারবে। সেটা নিজেদের মধ্যে না আসে তাহলে তারা দ্বিধাগ্রস্ত থাকবে। কাজেই সেটা করার চেষ্টা করেছি। তারা সকলে মিলে বলছে, তারা একতাবদ্ধ আছে। তাদের মধ্যে কোনো সমস্যা নেই। ওরা জিততে পারছে না, এটা চিন্তা করে ওদের আরও বেশি খারাপ লাগছে। কারণ ওরাই তো আমাদের সুপারস্টার ছিল সবসময়।”
এবারের বিশ্বকাপে ধারাবাহিক ভাবে ব্যর্থ সাকিব আল হাসানের দল। নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে শনিবার (২৮ অক্টোবর) ইডেনে ডাচদের কাছে হারের পর সমর্থকরা ভুয়া, ভুয়া স্লোগানে দুয়ো দিতে থাকেন সাকিব বাহিনীদের। বিসিবি সভাপতি মনে করেন দর্শকদের দুয়ো দেওয়া টা ঠিক হয়নি। তার মতে হারা জেতা বড় কথা না ভালো ক্রিকেট খেলাটাই আসল। পাপন বলেন, “মানুষ বোর্ডকে বলবে, কোচিং স্টাফকে বলবে, প্লেয়ারদের বলবে। এটা স্বাভাবিক, এটা নিয়ে বলা উচিত না- এমন কিছু না। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যেহেতু সিরিজ চলছে, টুর্নামেন্ট চলছে, আরও তিনটা ম্যাচ বাকি। আবার এই ম্যাচগুলোতে আহামরি কিছু করতে পারব সেটাও না। তবে আমরা সক্ষম। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এখনও সম্ভব। হারা জেতা বড় কথা না, ভালো ক্রিকেট খেলাটা আসল। আমাদের ব্যাটিং ভালো হচ্ছে না।”
বিসিবি সভাপতি আরও বলেন, “আমি ওদের এটাই বলেছি, যে ঘুরে দাঁড়ানো উচিত। ওরা কি চায় বলুক, যখন যা চায় আমরা আছি। ওরা কথা দিয়েছে ওরা বসবে। এটাও বলেছে চাওয়ার কিছু নেই। আমি কথা বলে মনে হয়েছে ওরা এখন অনেক বেশি সিরিয়াস। এটা নিয়ে চিন্তা করছে কীভাবে আরও ভালো করা যায়। আশা করা ছাড়া উপায় নাই। আমি বলেছি। খারাপ সময়ে মানুষ অনেক কিছু বলবে। কারণ ভালো সময়ে মানুষ মাথায় নিয়ে নাচে। তাহলে খারাপ সময়ে বলবে না কেন। কিন্তু এই খারাপ সময়ে কেউ না থাকলেও আমরা আছি।”
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের ভরা ডুবির অন্যতম কারণ প্রতিম্যাচেই ব্যাটিং লাইন-আপ চেঞ্জ। দলের মধ্যে টিম কম্বিনেশন ঠিক নেই। এই ব্যর্থতার মাঝেও বিসিবি সভাপতি জানান দলের কম্বিনেশনে পরিবর্তন আসবে না। নাজমুল হাসান পাপন বলেন, “এই খারাপ সময়ে ওদের পাশে আমরা আছি। কিসের জন্য আছি? সামনে ওরা যেন ভালো খেলে, সেজন্যে। এই বিশ্বাস ওদের উপরে আছে। আমাদের যে শক্তি সামর্থ্য আছে, এটা নিয়েই লড়তে হবে। আমরা কোনো পরিবর্তন আনতে পারব না। কোনো জায়গায় কোনো পরিবর্তন আনতে পারব না। কাজেই এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে সামনের ম্যাচগুলো ভালো খেলুক এই প্রত্যাশায়।”