ভারতের আইপিএল কিংবা আইসিএল খেলতে গিয়ে স্বাগতিক ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনেক ক্রিকেটারই ফিক্সিংয়ের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। কোনো কোনো ঘটনা প্রকাশ পায়, আবার কোনো কোনো ঘটনা আড়ালেই থেকে যায়। তবে এটা পরবর্তীতে অনেকটাই কমে গেছে ভারতের ক্রিকেট বোর্ডের কড়াকড়িতে।
ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে মাত্র ২৯ বছর বয়সেই থমকে যায় তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। ২০০৭ সালে ভারতে খেলতে গিয়ে ফিক্সিং কাণ্ডে দোষী প্রমাণিত হয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা তারকা লু ভিনসেন্ট। ১৭ বছর পর সেই ঘটনা ও কষ্টের গল্প শোনলেন কিউই এই ব্যাটার। জানিয়েছেন, পরিবার থেকে ছিটকে পড়ে আর্থিক অনটনে পড়েই ঐ অবৈধ কাজের সঙ্গে জড়িয়ে যান তিনি।
ভিনসেন্ট জানিয়েছেন, কীভাবে এই অন্ধকার জগতে তিনি ঢুকে পড়েছিলেন তা বুঝতেও পারেননি। কিউই এই ক্রিকেটার বলেন, ‘ভারতে যখন ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগ (আইসিএল) খেলতে গিয়েছিলাম তখন আমি মানসিকভাবে খারাপ জায়গায় ছিলাম। সেটা ওরা কাজে লাগিয়েছিল। আমাকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল গড়াপেটার কালো দুনিয়ায়।’
ভিনসেন্ট বলেন, ‘প্রথম প্রথম খুব মজা হতো। ভাবতাম, কেউ জানতে পারবে না। কোনো সমস্যা হলে আমাকে উদ্ধার করার লোক আছে। কিন্তু ধীরে ধীরে বুঝতে পারলাম, এমন একটা চক্রে জড়িয়ে পড়েছি, যেখান থেকে আর বের হতে পারব না।’
পরে তিনি নিজেই প্রকাশ্যে ভুল স্বীকার করেছিলেন। তার খেসারতও দিতে হয়েছে তাকে। আজীবন নির্বাসিত হন তিনি। ফলে অল্প বয়সেই শেষ হয়ে যায় তার ক্যারিয়ার। ২০০৭ সালের পর থেকে শুধু আন্তর্জাতিক নয়, যে কোনও ধরনের ক্রিকেট আর খেলতে পারেননি এই ডানহাতি ব্যাটার।
ক্যারিয়ারে নিউজিল্যান্ডের হয়ে ২৩টি টেস্টে ১৩৩২ ও ১০২টি একদিনের ম্যাচে ২৪১৩ রান করেছিলেন ভিনসেন্ট। টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটে তিনটি করে মোট ৬টি শতরান ছিল তার। টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরিও রয়েছে ভিনসেন্টের।
পরিবার থেকে বিতারিত হন ভিনসেন্ট শিশু বয়সেই (মাত্র ১২ বছর)। তাই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। ফলে অর্থের লোভ সামলাতে পারেননি বলে জানান ভিনসেন্ট। অবশ্য এখন সেসব অতীত ইতিহাস। কোনও তরুণ ক্রিকেটার যাতে এই কালো দুনিয়ায় জড়িয়ে না পড়েন তার জন্য নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট সংস্থার হয়ে কাজ করেন তিনি।