নানা নাটক ও অচলাবস্থা ঘিরে রেখেছে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ক্রিকেট আসরকে। একপ্রকার অনিশ্চয়তা দানা বেঁধেছে বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা এই ওয়ানডে টুর্নামেন্টকে নিয়ে। যার প্রথমটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল বাংলাদেশে।
কোনো সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত করতে পারছে না ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। অমীমাংসিতই থেকে যাচ্ছে ভারত ও পাকিস্তানের দ্বন্দ্ব।
ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই) সাবেক সচিব জয় শাহ আইসিসির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন গত ১ ডিসেম্বর। তার আগে পর্যন্ত আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মতপার্থক্য দূর করতে পারেননি আইসিসি কর্তারা। ফলে ঘোষণা করা যায়নি প্রতিযোগিতার সূচিও।
গত শুক্রবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে আইসিসি বোর্ডের বৈঠক থাকলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। ১৫ মিনিটেই শেষ হয়ে যায় বৈঠক। ভারত এবং পাকিস্তানের ক্রিকেট কর্তাদের ভাবার জন্য সময় দিয়েছেন আইসিসি কর্তারা।
আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক পাকিস্তান। কিছু দিন আগে বিসিসিআই লিখিতভাবে আইসিসিকে জানিয়েছে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে পাকিস্তানে ভারতীয় দলকে পাঠানো সম্ভব নয়। কারণ, পাকিস্তানে দল পাঠানোর অনুমতি দিতে নয়াদিল্লি নারাজ। পাকিস্তানে গেলে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে বলেই ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ধারণা। ভারত তাই চায়, প্রতিযোগিতা হোক হাইব্রিড মডেলে। আইসিসি কর্তারা ভারতের বক্তব্য জানায় পিসিবিকে। তারপরই শুধু হয় জটিলতার।
পিসিবি প্রথমে জানায় তারা হাইব্রিড মডেল মানবে না। পরে অবশ্য হাইব্রিড মডেলে রাজি হয়েছে পিসিবি। তবে সঙ্গে জুড়ে দিয়েছে পাল্টা শর্ত।
পিসিবির শর্ত, তারা হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজন করতে রাজি। তবে ২০৩১ সাল পর্যন্ত ভারতে আইসিসির যে চারটি প্রতিযোগিতা হওয়ার কথা, সেগুলোও হাইব্রিড মডেলে ওয়ানডে বিশ্বকাপের আয়োজক ভারত। ২০২৬ সালে ভারত এবং শ্রীলঙ্কা যৌথভাবে আয়োজন করবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ২০২৯ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক ভারত। আর ২০৩১ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপ বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে আয়োজন করবে ভারত।
পাকিস্তানের দেওয়া শর্ত ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন জটিলতা। বিসিসিআই কর্তারা পিসিবির দেওয়া শর্ত মানতে নারাজ। বিসিসিআইয়ের যুক্তি, ভারতে যে চারটি প্রতিযোগিতা হওয়ার কথা, সেগুলো হাইব্রিড মডেলে আয়োজনের কোনও প্রশ্নই উঠতে পারে না।
বিসিসিআই এবং পিসিবি দু’পক্ষই নিজেদের অবস্থানে অনড়। নতুন করে কোনও পক্ষের তরফেই সুর নরমের ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। বিষয়টা দু’দেশের ক্রিকেট বোর্ডের কাছে অনেকটা সম্মানের লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। ক্ষমতা প্রদর্শনের লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। পরস্পরবিরোধী অবস্থানের প্রেক্ষিতে ঝুলে রয়েছে আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ভাগ্য।