প্রথমবারের মতো আফগানদের টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে রাশিদদের টাইগাররা হারোল ৬ উইকেটে। সিরিজ জিতলো ২-০ ব্যবধানে।
দেরিতে হলেও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে উন্নতির পথ খুঁজে পেয়েছে বাংলাদেশ। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে আগ্রাসন এবং দক্ষতার অভাবে নিয়মিতভাবে ম্যাচ জিততে না পারার কারণে এক সময় সকলেই বাংলাদেশকে বাতিলের খাতায় ফেলে দিয়েছিলো। তবে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটেও বদলেছে বাংলাদেশের চিত্র। সাকিবের নেতৃত্বে জয় পেতে শিখেছে দলটি। বিশ্ব মানের বোলিং লাইন আপ নিয়ে গড়া আফগানদের টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারাল টাইগাররা।
সিলেটে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে টাইগারদের সামনে ১৭ ওভারে ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে ১১৯ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় আফগানরা। ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাট চালাতে থাকেন লিটন কুমার দাস। ব্যাটিং পাওয়ার প্লেকে কাজে লাগিয়ে লিটন ও আফিফ তুলেন ৫৪ রান। যেখানে লিটনের ব্যাট থেকে আসে ৩১ রান। আর আফিফ করেন ১৫ রান।
দারুণ খেলতে থাকা এই জুটি ভাঙেন মুজিবর রহমান। রশিদের তালুবন্দী হওয়ার আগে লিটন করেন ৩৫ রান।
এক বল পরে সাজঘরে ফেরেন আফিফও। মুজিবের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হবার আগে আফিফ করেন ২৪ রান।
উইকেটে থিতু হবার আগেই আজমতউল্লাহ ওমরজায়ের বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে শান্ত করে ৪ রান।
৬৭ রান থেকে ৭৬ এর ভিতর ৩ উইকেট হারালে আবারও মনে শঙ্কা জাগে তীরে এসে আবারও তরী ডুববে না তো।
দ্রুত ৩ উইকেট তুলে জয়ের স্বপ্ন দেখা আফগানদের আশা দু:স্বপ্নে পরিণত করে সাকিব আল হাসান ও তৌহিদে হৃদয়ের জুটি।
এই দুই জনের ৩১ রানের জুটি জয়ের ভিত গড়ে দেয় বাংলাদেশের। ১৯ রান করে ওমরজায়ের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয়ে হৃদয় ফিরে গেলেও জয় পেতে কষ্ট হয়নি টাইগারদের।
সাকিবের অপরাজিত ১৮ ও শামীমের অপরাজিত ৭ রানের সুবাদে ৫ বল হাতে রেখেই জয় পায় বাংলাদেশ।
এর আগে, টস হেরে ব্যাট করতে নামা আফগানিস্তানের শুরুটা মোটেও সুখকর হয়নি। ১৬ রান তুলতেই হারিয়ে ফেলে তারা তাদের দুই ওপেনারকে। দুই ব্যাটারকেই আউট করেন পেসার তাসকিন আহমেদ। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে রহমানউল্লাহ গুরবাজের ক্যাচ নিজেই নেন তিনি। ৫ বলে ৮ রান করে আউট হন আফগান ব্যাটার।
নিজের পরের ওভারে তাসকিন সাজঘরে ফেরান হজরতউল্লাহ জাজাইকে। ১ চারে ৫ বলে ৪ রান করা এই ব্যাটার উইকেটের পেছনে লিটন দাসকে ক্যাচ দেন।
এরপর ম্যাচের অষ্টম ওভারের সময় বৃষ্টি নেমে আসে। প্রায় দেড় ঘণ্টা বৃষ্টির পর খেলা ফের শুরু হয়।
এর আগে পরে বেশ ভালো জুটিই গড়েছিলেন মোহাম্মদ নবি ও ইবরাহিম জাদরান।
তাদের ৩২ রানের জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান। ২২ বল খেলে ১৬ রান করে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরত যান নবি। এরপর ১ চার ও ছক্কায় ২৭ বলে ২২ রান করা ইবরাহিমকে আউট করেন সাকিব আল হাসান।
আফগানিস্তানের রান বাড়ে মূলত করিম জানাত ও আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ব্যাটে ভর করে। শেষদিকে বেশ দ্রুত রান তোলেন তারা। ২৯ বলে ৪২ রানের জুটি গড়েন দুজন। ২ চার ও ১ ছক্কায় ২১ বলে ২৫ রান করে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে ওমরজাই আউট হলে ভাঙ্গে এই জুটি।
চার ও ছক্কায় ১৫ বলে ২০ রান করা করিমকে আউট করেন তাসকিন আহমেদ। শেষদিকে নেমে ২ বলে একটি ছক্কা হাঁকান রশিদ খান। বাংলাদেশের পক্ষে ৪ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ। দুই উইকেট করে নেন মোস্তাফিজ ও সাকিব।
ম্যাচ ও সিরিজ সেরা হয়েছেন সাকিব আল হাসান।