ভারতের জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার সঞ্জয় বাঙ্গার। ছিলেন ভারতের হেড কোচও। আবার ধারাভাষ্যকার হিসেবেও যথেষ্ঠ খ্যাতিও কুড়িয়েছেন বাঙ্গার। তার ছেলে আরিয়ানের স্বপ্ন ছিল বাবার মতো ক্রিকেটার হওয়ার। খেলা শুরুও করেছিলেন। কিন্তু সে পথে বাধা হয়ে দাঁড়াল লিঙ্গ পরিচয়। জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে বাঙ্গারের সন্তানের। লিঙ্গ পরিবর্তন করে আরিয়ান থেকে অনন্যা হয়েছেন তিনি। নিজেই সে কথা জানিয়েছেন অনন্যা।
অলরাউন্ডার বাঙ্গার ভারতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে ১২টি টেস্ট ও ১৫টি ওয়ানডে খেলেছেন। আইপিএলেও কোচিং করান তিনি। তার সন্তান ২৩ বছরের আরিয়ান ছোট থেকে ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। ইসলাম জিমখানা ক্লাবের হয়ে খেলতেন তিনি। পরে চলে যান লন্ডনে। সেখানে গিয়ে লিস্টারশায়ারের হিঙ্কলে ক্রিকেট ক্লাবের হয়েও খেলতেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।
ম্যানচেস্টারে থাকেন অনন্যা। ২০২১ সালে তিনি সিদ্ধান্ত নেন, লিঙ্গ পরিবর্তন করাবেন। সেই মতো ‘হরমোনাল রিপ্লেসমেন্ট সার্জারি’ হয়। গত ১০ মাস ধরে সেই প্রক্রিয়া চলেছে। সেই সময়ের কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরেছেন অনন্যা। সেই ভিডিওতে তার খেলার ছবি রয়েছে। পাশাপাশি ২০১৬ সালে বিরাট কোহলি ও ২০১৭ সালে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির সঙ্গে তোলা ছবিও রয়েছে। ভিডিও’র ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নের পিছনে ছুটতে গিয়ে অনেক ত্যাগ করতে হয়েছে। অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। ক্রিকেটের বাইরে আরও একটা যাত্রা চলছিল। নিজেকে চেনার যাত্রা। সেই পথেও অনেক লড়াই করতে হয়েছে। অবশেষে নিজের সিদ্ধান্তেই টিকে থেকেছি। নিজেকে ভালবেসেছি। নিজেকে নিয়ে আমি গর্বিত।’
লিঙ্গ পরিবর্তন করায় পেশাদার ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন ছাড়তে হয়েছে অনন্যাকে। কারণ, ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা আইসিসি’র নিয়ম, রূপান্তরকামী বা রূপান্তরিতরা নারীদের ক্রিকেট খেলতে পারবেন না।
ক্রিকেটের এই নিয়মের বিরুদ্ধেও সরব হয়েছেন অনন্যা। তার মতে, লিঙ্গ পরিবর্তন করানোয় তিনি যে ক্রিকেট খেলতে পারবেন না, তা কোনও দিন ভাবতে পারেননি। ক্রিকেটের নিয়মে বলা হয়েছে, বয়ঃসন্ধির আগে লিঙ্গ পরিবর্তন করলে একমাত্র তখনই কোনও রূপান্তরিতকে নারীদের ক্রিকেট খেলার অনুমতি দেওয়া হবে। কিন্তু আইন অনুযায়ী, ১৮ বছর না হলে লিঙ্গ পরিবর্তন করানো বেআইনি। এই দ্বন্দ্বে পড়ে তার মতো ক্রিকেটারদের স্বপ্ন ভেঙে যাচ্ছে বলে অভিযোগ অনন্যার।