গৃহযুদ্ধের কারণে বিপর্যস্ত সুদান। তা সত্ত্বেও সে দেশের জাতীয় ফুটবল দল চমৎকার সব ফলাফল অর্জন করছে৷ আফ্রিকান কাপ ২০২৫ এবং বিশ্বকাপ ২০২৬-এর বাছাই পর্ব অতিক্রমের সম্ভাবনা জাগিয়েছে দলটি।
সুদানে ২০২৩ সালের এপ্রিলে শুরু হওয়া ভয়ঙ্কর গৃহযুদ্ধে এখনো থামেনি। সুদানি আর্মি এবং রেড সাপোর্ট ফোর্সেস মিলিটিয়ার মধ্যে যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গৃহযুদ্ধে অন্তত ১৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যদিও কারো কারো হিসেবে সংখ্যাটি দেড় লাখ।
সুদানে মৃত্যু, ধ্বংস, ক্ষুধা, রোগবালাই আর লুটতরাজের পরিস্থিতির মধ্যে ফুটবল গুরুত্ব পাচ্ছে না। জাতীয় দলের পক্ষেও গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব নয়।
সুদান জাতীয় দলের খেলোয়াড় আব্দেল রহমান কুকো বলেন, ‘দল এবং অন্য সবকিছুর উপর যুদ্ধের তীব্র প্রভাব রয়েছে। খেলোয়াড়রা প্রতিদিন তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোগেন।’
ফিফা ব়্যাংকিংয়ে ১২০ নম্বর অবস্থানে থাকা দেশটির খেলোয়াড়দের মধ্যে গৃহযুদ্ধ নিয়ে তাই উদ্বেগ রয়েছে।
কুকো বলেন, ‘প্রতিটি খেলায় যাওয়ার সময় আপনি এটা অনুভব করেন যে আপনি শুধু নিজের জন্য খেলছেন না, বরং পুরো দেশ আপনার সাফল্যের অপেক্ষায় রয়েছে। আমরা অনেক উচ্ছ্বাস নিয়ে প্রতিটি খেলায় অংশ নেই।’
অক্টোবরে সুদান আফ্রিকান কাপ অফ নেশনস (এফকন)-এর বাছাই পর্বে ব্যাক-টু-ব্যাক ঘানার মুখোমুখি হয়েছে। প্রথম ম্যাচে ড্র করলেও ফিরতি ম্যাচে ২-০ গোলে জিতেছে সুদান। নিরাপত্তার কারণে তাদের হোম ম্যাচটি লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়।
কুকো বলেন, ‘নিজের দেশে খেতে পারলে শতভাগ ভালো হতো। কে নিজের দেশের মানুষ এবং পরিবারের সামনে খেলতে চাইবে না? এটা অবশ্যই এক বড় সুবিধা যা আমাদের এই মুহূর্তে নেই।’
ঘানার বিপক্ষে জয়ের কারণে এফকনের বাছাই পর্বে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে সুদান। আগামী দুটি খেলায় দুই পয়েন্ট অর্জন করতে পারলেই বাছাই পর্ব উতরাতে পারবে দলটি৷ সেটা হলে ৪৯ বছরের মধ্যে এফকনে সুদানের হবে চতুর্থ অংশগ্রহণ।
বিশ্বকাপ বাছাই পর্বেও চার খেলায় দশ পয়েন্ট নিয়ে ভালো অবস্থানে আছে ইগলরা। শক্তিশালী সেনেগালের চেয়েও দুই পয়েন্টে এগিয়ে আছে সুদান।
২০২৬ সালে উত্তর আমেরিকা বিশ্বকাপে যেতে সুদানিদের এখনো অনেক পথ অতিক্রম করতে হবে। তবে সমর্থকরা বিশ্বাস করেন, প্রথম বারের মতো বিশ্বকাপে খেলবে তাদের দলটি।