স্পেনের এই নারী দলকে হিসাবেই রাখেনি কেউও, যে দলটি বিশ্বকাপ জিতবে। কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে স্পেনের নারীরা উঠে যায় ফাইনালে এবং বর্তমান ইউরোজয়ী ইংল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠেই হয়েছে চ্যাম্পিয়ন। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপে অংশ নেয় স্পেনের নারী দল।
সেই বিশ্বকাপ জয়ী নারীদের রাজকীয়ভাবে বরণ করে নিলো গোটা স্পেন। বিমান থেকে বিমানবন্দর, খোলা বাসে প্যারেড আর রিও পার্কের জমকালো আয়োজন সবখানেই ছিল দর্শকদের ঢল। মেলবোর্ন থেকে মাদ্রিদ। বিমানের লম্বা ফ্লাইটে তর সইছিলো না ওলগা, হারমোসা, ইভানাদের।
সবার আগে প্লেন থেকে ট্রফি হাতে বেরিয়ে এলেন অধিনায়ক ইভানা আন্দ্রেস, কোচ জর্জ ভিলদা ও ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট। এরপর একে একে বাকিরা। স্পেনের মাটিতে প্রথম গ্রুপ ফটো রানওয়েতে। সেখান থেকে ছাদখোলা বাসে মাদ্রিদ ভ্রমণ। লম্বা টুর্নামেন্ট, ভ্রমণ আর নির্ঘুম রাতের পরও ক্লান্তিতে কাবু হননি কেউই। প্রচণ্ড গরম আর মধ্যরাতের ক্লান্তিতেও জেগে ছিল মাদ্রিদ।
অস্ট্রেলিয়া থেকে মাদ্রিদে আসার পর আতশবাজিসহ নানা ধরনের রঙ ছিটিয়ে বরণ করে নেওয়া হয় ফুটবলারদের। ফুটবলের নতুন কুইনদের দেখতে রাস্তার পাশে অপেক্ষায় ছিলেন ভক্তরা। এরপর ছাদখোলা বাসে করে বিশ্বকাপ জয়ীদের নেয়া হয় সংবর্ধনার জন্য নির্ধারিত স্থানে। এক এক করে অন্ধকার কাটিয়ে স্টেজে অনুপ্রবেশ ঘটে ফুটবলারদের। এরপর হেসে গেয়ে লাখো সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে উদযাপন করা হয় বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দ। স্টেজে দর্শকদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন ফুটবলাররা। বিশ্বকাপ জয়ের অনুভূতি প্রকাশ করেন তারা।
স্পেন ফুটবলার ওলগা বলেন, “আজকে পুরো দেশের জন্যই বিশেষ দিন। তবে আমার জন্য একটু মিশ্র অনুভূতির। গতকালও যেমনটা ছিল। একদিকে এটা আমার জন্য সেরা দিন। অন্যদিকে সবচেয়ে খারাপ। আমি এই আনন্দ পুরো দেশকে উপহার দিতে চাই।”
কোচ ভিলদার সঙ্গে এদিনও দূরত্ব স্পষ্ট ফুটবলারদের। তবে মঞ্চে সমর্থকদের ধন্যবাদ দিতে ভোলেননি স্প্যানিশ কোচ, “আপনাদের সমর্থন ও উৎসাহ না থাকলে আমরা এমন সাফল্য পেতে পারতাম না। আজ উৎসবের দিন, উদযাপনেরও।”
কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালে স্পেনের জয়ের নায়ক, আসরের সেরা উদীয়মান তারকা সালমা প্যারালুয়েলো নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে বলেন, “আমার কাছে স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো এটি। এত তাড়াতাড়ি বিশ্বকাপ জয় করা আমার কাছে অবিশ্বাস্য। আমি সত্যি অনেক উপভোগ করেছি। আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই এবং আপনাদের সবার সঙ্গে এটি উদযাপন করতে চাই।”