আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম শতরান করলেন ভারতের তিলক ভার্মা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ১০৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেললেন। অথচ একটা সময় দারুণ অর্থ কষ্টে ছিলেন ২২ বছরের এই তরুণ। ইলেকট্রিক মিস্ত্রির ছেলে বলে তিলকের কঠিন জীবন পার করতে হয়েছে কিশোর বেলা থেকেই।
ম্যাচ শেষে ক্রিকেটের নতুন বড় তারকা তিলক বলেছেন, ‘এই মুহূর্তটার জন্য দীর্ঘ দিন অপেক্ষা করেছি। চোট সারিয়ে ফেরার পর শতরান করতে পেরে দারুণ লাগছে। শুরুতে পিচ একটু চ্যালেঞ্জিং ছিল। পিচে দু’রকম গতি ছিল। আমি এবং অভিষেক শর্মা দু’জনেই চাপে ছিলাম একটা সময় পর্যন্ত। অভিষেকও খুব ভাল ব্যাট করেছে। আমার চাপ কমিয়ে দিয়েছে।’
একটি রেকর্ডও গড়েছেন তিলক। সর্বকনিষ্ঠ ব্যাটার হিসাবে টি-টোয়েন্টির প্রথম দশে থাকা কোনও দলের বিরুদ্ধে শতরান করেছেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ২২ বছর ৫ দিন বয়সে তিনি এই কীর্তি করেছেন। আগে এই রেকর্ড ছিল পাকিস্তানের আহমেদ শেহজ়াদের। ২০১৪ সালে ২২ বছর ১২৭ দিন বয়সে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শতরান করেছিলেন তিনি।
তিলকের বাবা নাম্বুরি নাগারাজু ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। মা গায়ত্রী দেবী গৃহবধূ। টানাটানির সংসারে কষ্ট করে ছেলেকে ক্রিকেটার তৈরি করেছেন তারা। তাদের সেই কষ্টের প্রতিদান দিচ্ছে তিলকের ব্যাট। তিলকের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় ২০২৩ সালের ৩ আগস্ট টি-টোয়েন্টি দিয়ে। সেই ফরম্যাটেই প্রথম শতরান পেলেন তিলক।
১১ বছরের তিলকের টেনিস বলের ক্রিকেটে ব্যাটিং দেখে সম্ভাবনা দেখেছিলেন তার কোচ সালিম বায়াশ। তিনিই তিলককে নিয়ে যান নিজের লিগালা ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে। সেই থেকে শুরু তিলকের প্রথাগত ক্রিকেট সাধনা। বাড়ি থেকে অ্যাকাডেমির দূরত্ব ছিল ৪০ কিলোমিটার। সেই পথ প্রতি দিন যাওয়ার মতো সামর্থ্য ছিল না ভার্মা পরিবারের। সালিমই সেই দায়িত্ব নেন। নিজের স্কুটারে প্রতি দিন তিলককে নিয়ে যেতেন, আবার প্রশিক্ষণ শেষে বাড়ি পৌঁছে দিতেন।
বুধবারের আগে পর্যন্ত দেশের হয়ে চারটি ওয়ানডে ম্যাচ এবং ১৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন তিলক। তিনটি অর্ধশতরান থাকলেও শতরান করতে পারেননি এত দিন। সেই আক্ষেপ মিটিয়ে নিলেন ৫৬ বলে ১০৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে। তা সাজালেন ৮টি চার এবং ৭টি ছয় দিয়ে।