ইয়ন মরগান ও সাকিব আল হাসান দুজনিই ২০০৬ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ দলের সদস্য ছিলেন। মরগান আয়ারল্যান্ডের অধিনায়ক থাকলেও, সাকিব ছিলেন বাংলাদেশ দলের সদস্য। জাতীয় দলে এই দুই ক্রিকেটারের ওয়ানডে অভিষেকটাও হয়েছে একদিন আগে পরে। ২০০৬ সালে ৫ আগস্ট অভিষেক মরগানের ও ৬ আগস্ট সাকিবের। তবে, সাকিব এখনও খেলার মাঠে থাকলেও মরগান নিয়েছে বিদায়। তবে ক্রিকেট ছাড়লেও মাঠ ছাড়েননি তিনি। ফিরেছেন ধারাভাষ্যকার হিসেবে।
বিশ্বকাপের ধারাভাষ্যকার প্যানেলের সদস্য মরগান এখন রয়েছেন ধর্মশালায়। সেখানেই বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড ম্যাচের আগের দিন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সাবেক বিশ্বকাপ জয়ী ইংলিশ এই অধিনায়ক। সেখানেই সাকিবের প্রশংসা করেন তিনি।
মরগান বলেন, “সাকিব অবিশ্বাস্য ক্রিকেটার,যখন পারফরম্যান্সের ব্যাপার আসে। পৃথিবীর অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সে। এটা ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের মাধ্যমেই প্রমাণ করেছে। এটা তার পঞ্চম বিশ্বকাপ, এমন ক্রিকেটার খুব বেশি নেই বর্তমানে। দীর্ঘস্থায়ীত্ব ও পারফরম্যান্স তাকে বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারের তালিকায় এনেছে।”
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ জয় নিয়ে ইংল্যান্ডের সাবেক এই অধিনায়ক বলেন, “ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ যখন ম্যাচ জেতে, তাদের মূল ক্রিকেটারদের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। আফগানিস্তানের বিপক্ষে জেতায় একটা ইতিবাচক দিক হচ্ছে- শান্ত, মিরাজের মতো তরুণরা এগিয়ে এসেছে। তারা খুব ভালো করেছে। অনেক চাপ সরিয়ে নিয়েছে তারা, যেগুলো সাধারণত অভিজ্ঞদের ওপর থাকে। এটা সাকিবের পারফরম্যান্স ও অধিনায়কত্বে সাহায্য করবে যদি তারা এটা চালিয়ে যেতে পারে।”
ধর্মশালার কন্ডিশনে ইংল্যান্ডকেই এগিয়ে রাখছেন মরগান। ইংলিশ এই ধারাভাষ্যকার বলেন, “তারা কঠিন দল, আপনি যেখানেই খেলেন না কেন। আমি অবশ্য মনে করি এখানকার কন্ডিশন বাংলাদেশের চেয়ে ইংল্যান্ডের সঙ্গেই বেশি মানানসই। আগের পুরো ম্যাচে দেখেছি একটু বাড়তি বাউন্স ছিল। দ্রুতগতির বাউন্স এমন না, কিন্তু একটু বাড়তি বাউন্স ছিল। ”
এ সময় তিনি আরও যোগ করেন, “এটা হয়তো ইংল্যান্ডের পেসারদের বেশি মানাবে। বাংলাদেশকে কিছুটা দুর্বল করবে। তাদের স্পিনাররা আফগানিস্তানের বিপক্ষে আধিপত্য দেখিয়েছে। তারা খুব ভালো করেছে, বল টার্ন করছিল। কিন্তু তবুও এটা বাংলাদেশের চেয়ে ইংল্যান্ডের শক্তির জায়গাতেই বেশি মানাবে। ”
বাংলাদেশের বিপক্ষে হারের স্মৃতি মরগানের কাছে এখনও স্পষ্ট। ২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে হেরে গিয়ে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেই ইংল্যান্ড দল। এরপরি বদলে গিয়েছে দলটি। চার বছর পর ২০১৯ বিশ্বকাপে হয়ে যায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। তার কাছে তাই প্রশ্ন, বাংলাদেশের মতো দেশগুলো কীভাবে বড় ট্রফির খোঁজে নামতে পারে?
উত্তরে মরগান বলেন, “এটা বড় এক চ্যালেঞ্জ। প্রতিভা ওদের যথেষ্টই আছে। তবে সেই প্রতিভা কীভাবে ব্যবহার আর শাণিত করা যায়, এটির ওপরই নির্ভর করে বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোতে কতটা লড়াই করতে পারবে। ভবিষ্যতে তারা কোন পথে এগোবে, সেটি ঠিক করে, ভবিষ্যতে দলের চেহারা কেমন হবে, সেটায় প্রাধান্য ও গুরুত্ব দিয়ে, সেভাবেই পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে। এটা হয়তো তাদের জন্য উপযুক্ত আর তাদের পক্ষে কাজ করতে পারে।”