• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৮ ফাল্গুন ১৪৩০, ২২ শা'বান ১৪৪৬
ত্রিদেশী সিরিজ

রেকর্ড জয়ে ফাইনালে পাকিস্তান


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫, ১০:০১ এএম
রেকর্ড জয়ে ফাইনালে পাকিস্তান
ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে উঠল পাকিস্তান। ছবি: সংগৃহীত

মোহাম্মদ রিজওয়ান ও সালমান আলি আগার দারুণ সেঞ্চুরি আর রেকর্ড জুটিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে উঠল পাকিস্তান। সেমিফাইনালে পরিণত হওয়া ম্যাচে বুধবার করাচির জাতীয় স্টেডিয়ামে ৩৫৩ রানের লক্ষ্য ৬ বল বাকি থাকতে পেরিয়ে যায় স্বাগতিকরা।

পাকিস্তানের ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রান তাড়ায় জয় এটি। এর আগে সর্বোচ্চ ৩৪৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ২০২২ সালে লাহোরে তারা অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছিল ৬ উইকেটে।

আনপ্রেডিক্টেবল খ্যাত দলটির এবারের জয়ের দুই নায়ক দলনেতা রিজওয়ান ও সহ-অধিনায়ক সালমান। তাদের জুটিতে আসে ২২৯ বলে ২৬০ রান। চতুর্থ উইকেটে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ জুটি এটি। পেছনে পড়ে গেল ২০০৯ সালে সেঞ্চুরিয়নে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারতের বিপক্ষে মোহাম্মদ ইউসুফ ও শোয়েব মালিকের ২০৬ রানের জুটি।

এছাড়া রান তাড়ায় যেকোনো উইকেটে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ডও লেখা হলো নতুন করে। রিজওয়ান ও সালমান পেছনে ফেলে দিলেন ২০১১ সালে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মোহাম্মদ হাফিজ ও ইমরান ফারহাদের অবিচ্ছিন্ন ২২৮ রানের উদ্বোধনী জুটিকে।

সালমান ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরিতে ১০৩ বলে ১৩৪ রান করেন। ১৬ চার ও ২ ছক্কায় গড়া ইনিংসে ম্যাচের সেরাও তিনিই। আর ৯ চার ও ৩ ছক্কায় ১২৮ বলে ১২২ রানের অপরাজিত ইনিংসে দলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন রিজওয়ান।

এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা বড় পুঁজি পায় তিনটি আশি ছড়ানো ও একটি ক্যামিও ইনিংসের সুবাদে হয়। অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ৯৬ বলে করেন ৮২ রান। ৮৪ বলে ৮৩ রান করেন ম্যাথু ব্রিটস্কি। সিরিজে প্রথম খেলতে নেমে ১১ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৬ বলে ৮৭ রান করেন হাইনরিখ ক্লসেন। ওয়ানডেতে তার সবশেষ চার ইনিংস যথাক্রমে ৮৬, ৯৭, ৮১ ও ৮৭; সবকটিই পাকিস্তানের বিপক্ষে।

প্রোটিয়ারা শেষ ১০ ওভারে তোলে ১১০ রান। সবই বিফলে গেল রিজওয়ান ও সালমানের অসাধারণ জুটির সামনে।

রান তাড়ায় পাকিস্তানকে ভালো শুরু এনে দেন ফখর জামান ও বাবর আজম। ৩৭ বলে ৫৭ রানের উদ্বোধনী জুটিতে সুর বেঁধে দেন তারা। ১৯ বলে ২৩ রান করে ফেরেন বাবর। ফখর করেন ২৮ বলে ৪১ রান। দুজনই ভিয়ান মুল্ডারের শিকার। তিনে নেমে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি সৌদ শাকিল।

একাদশ ওভারে ৯১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান। তবে রিজওয়ান ও সালমানের জুটি ঠিকই পথে রাখে তাদের। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে নেন তারা, আর একটু একটু করে লড়াই থেকে দূরে সরে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

শেষ ১০ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ৮২ রান। ৪৩তম ওভারে মুল্ডারকে ছক্কায় উড়িয়ে রিজওয়ান চতুর্থ ওয়ানডে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ১০৬ বলে। এক বল পর পূর্ণ হয় জুটির দুইশত রান। ওই ওভারেই সালমান সেঞ্চুরিতে পা রাখেন ৮৭ বলে। ওয়ানডেতে এই প্রথম পাকিস্তানের চার ও পাঁচ নম্বর ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি করলেন একই ম্যাচে।

ম্যাচের শেষ ১২ বলে দরকার যখন ১০ রান, এনগিডিকে চমৎকার শটে ছক্কা মারেন সালমান। তিনি কাজ শেষ করে আসতে না পারলেও কোনো সমস্যা হলো না দলের।

টস জিতে এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫১ রানের উদ্বোধনী জুটিতে শুরুটা ভালো করে দক্ষিণ আফ্রিকা। টনি ডি জর্জিকে ফিরিয়ে পাকিস্তানকে প্রথম উইকেট এনে দেন শাহিন শাহ আফ্রিদি।

দ্বিতীয় উইকেটে শতরানের জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন বাভুমা ও ব্রিটস্কি। ৫৬ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন বাভুমা। কিন্তু রান আউটে বিদায় নেন তিনি মাইলফলক থেকে ১৮ রান দূরে থাকতে।

টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে সালমানের দারুণ ক্যাচে ফেরেন ব্রিটস্কি। ওয়ানডে অভিষেকে সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ডের পর এবার প্রথম দুই ম্যাচে সবচেয়ে বেশি রানের (২৩৮) কীর্তি গড়লেন তিনি। এখানেও তিনি ছাড়িয়ে গেলেন ডেসমন্ড হেইন্সকে (১৯৫)।

মুল্ডার টিকতে পারেননি। পঞ্চম উইকেটে ৪৮ বলে ৭৮ রানের জুটিতে দলের স্কোর তিনশ পার করেন ক্লসেন ও কাইল ভেরেইনা।

ক্লসেন ফিফটি পূর্ণ করেন ৩৮ বলে। পরের ১৮ বলে তিনি করেন ৩৭ রান। শেষ বলে ছক্কায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে সাড়ে তিনশ রানের ঠিকানায় নিয়ে যান ভেরেইনা (৩২ বলে ৪৪*)।

আগামী শুক্রবার ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে লড়বে পাকিস্তান। পাকিস্তান নিজেদের প্রথম ম্যাচে কিউইদের বিপক্ষে হেরেছিল। তবে দুটি ম্যাচ জিতে ফাইনালে ওঠে নিউজিল্যান্ড।

Link copied!