পাকিস্তান রয়ে গেছে পাকিস্তান হয়েই। জয়ের দিন হোক বা হারের দিন, প্রত্যেক মূহূর্তেই ঘরোয়া কোন্দলে জর্জরিত থাকে পাকিস্তান দল। কখনও দলের ভিতরেই ঝামেলা, আবার কখনও নবীন-প্রবীণ ভেদাভেদ। আবার কখনও দায় ঠেলাঠেলি, পাকিস্তান ক্রিকেটে এটাকেই প্রতিদিনের নাটক বলা চলে।
রাওয়ালপিন্ডিতে শক্তিশালী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের পরও দলের অধিনায়ককে সম্মান জানানোর পরিবর্তে অন এয়ারে লাইভ সম্প্রচারের সময় অপমান করে বসলেন সাবেক ক্রিকেটার রামিজ রাজা।
অসলে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের এটাই সমস্যা। কখন কি করতে হয়, সেটাও তারা বোঝেন না, আর কোথায় কি বলতে হয় সেই শিক্ষাও এতদিনে রপ্ত করতে পারেননি সাবেকরা। বরাবরই বর্তমান দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে পাকিস্তানের সাবেকদের লড়াই চলতে থাকে। তবে এবার যে সেটা এরকম মাত্রায় হবে, সেটা বুধতে পারেননি অধিনায়ক শান মাসুদ।
পাকিস্তান ক্রিকেট দলের নির্বাচক ছিলেন রামিজ। তার সময় চোখে লাগার মতো পারফরমেন্স করে আইসিসির বিশ্বকাপ জেতেনি পাকিস্তান। কিন্তু বারবরই তিনি নিজেকে সেদেশের ক্রিকেটের অনেকটা ‘জনক’ বলে মনে করেন। কখনও আইন, আদালতের ওপরে নিয়ে গিয়ে নিজেই ঘোষণা করেছিলেন মুহম্মদ আমিরকে দলে সুযোগ দেওয়া হবে না। এরপর তিনি সভাপতি পদ থেকে সরতেই রামিজ রাজাকে পাত্তা না দিয়ে আমিরকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে ফেরানো হয়েছিল।
এবারও লাইমলাইট পাওয়ার জন্য এবং নিজেকে জাহির করার জন্য পাকিস্তানের বর্তমান অধিনায়ককেই ছোট করলেন রামিজ, লাইভ সম্প্রচার চলাকালীন তার সাক্ষাৎকার নিতে নিতেই তাকে করলেন চরম অপমান। কোথায় ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আড়াই দিনে তৃতীয় টেস্ট জেতার পর সিরিজ জয়ের আনন্দে ভাসবেন রাজারা, সেটা না করে নিজেদের বড় করে দেখাতেই শান মাসুদকে অযথা অপমান করলেন টেলিভিশনে। অবশ্য এই কাজ করে তিনিও যে খুব হিরো হলেন তা নয়, সোশাল মিডিয়ায় তাকে নিয়েও ছিঃ ছিঃ করছে পাকিস্তান ক্রিকেটভক্তরা।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তৃতীয় দিনে রাওয়াপিন্ডি টেস্টে পাকিস্তানের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৩৬ রানের। অধিনায়ক শান মাসুদ নিজে অপরাজিত থেকেই ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। এরপরই তাকে পাশে বসিয়ে রামিজ রাজা বললেন, এমন সিরিজ জয় একবার দেখতে পেয়েছেন, ভবিষ্যৎে আর দেখতে পাবেন না, এমন নয় তো? এরপর শান মাসুদকে মনে করালেন টানা ছয় ম্যাচে হারের কথা। অথচ গত ম্যাচেই জিতেছিলেন শান।
এরপরও নিজেকে পৃথিবীর অনেকটা সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার বানিয়েই অন এয়ারে শান মাসুদকে ব্যাটিং টিপস দিয়ে গিয়ে পাল্টা ট্রোলের মুখেই পড়েন রামিজ রাজা।