এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তানের রোমাঞ্চকর ম্যাচ দেখার জন্য দর্শকরা বুদ হয়ে ছিলেন। শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) পাল্লেকেলেতে সেই রোমাঞ্চকর ম্যাচে এবার জল ঢেলে দিল বৃষ্টি। ম্যাচটিতে এক ইনিংস খেলা হওয়ার পর থেকেই শুরু হয় বৃষ্টির রাজত্ব। শেষ পর্যন্ত বৃষ্টিরই জয় হলো। এতে দুই দলকে ১টি করে পয়েন্ট নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। এতে অবশ্য ৩ পয়েন্ট নিয়ে সুপার ফোর নিশ্চিত করে ফেলেছে পাকিস্তান। আর ভারত পরের ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে না হারলেই মিলবে সুপার ফোরের টিকিট।
পাকিস্তানি পেসারদের গতির ঝড়ে শুরুতেই বড় হোঁচট খায় ভারত। তবে সেই চাপ দুর্দান্তভাবে সামাল দিয়ে দলকে লড়াকু পুঁজি এনে দেন ঈশান কিষান ও হার্দিক পান্ডিয়া। এদিন পাকিস্তানের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৮.৫ ওভারে ২৬৬ রানে গুটিয়ে যায় রোহিত শর্মার দল। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে বৃষ্টির কারণে নামতেই পারেনি বাবর আজমের পাকিস্তান।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানি বোলারদের ওপর ব্যাট হাতে শাসন করতে ব্যর্থ হয় ভারতীয় টপ-অডারের ৪ ব্যাটার। ম্যাচ শুরুর কিছুক্ষণ পরেই বৃষ্টির কারণে মাঠ ছাড়তে হয় দুদলকে। বৃষ্টির আগে বিনা উইকেটে ভারতের সংগ্রহ ছিল ১৫ রান। তবে, বৃষ্টির পরই পাকিস্তান পেসাররা গতির ঝড় তোলেন। শাহীন, রউফদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে ৪৮ রান তুলতে পারে ভারত। কিন্তু দলটি হারায় ৩ উইকেট।
পাকিস্তানের হয়ে উইকেট নেয়ার কাজটা শুরু করেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। তার দারুণ এক ডেলিভারিতে রোহিতকে বোল্ড করেন আফ্রিদি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২২ বলে ১১ রান। রোহিতের বিদায়ের পর উইকেটে বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি বিরাট কোহলি। সপ্তম ওভারের তৃতীয় বলটি স্টাম্পের ওপর রেখেছিলেন আফ্রিদি, সেখানে আড়া-আড়ি ব্যাটে খেলতে চেয়েছিলেন কোহলি। কিন্তু টাইমিং হয়নি, ইনসাইড এজ হয়ে লেগ স্টাম্প উপড়ে গেছে। ৪ রানের বেশি করতে পারলেন না এই অভিজ্ঞ ব্যাটার।
এরপর আফ্রিদির সঙ্গে উইকেট নেয়ার তালিকায় যোগ দেন হারিস রউফ। হারিস রউফের করা পাওয়ার প্লের শেষ ওভারের, পঞ্চম বলটি খানিকটা খাটো লেন্থে ছিল, সেখানে পুল করতে গিয়ে ভুল করে বসেন শ্রেয়াস আইয়ার। মিড উইকেটে ফখর জামানের হাতে ধরা পরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৯ বলে ১৪ রান। এরপর দেখে শুনে খেলতে থাকা শুভমান গিলকে ফেরান হারিস রউফ। দলীয় ৬৬ রানের সময় ১০ রান করে আউট হন গিল।
তবে এরপরই ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেন ইশান কিষাণ ও হার্দিক পান্ডিয়া। ইশান-পান্ডিয়ার ব্যাটে চড়ে চাপমুক্ত হয় ভারত। শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে দারুণ ভীত গড়ে তোলেন এই দুই ব্যাটসম্যান। দুজনই তুলে নেন অর্ধশতক। গড়ে তুলেন ১৩৮ রানের পার্টনারশিপ। অবশেষে ইশানকে ফেরান হারিস। ব্যক্তিগত ৮২ রান করে যখন ইশান আউট হন তখন ভারতের স্কোর ২০৪ রান।
হার্দিক যখন উইকেটে আসেন তখন ধুঁকছিল দল। ইষানের সঙ্গে দুর্দান্ত ইনিংস খেললেও সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে সাজঘরে ফিরেছেন হার্দিক। ৪৪তম ওভারে আফ্রিদির স্লোয়ারেই বোকা বনেছেন হার্দিক। এক্সট্রা কভারে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৯০ বলে ৮৭ রান। মাত্র ১৩ রানের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেছেন হার্দিক।
ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে হার্দিক যখন সাজঘরে ফেরেন তখন ভারতের সংগ্রহ ২৩৯ রান। এর সঙ্গে আর মাত্র ২৭ রান যোগ করতেই পরের ৪ উইকেট হারিয়েছে তারা। রবীন্দ্র জাদেজা-শার্দুল ঠাকুররা দাঁড়াতেই পারেননি এদিন। তাদের ব্যর্থতায় ৭ বল আগেই অলআউট হয়েছে দলটা। পাকিস্তানের হয়ে আফ্রিদি নেন ৪ উইকেট। নাসিম ও রউফ নেন তিনটি করে উইকেট। এরপর ইনিংস বিরতিতে গেলে শুরু হয় বৃষ্টি। এরপর আর দ্বিতীয় ইনিংসে একটি বলও মাঠে গড়াইনি। শেষ পর্যন্ত দুই দলকে পয়েন্ট ভাগা-ভাগি করে নিতে হয়।