• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রোমাঞ্চ ছড়িয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতল পাকিস্তান


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২৩, ০৯:২৫ এএম
রোমাঞ্চ ছড়িয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতল পাকিস্তান
জয়ের পর নাসিমের উচ্ছ্বাস। ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবারের ওয়ানডে ম্যাচ জিততে পারত আফগানিস্তান। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত জিতে নিল পাকিস্তান। হাম্বানটোটায় সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাবর আজমরা নবীদের হারায় ১ উইকেটে। ফলে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করল পাকিস্তান।

টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত আফগানদের। প্রথম ম্যাচের পুরো উল্টো চিত্র দেখা মিললো এই ম্যাচে আফগানদের ব্যাটিংয়ে। যে মাঠে দুই দিন আগে পাকিস্তানের বোলারদের সামনে অসহায় আত্মসমর্পন করেছিল গুরবাজ-জাদরানরা সেই মাঠেই  পাকিস্তানের তিন পেস ত্রয়ী শাহিন শাহ আফ্রিদি, নাসিম ও হারিস রউফদের বিপক্ষে দারুণ শুরু করে আফগান ব্যাটাররা।
উইকেট ধরে রেখে পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে তাঁরা তুলেছেন ৪৮ রান। ২১ ওভারে রান ছিল ৯১।
এরপর যেন খোলস থেকে বেরিয়ে আসেন গুরবাজ ও ইব্রাহিম। তাঁদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে উদ্বোধনী জুটিতে ২২৭ রান তোলে আফগানিস্তান।

শেষ চার ম্যাচে দ্বিতীয় বারের মতো দুইশ রানের জুটি গড়লো আফগান ওপেনাররা। গত মাসের শুরুর দিকে চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিপক্ষে গুরবাজ ও ইব্রাহিম মিলেই গড়েছিলেন ২৫৬ রানের জুটি, যে কোনো উইকেটেই আফগানিস্তানের রেকর্ড জুটি সেটি। তারপরই এবারের ২২৭। 

এরপর এই জুটি ভাঙে ১০১ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৮০ রানে ইব্রাহিমের আউটে। তার উইকেট তুলে নেন উসামা মির।

৪৫তম ওভারে গুরবাজকেও হারায় আফগানিস্তান। শাহীন শাহ আফ্রিদির বলে আউট হওয়ার আগে ১৫১ বলে ১৪ চার ও ৩ ছয়ে ১৫১ রান করেছেন তিনি। এটি আফগানদের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রেকর্ড।

ইব্রাহিম ও গুরবাজের পর আর কেউ খুব বড় কোনো ইনিংস খেলতে না পারলেও ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩০০ রান তুলতে পারে আফগানরা। পাকিস্তানের বিপক্ষে এবারই প্রথম ৩০০ রানের স্কোর করল আফগানিস্তান। এর আগের সর্বোচ্চ ছিল ২৫৭ রান, ২০১৮ সালের এশিয়া কাপে।
৩০১ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে, পাকিস্তানের শুরুটা খারাপ ছিল না। উদ্বোধনী জুটিতে ফখর জামান ও ইমাম উল হক স্কোর বোর্ডে রান জমা করেন ৫২। এরপর ৩০ রান করা ফখর জামানকে ফেরান ফারুকি। তবে, পাকিস্তানের জয়ের কক্ষ পথে রাখেন বাবর আজম ও ইমাম উল হকের ১১৮ রানের জুটি।

৫৩ রান করা বাবরকে ফিরয়ে আফগান শিবিরে  স্বস্থি ফেরান সেই ফারুকি। এরপরিই ছন্দপতন পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ে। ৪১ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারালে জয়ের সম্ভাবনা ফিকে হতে থাকে। কিন্তু ক্রিকেট তো আনপ্রেডিকটেবল একটা গেইম। আর পাকিস্তানকে বলা হয় আনপ্রেডিটেবল একটা টিম। যেখানে মনে হেয়েছে ম্যাচটা হারতে যাচ্ছে পাকিস্তান তখনি ব্যাট হাতে ২২ গজের সবুজ ঘাসে শাদাব খানের দৃষ্টি নন্দন ব্যাটিং। তার কল্যাণে ম্যাচ শেষ ওভার পর্যন্ত গড়ায়।

ওখানেই ছিল সব নাটক। শেষ ওভারে পাকিস্তানের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১১ রান। ৩৫ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৪৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন শাদাব খান।
শেষ ওভারের প্রথম বলেই ঘটে বিপত্তি। নন-স্ট্রাইকে পজিশনে থাকা শাদাবকে মানকাডের ফাঁদে ফেলে ফের পাকিস্তানকে চাপে ফেলেন বোলার ফজলহক ফারুকী। ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩৫ বলে ৪৮ রান করেন শাদাব। জয়ের জন্য পাকিস্তানের তখন প্রয়োজন ৬ বলে ১১ রান আর আফগানিস্তানের প্রয়োজন মাত্র ১টি উইকেট।

ক্রিজে নাসিম ও হারিস রউফ।  টান টান উত্তেজনার সে পরিস্থিতে প্রথম বলেই ডিপ এক্সট্রা কাভারের ওপর দিয়ে তুলে মেরে ৪ আদায় করে নেন নাসিম। পরের বল ডট এরপর এক রান নিয়ে প্রান্ত বদল করেন নাসিম-হারিস। চতুর্থ বল ডিপ মিউইকেটে পাঠিয়ে ৩ রান আদায় করে নেন হারিস। যদিও ফিল্ডার প্রথম দফায় বল মিস না করলে ২ রানের বেশি আসতো না। জয়ের জন্য তখন ২ বলে প্রয়োজন ৩ রান। ১ উইকেট দরকার হওয়ায় আশা শেষ হয়নি আফগানিস্তানেরও।

কিন্তু তাদের আশায় গুড়েবালি দিয়ে পরের বলেই জয় ছিনিয়ে নেয় পাকিস্তান।  অফ স্টাম্পের বাইরের বল নাসিরের ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে স্পর্শ করে বাউন্ডারি লাইন। ব্যাট-হেলমেট ছুড়ে ফেলে দৌড়ে উদযাপনে মাতেন নাসিম। এর আগে এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টি শেষ ওভারে ফারুকিকে ২টি ছয় মেরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে পাকিস্তানকে জিতিয়ে ছিলেন তিনি। পাকিস্তানের পক্ষে সর্বোচ্চ ৯১ রান করেন ইমাম। ১০৫ বলের ইনিংসটিতে মাত্র ৪টি চার মেরেছেন এই ওপেনার। ম্যাচ সেরা হন শাদাব খান। 

Link copied!