বিশ্ব দাবা অলিম্পিয়াডে পুরুষ–নারী উভয় বিভাগে সোনা জিতে ইতিহাস গড়েছে ভারত। হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে রোববার রাতে ৪৫তম দাবা অলিম্পিয়াডের ফাইনাল রাউন্ডে প্রতিপক্ষদের সহজেই হারিয়ে দেন ভারতের ছেলে ও মেয়েরা। ২০২২ সালে ভারতের চেন্নাইয়ে বসেছিল এই আসর। সেবার দুই বিভাগেই ব্রোঞ্জ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল ভারতকে।
উন্মুক্ত (ছেলেদের) বিভাগে এবার রুপা ও ব্রোঞ্জ জিতেছে যুক্তরাষ্ট্র ও উজবেকিস্তান। মেয়েদের বিভাগে রুপা ও ব্রোঞ্জ জিতেছে কাজাখস্তান ও যুক্তরাষ্ট্র।
রানী হামিদ–এনামুল হোসেন রাজীবদের বাংলাদেশ কোনো বিভাগেই শীর্ষ পঞ্চাশে নেই। উন্মুক্ত (ছেলেদের) বিভাগে ১৯৭ দলের মধ্যে ১১ রাউন্ড শেষে বাংলাদেশের অবস্থান ৭৮তম, মেয়েদের বিভাগে ১৮৩ দলের মধ্যে অবস্থান ৮১তম।
৫ গ্র্যান্ডমাস্টার ডোম্মারাজু গুকেশ, রমেশবাবু প্রজ্ঞানন্দ, অর্জুন এরিগাইসি, বিদিত গুজরাটি ও পেন্তালা হরিকৃষ্ণকে নিয়ে গড়া ভারতের পুরুষ দল ৩.৫–০.৫ পয়েন্টে স্লোভেনিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
ভারতের নারী দলেও ছিলেন ৫ গ্র্যান্ডমাস্টার—হরিকা দ্রোণাভাল্লি, রমেশবাবু বৈশালী, দিব্যা দেশমুখ, তানিয়া সচদেব ও বন্তিকা আগারওয়াল। ফাইনাল রাউন্ডে দলটি হারিয়ে দেয় আজারবাইজানকে। এ ম্যাচেরও ফল ৩.৫–০.৫।
রমেশবাবু প্রজ্ঞানন্দ ও রমেশবাবু বৈশালী সম্পর্কে ভাই–বোন। দাবা ইতিহাসের প্রথম ভাই–বোন হিসেবে গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন তাঁরা।
ছেলেদের প্রতিযোগিতায় প্রথম আট রাউন্ডেই জেতে ভারত। নবম রাউন্ডে উজবেকিস্তানের সঙ্গে ড্র করে। ঘুরে দাঁড়িয়ে দশম রাউন্ডে যুক্তরাষ্ট্রকে হারিয়ে দেয় তারা। শেষ রাউন্ডে স্লোভেনিয়াকে হারিয়ে পায় সোনার পদক। ভারতের ছেলেরা এবার সম্ভাব্য ২২ পয়েন্টের মধ্যে ২১ পয়েন্ট তুলে নিতে পেরেছেন।
ভারতের ছেলেদের আগেই সোনা জিতে নিয়েছেন মেয়েরা। দশম রাউন্ডে চীনকে হারায় ভারত। সোনার লড়াইয়ে বৈশালী–তানিয়াদের প্রতিপক্ষ ছিল আজারবাইজান। সেখানে তাঁদের কাছে পাত্তাই পাননি আজারবাইজানের মেয়েরা।
ভারতকে সোনা এনে দেওয়ার পর গ্র্যান্ডমাস্টার ডোম্মারাজু গুকেশ বলেছেন, ‘এবার আমি ভেবেছিলাম দলগতভাবে সোনা জিততে যা–ই করতে হোক না কেন, আমি করে দেখাব। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স নিয়ে আমি খুব বেশি ভাবিনি। আমি শুধু দলকে জেতাতে চেয়েছিলাম।’
২০২৬ সালে ৪৬তম দাবা অলিম্পিয়াড হবে উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দে।