ঘরের মাঠে প্রথমার্ধেই পাঁচ গোল করে বসে আর্সেনাল। সেখানেই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যায় অনেকটা। দ্বিতীয়ার্ধে দেখার বিষয় ছিল আর্সেনাল গোল আর কতগুলো করে না লঁস গোল ব্যবধান কমাতে পারে। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আর্সেনাল মাত্র গোল করে একটি। তাতেই ম্যাচ শেষ হয় ৬-০ গোলের বড় ব্যবধানে। আরেক ম্যাচে, গ্যলাতাসারাইয়ের বিপক্ষে ৩-৩ গোলে ড্র করেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।
ঘরের মাঠে ড্র করলেই সুপার সিক্সটিন নিশ্চিত হয়ে যাবে আর্সেনালের। তেবে আর্সেনালের সামনে ছিল প্রতিশোধের মিশন। ফরাসি ক্লাব লঁসের মাঠে প্রথম রাউন্ডে ২-১ গোলে হেরে এসেছিল গানাররা। কিন্তু দ্বিতীয়
লেগে নিজেদের মাঠে ধলটাকে নিয়ে নিয়মিত ছেলে খেলাই করেছে তারা। প্রথমার্ধেই তারা সফরকারীদের বিপক্ষে পাঁচ গোল করে বসেন। এর ফলে নতুন ইতিহাস গড়েছেন মিকেল আরতেতার দল। চ্যাম্পিয়নস লিগ ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে ম্যাচের প্রথমার্ধেই গোল করেছেন আর্সেনালের পাঁচজন খেলোয়াড়। কোনো ইংলিশ ক্লাবের ম্যাচের প্রথমার্ধে ৫ গোলে এগিয়ে থাকার ঘটনাও এটিই প্রথম।
প্রধমার্ধের মতো অবশ্য তেমন গোল করতে পারেনি আর্সেনাল দ্বিতয়িার্ধে। বাকি ৪৫ মিনিটে তারা করেন ১ গোল। ফলে ৬-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে গানাররা।
এমিরেটসের ম্যাচটিতে আর্সেনালকে প্রথম গোলের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৩তম মিনিট পর্যন্ত। গ্যাব্রিয়েল জেসুসের বাড়ানো বলেোল করেন কাই হাভার্টজ। এরপর আরও ১৩ মিনিটে তিন গোল করে বসেন আর্সেনাল। ম্যাচের ২১ মিনিটে বুকায়ো সাকার সহায়তায় জেসুস, ২৩ মিনিটে গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেলির সহায়তা সাকা আর ২৭ মিনিটে তাকিহিরো তোমিয়াসুর সহায়তায় মার্তিনেলি গোল করেন।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে তোমিয়াসুর দারুণ ক্রস থেকে বল নিয়ে আর্সেনালকে পঞ্চম গোল এনে দেন অধিনায়ক মার্টিন ওডেগার্ড। দ্বিতীয়ার্ধে ৮৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে আর্সেনালের ষষ্ঠ গোলটি করেন জর্গিনহো।
অন্যদিকে, প্রতিপক্ষের মাঠে খেলতে নেমে ১১ মিনিটেই নিস্তব্ধতা নামিয়ে আনেন আলেহান্দ্রো গারনাচো। ১৯ বছর বয়সী এই তরুণের গোলে শুরুতেই লিড পেয়ে যায় সফরকারীরা। ১৮তম মিনিটে লিড দ্বিগুণ করেন ব্রুনো ফার্নান্দেজ।
২০ মিনিটের আগেই ২ গোল করে লিড নেয়ার পর বেশিক্ষণ স্বস্তিতে থাকতে পারেনি ম্যানইউ। ২৮ মিনিটে দুর্দান্ত এক ফ্রি-কিক থেকে গোল করে ব্যবধান কমান হাকিম জিয়েশ। প্রথমার্ধে এরপর আর গোলের দেখা পায়নি কোনো দলই।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও দাপট ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের। ৫৫তম মিনিটে স্কট ম্যাকটমিনের গোলে স্কোরলাইন ৩-১ করে টেন হাগের দল। তবে গোলকিপার আন্দ্রে ওনানার এক ভুলে সবকিছু শেষ হয়ে যায়।
ম্যাচের ৬২ মিনিটে প্রথমার্ধের মতো একই জায়গায় ফ্রি কিক পায় গালাতাসারাই। এবারও জিয়েশ নেন প্রায় একই শট। বল নাগালেই ছিল ওনানার। কিন্তু বল নিয়ন্ত্রণে নিতে গিয়ে উল্টো নিজের জালেই পাঠিয়ে দেন তিনি।
ঘরের মাঠে ব্যবধান নাগালে আসার পর উজ্জীবিত ফুটবল খেলে গালাতাসারাই। একের পর এক আক্রমণে প্রতিপক্ষের রক্ষণকে ব্যস্ত করে তোলে স্বাগতিকরা। আর তাতেই মেলে ফল। ৭১ মিনিটে জিয়েশের বাড়ানো বল দারুণ দক্ষতায় দ্রুত নাগালে নিয়ে ডান পায়ের জোরালো শটে জালে জড়ান আকতারকোগলু।
ম্যাচের শেষদিকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। তবে বাকি সময়টা আর জালের দেখা পায়নি কোনো দলই। ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে।
এই ড্রয়ে ৫ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের তলানিতে এখন ম্যানইউ। তবে তাদের আশা এখনও শেষ হয়ে যায়নি। শেষ ষোলোর টিকিট পেতে শেষ ম্যাচে জয় পাওয়া ছাড়াও অন্য দলগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে তাদের।