ইউরোপের তারকা ফুটবলারদের দলে টানতে সৌদি ক্লাবগুলো খেলোয়াড়দের যেকোনো শর্তই মেনে নিচ্ছেন। চলতি সপ্তাহেই সৌদি ক্লাব আল হিলালে যোগ দিয়েছেন নেইমার। সেখানে তার বার্ষিক বেতন ১০ কোটি ইউরো। তবে বেতনে পাশাপাশি ক্লাবটির কাছে কিছু রাজকীয় সুযোগ সুবিধাও দাবি করেন। তার সেইসব আবদারও মিটিয়েছে সৌদি ক্লাবটি।
নেইমারেরর এই সুবিধার মধ্যে থাকছে ২৫ রুমের রাজকীয় বাড়ি, বিলাসবহুল সব গাড়ি আর ব্যক্তিগত বিমান। তার বাড়ির বেশ কয়জন কর্মচারী, ছুটি কাটানোর খরচ রেস্টুডেন্ট বিল আরও অনেক আবদার নেইমারের তালিকায় রয়েছে। তার এইসব সুযোগ-সুবিধা নিয়ে একটা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ‘দ্য সান’।
ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড প্রতিবছর আল হিলালের কাছ থেকে ১০ কোটি ইউরো বেতন পাবেন। তার এই বেতনের থেকে অনেক বেশি বেতনে সৌদি ক্লাব গিয়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, করিম বেনজেমারা। আল নাসরে রোনালদোর বার্ষিক বেতন ২০ কোটি ইউরো। অন্যদিকে বেনজেমা আল ইত্তিহাদ থেকে তিন বছরে পাবেন ৬০ কোটি ইউরো। অর্থাৎ এই দুই তারকা নেইমারের চেয়ে বেশি বেতন পাবেন। কিন্তু ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড বেতনের চেয়ে বেছে নিয়েছেন বেশি সুযোগ-সুবিধা।
নেইমারের সুযোগ-সুবিধার মধ্যে অন্যতম ২৫ কক্ষের রাজকীয় বাড়ি। যে বাড়িতে থাকতে হবে সুইমিং পুল, আয়তন হতে হবে ৪০০ মিটার। এত বড় বাড়ি পরিষ্কার পরিছন্নতার জন্যও তো প্রয়োজন কর্মচারী। সেটাও চাইতে ভুল করেননি নেইমার। ২৪ ঘণ্টা কাজ করার জন্য ৫ জন কর্মচারী, ব্রাজিল থেকে আনা ব্যক্তিগত রাঁধুনীর জন্য দিতে হবে ১ জন সহকারী, ঘর-বাড়ি পরিষ্কার করার জন্য ২ জন ক্লিনিং অপারেটর দিতে হবে। এ ছাড়া একটা ফ্রিজে নেইমারের পছন্দের পানীয় আকাই জুস রাখতে হবে। আর অতিথিদের জন্য দক্ষিণ আমেরিকান খাবার গুয়ারানা থাকতে হবে সব সময়।
নেইমারের শখের অন্যতম দিক বিলাসবহুল গাড়ি। ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টারের এরই মধ্যে আছে এক্সক্লুসিভ মডেলের সব গাড়ি। এই সব গাড়ি তিনি সৌদিতে নিয়ে যাবেন না। তবে তার বিলাসবহুল গাড়ির চাহিদা পূরণ করবে বর্তমান ক্লাব। সাবেক বার্সা ফুটবলারের জন্য ৩টি স্পোর্টস কারসহ ৮টি গাড়ি প্রস্তুত রেখেছে আল হিলাল। গাড়িগুলো রাখার গ্যারেজসহ একজন চালক দিতে হবে নেইমারকে। দ্য সান জানায়, স্পোর্টস কারগুলোর প্রতিটির দাম ৫ লাখ ইউরোর ওপরে।
সাবেক পিএসজি ফরোয়ার্ডের ছুটি কাটানো ঘুরাফেরা করার সব খরচ বহন করতে হবে সৌদি ক্লাবটিকে। তিনি কোথাও ঘুরতে গেলে হোটেলে-রেস্তোরাঁয় থাকা খাওয়ার টাকা দিতে হবে আল হিলালকে। এ ছাড়া নেইমার ও তার পরিবারের যাতায়াতের ব্যবস্থাও করবে আল হিলাল। সব সময় একটি ব্যক্তিগত বিমান থাকবে, যাতে যখন তখন নেইমার ও তার পরিবার তা ব্যবহার করতে পারে।
নেইমার যদি সৌদি আরবের ভেতরে ঘোরাঘুরির সময় তার সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো কিছু পোস্ট করেন, তাহলেও টাকা পাবেন। দেশটির পর্যটনকে তার সোশ্যাল মিডিয়তে তুলে ধরার জন্য প্রতি পোস্টের জন্য আল হিলালকে গুনতে হবে ৫ লাখ ইউরো। এর মধ্যে আরও একটি শর্ত রয়েছে। প্রেমিকা ব্রুনো বিয়ানকারর্দিরকে নিয়ে সৌদিতে থাকতে চান নেইমার। সৌদিতে বিয়ে ছাড়া নারী-পুরুষ একসঙ্গে তাকতে পারেন না। কিন্তু সাবেক পিএসজি তারকার এই শর্তও মেনে নিয়েছে সৌদি ক্লাবটি।