২০২৬ বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্রে। এই আসরে বিশ্বকাপের ধরণ পাল্টে যাচ্ছে। ৩২ দলের বদলে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপে খেলবে ৪৮ দল। এই বিশ্বকাপকে সামনে রেখে নিজেদের বিশ্বমঞ্চের মূল পর্বে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেক দেশের বাইছাইপর্বের খেলা শুরু হয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের মিশন শুরু হবে বাংলাদেশের। লাল সবুজের প্রতিনিধিদের প্রতিপক্ষ মালদ্বীপ। বাংলাদেশ সময় ৫ টায় মালদ্বীপের আন্তর্জাতিক ফুটবল স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে। মালদ্বীপের মাটিতে বাংলাদেশ তাদেরকে কখনোই হারাতে পারেনি। যেটা কখনো হয়নি সেটা কি এবার পারবে কোচ হাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যরা। ম্যাচের আগে দুই দলের পরিসংখ্যান একটু দেখে নিই।
এই ম্যাচে মাঠে নামার আগে বাংলাদেশ দলে আসে দুঃসংবাদ। দ্বীপ রাষ্ট্রটির বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রধান কোচ হাভিয়ের কাবরেরা দলে পাচ্ছেন না মোরসালিন, জিকো, তপুদের মতো দেশের তারকা ফুটবলারদের। মদকাণ্ডের ঘটনায় এই ম্যাচে নেই জাতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ চার ফুটবলার- আনিসুর রহমান জিকো, তপু বর্মণ, মোরসালিন ও রিমন।
গত মাসে এএফসি কাপের ম্যাচ শেষে মালদ্বীপ থেকে ফেরার পথে ব্যাগে করে মদ এনেছিলেন অভিযুক্ত পাঁচ ফুটবলার। মালদ্বীপের মাজিয়া স্পোর্ট অ্যান্ড রিক্রিয়েশন ক্লাবের বিপক্ষে খেলেছিল বসুন্ধরা কিংস। ১৯ সেপ্টেম্বর ম্যাচ খেলে পরদিন ঢাকায় ফিরেছিল দল। বিমানবন্দরে তাদের কাছে মদ পায় কাস্টমস কর্মকর্তারা। উদ্ধার করা হয় ৬৪টি মদের বতল।
প্রতিপক্ষ মালদ্বীপের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আছে অম্লমধুর স্মৃতি। ম্যাচ জয়ে পরিসংখ্যানের দিক দিয়ে বাংলাদেশে এগিয়ে। দুই দলের ১৬ দেখায় বাংলাদেশের ৭ জয়ের বিপরিতে হারতে হয়েছে ৬ ম্যাচে। আর বাকি তিন ম্যাচ শেষ হয়েছে ড্র’তে থেকে। ২০২১ সাল থেকে দুই দেশ চারবার মুখোমুখি হয়েছে, দুটি করে ম্যাচ জিতেছে দুই দল। শেষবারের দেখায় বাংলাদেশের রয়েছে জয়ের স্মৃতি। চলতি বছরের জুনে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ৩–১ গোলে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। লাল সবুজের প্রতিনিধিদের জন্য বড় চিন্তার কারণ হতে পারে কন্ডিশন। কারণ বাংলাদেশ কখনো মালদ্বীপ গিয়ে তাদের হারাতে পারেনি।
এছাড়াও ১৯৮৫ সালে এই মালদ্বীপকেই ৮-০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশে। যেটা দ্বীপ রাষ্ট্রটির বিপক্ষে সর্বোচ্চ গোলের জয় লাল সবুজ প্রতিনিধিদের। ২০০৩ সালে তাদেরকে ফাইনালে হারিয়েই সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা ঘরে তোলে আরিফ খান জয়রা। তবে সেখানেই শেষ বাংলাদেশ ফুটবলের সোনালী দিন। এরপর পুরো দেড়যুগ অপেক্ষা করতে হয়েছে মালদ্বীপকে হারাতে।
২০১১ সালের দিল্লি সাফে বাংলাদেশকে ৩–১ গোলে হারিয়েছিল মালদ্বীপ। ২০১৫ সালে কেরালা সাফেও মালদ্বীপ জয় পেয়েছিল ৩–১ গোলে। ২০১৬ সালে মালেতে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে ৫-০ গোলের বিশাল পরাজয় বরণ করতে হয় বাংলাদেশকে।
মালদ্বীপের ঘরের মাঠে বাংলাদেশ তাদের কখনোই হারাতে পারেনি। পায়নি সেই সুখস্মৃতি। এবার জয়ের স্বাদটা পাওয়া হয় কিনা সেটা দেখার অপেক্ষায় দেশের কোটি ফুটবল ভক্তরা। তবে দলের গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলারদের ছাড়া এই ম্যাচে বাংলাদেশ ঠিক কতটা সফলতা পাবে, তা নিয়েও রয়েছে সংশয়।