টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ধুঁকতে ধুঁকতে ৬ উইকেটে করা বাংলাদেশের ১৫৩ রান ৫ উইকেট ও ৩ বল হাতে রেখেই টপকে গেল যুক্তরাষ্ট্র। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে নেমে দলটি গড়ে ফেলল ইতিহাস। টেস্ট-খেলুড়ে কোনো দেশের বিপক্ষে এটি তাদের মাত্র দ্বিতীয় জয়। এর আগে একমাত্র জয়টি এসেছিল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে।
কোরি অ্যান্ডারসনকে ক্রিকেটপ্রেমী মাত্রই চেনেন। শহীদ আফ্রিদির রেকর্ড ভেঙে একসময় ওয়ানডেতে দ্রুততম সেঞ্চুরি করেছিলেন (৩৬ বলে), পরে অবশ্য এবি ডি ভিলিয়ার্স (৩১ বলে) সে রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন। নিউজিল্যান্ডের হয়ে ৩১ টি-টোয়েন্টিতে প্রায় ১৪০ স্ট্রাইকরেটও অ্যান্ডারসনকে চেনায়।
এর বাইরে যুক্তরাষ্ট্রের আর কাকে চেনেন? সৌরভ নেত্রভালকার আর হারমিত সিং ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলেছেন, আন্দ্রিস গৌস দক্ষিণ আফ্রিকার অনূর্ধ্ব-১৯ দলে। এখানে-সেখানে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার কারণে দু-একটি নাম আপনার চেনা থাকতে পারে।
এই যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষেই মঙ্গলবার প্রথমবার খেলতে নেমে ৫ উইকেটে হেরে গেল বাংলাদেশ! ব্যাটিংয়ে টপ অর্ডারের চিরায়ত ব্যর্থতার পর সেই ঘুরেফিরে ১৫০-১৬০-এর ঘরে আটকে যে এ যুগের টি-টোয়েন্টিতে কিছু হয় না, সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে মঙ্গলবার (২১ মে) বাংলাদেশকে সেটাই শিখিয়ে দিয়ে গেল ‘নবীন’ যুক্তরাষ্ট্র। ২৫ বলে ৩৪ রান করা অ্যান্ডারসনের চেয়ে বাংলাদেশকে টি-টোয়েন্টিটা বেশি শিখিয়েছেন হারমিত সিং (১৩ বলে ৩৩)।
বাংলাদেশের ১৫৩ রানের জবাবে শুরুতেই অধিনায়ক মনাঙ্ককে হারালেও দ্বিতীয় উইকেটে স্টিভেন টেইলর (২৮) ও গুসের (২৩) গড়া ৩৮ রানের জুটিতে ইনিংসের মাঝপথে যুক্তরাষ্ট্র ছিল বাংলাদেশের চেয়েও ভালো অবস্থানে।
এরপর মোস্তাফিজের দুই উইকেটের সঙ্গে রিশাদের এক উইকেটে ১৭ বলের মধ্যেই তিন উইকেট হারিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কিছুটা পথ হারায়। ১৫তম ওভারে দলকে ৯৪ রানে রেখে আউট হন নিতিশ কুমারও।
কিন্তু এরপর বাংলাদেশকে ভুগিয়েছেন হারমিত ও অ্যান্ডারসন। হারমিত তো ১৭তম ওভারের শেষ দুই বলে মোস্তাফিজকে দুই ছক্কা মারার পর ১৮তম ওভারে শরীফুলকে এক ছক্কার পর মেরেছেন এক চার। ১৮তম ওভার শেষে সমীকরণ দাঁড়াল ১২ বলে ২৪ রান দরকার, ক্রিজে ভয়ংকর হয়ে ওঠা হারমিতের সঙ্গে সব সময়ের ভয়ংকর অ্যান্ডারসন।
সেই অ্যান্ডারসনই শেষে এসে খেল দেখালেন। মোস্তাফিজ ১৯তম ওভারে দুই ওয়াইডসহ প্রথম চার বলেই দিলেন ৮ রান, পঞ্চম বলে বিশাল ছক্কা মারলেন অ্যান্ডারসন। ওভারের শেষ বলে সিঙ্গেল নিয়ে স্ট্রাইক ধরে রাখা অ্যান্ডারসনের সামনে শেষ ওভারে বাংলাদেশ আনল মাহমুদউল্লাহকে।
সমীকরণ তখন ৬ বলে ৯ রানের, স্ট্রাইকে অ্যান্ডারসন, অনুমিত ফলই দেখা গেল। প্রথম বলেই মাহমুদউল্লাহকে বিশাল ছক্কা মেরে সংশয় দূর করে দিলেন অ্যান্ডারসন, দ্বিতীয় বলে নিলেন সিঙ্গেল। তৃতীয় বলে চার মেরে বাংলাদেশকে প্রাপ্য হার উপহার দিলেন হারমিত!