মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চলছে বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি ক্যাম্প। তার মাঝেই মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) স্টেডিয়ামে আনা হয় আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের ট্রফি। অনুশীলনের ফাঁকে বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে মাঠে আসেন বাংলাদেশ দলের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। এবারের বিশ্বকাপের আগে চারটি ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা আছে বাংলাদেশ দলের সাবেক এই অধিনায়কের। মুশফিক জানালেন, আগের সব বিশ্বকাপের চেয়ে এবার আরও ভালো করবে বাংলাদেশ দল।
মঙ্গলবার সকাল পৌঁনে ১০টায় মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপের ট্রফি উন্মুক্ত করা হয়। সেখানে ট্রফির সঙ্গে ছবি তোলার সুযোগ পান ক্রিকেটার, বিসিবি পরিচালক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, ক্রিকেট সংগঠক ও ক্রীড়া সাংবাদিকেরা।
আনুষ্ঠানিকতা শেষে মুশফিক বলেন, “অভিজ্ঞতা অবশ্যই বড় একটি বিষয়। তবে কাগজে-কলমে যতই ভালো হই না কেন, নির্দিষ্ট দিনে যারা ভালো খেলবে তারাই জিতবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় যে, আমি অনেক ভাগ্যবান, শেষের ৪টি বিশ্বকাপ খেলেছি। এবারও যদি খেলার সুযোগ পেয়ে থাকি, তাহলে অবশ্যই চাইবো, গত চারটা বিশ্বকাপ যেমন ফল পেয়েছি, তার চেয়ে যেন অনেক অনেক ভালো করতে পারি।”
তিনি আরও বলেন, “ আমাদের সেই শক্তিমত্তা আছে, সেই বিশ্বাসটা আছে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে নির্দিষ্ট দিনে কত ভালো শুরু করতে পারি। মনে হয়, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে ভালোভাবে শুরু করা। ওয়ানডেতে আমরা যেহেতু অভিজ্ঞ দল এবং গত ৪-৫ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে খেলছি। অবশ্যই আশা করা যায় যে, স্পেশাল কোনো ফল করবো। ”
বাংলাদেশ ওয়ানডেতে এখন বেশ পরিণত দল। তারা এই ফর্মেটে ভালোও করছে বেশকিছু দিন ধরে। তামিম, সাকিব, মুশিদের সঙ্গে তরুণ শান্ত, হৃদয়রা পারর্ফম করছে। শান্ত, হৃদয় যুব বিশ্বকাপ ট্রফি জেতার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাদের সামনে এখন বড় মঞ্চে নিজেদের প্রমাণের সুযোগ বলে মনে করেন মুশি।
তরুণদের নিয়ে মুশফিক বলেন, “আমার মনে হয়, এটা অবশ্যই অনেক বড় একটা সুযোগ তাদের জন্য। কারণ তারা গত যে কয়টা বছর খেলেছে, এরকম বড় কোনো ইভেন্টে খেলেনি। এই একটা মঞ্চ, যেখানে তারা আরও ভালো পারফরম্যান্স করতে পারে। তারা যদি এই পারফরম্যান্স ধরে রাখতে পারে, ইনশাল্লাহ এবার আমাদের রেজাল্ট অনেক ভালো হবে। ”
ট্রফি ফটোশ্যুটের সময় মিরপুরে পেসার তাসকিনও ছিলেন। ফটোশ্যুট শেষে তার কন্ঠে শোনা যায় পেসারদের নিয়ে আত্মবিশ্বাসের কথা। কঠোর পরিশ্রম করে পেস ইউনিটটা আরও শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে চান।
তিনি বলেন, “আসলে এটা শুনতে খুব আনন্দের যে, আমাদের পেস বোলাররা আগের চেয়ে ভালো করছে এবং এই পেস বোলারদের উন্নতির জন্য আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি। সামনে আরও উন্নতির লক্ষ্যে কষ্ট করে যাচ্ছি যেন ভালো কিছু করতে পারি। সামনের বিশ্বকাপেও আমরা খুব আশাবাদী যে ভালো কিছু হবে, ইনশাল্লাহ। ”
দলের স্পিনারদের প্রতিনিধি হয়ে কথা বলেন স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথ। এই লঙ্কান আশাবাদী সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজদের নিয়ে। এশিয়াতে বিশ্বকাপ মানেই স্পিনাররা একটু বেশি সুবিধা পাবেন। হেরাথ মনে করেন স্পিনারই ট্রাম কার্ড হবেন টাইগারদের জন্য। তাই তিনি শিষ্যদের ওপরে আস্থা রাখছেন বিশ্বকাপ ও এশিয়াকাপে।
তিনি বলেন, “বিশ্বকাপে স্পিনাররা বড় প্রভাব ফেলবে। সাকিব, মেহেদির সঙ্গে আরও কিছু স্পিনার থাকবে স্কোয়াডে। আমি নিশ্চিত, তারা তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন। যে কোনো পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার টেকনিক্যাল ও ট্যাকটিক্যাল সামর্থ্য তাদের আছে। এসব নিয়েই এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের আগে আমাদের অনুশীলন ক্যাম্প চলবে। আমি নিশ্চিত আগামী কয়েক সপ্তাহে ক্যাম্পটি দারুণভাবে এগোবে। ”
এ সময় তিনি আরও যোগ করেন, “ সব কিছু মূলত পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে। কে প্রথম পাওয়ার প্লেতে বোলিং করতে পারে, কে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে বোলিং করতে পারে। সেদিক থেকে আমার মনে হয়, সব স্পিনারই বিশ্বকাপে বড় প্রভাব রাখবে। ”
আগামী ৫ অক্টোবর ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ দিয়ে ভারত বিশ্বকাপের পর্দা উঠবে। এর দুদিন পর (৭ অক্টোবর) আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করবে বাংলাদেশ। নিজেদের ম্যাচগুলো সাকিব-তামিমরা ছয়টি ভেন্যুতে খেলবেন। ৯ ম্যাচের মধ্যে দুইটি করে ম্যাচ চলবে কলকাতা, ধর্মশালা ও পুনেতে। এছাড়া একটি করে ম্যাচ হবে মুম্বাই, চেন্নাই ও দিল্লিতে।