ক্রিকেট ইতিহাসে ৬ বলে ৬ ছক্কা হাঁকিয়েছেন অনেক ব্যাটারই। তবে কোনো বোলার ৬ বলে ৬ ব্যাটারকে আউট করেছেন এমন ইতিহাসের সাক্ষী হয়নি ক্রিকেট বিশ্ব। এবার সেই ঘটনায় ঘটে গেল অস্ট্রেলিয়ার গোল্ডকোস্ট প্রিমিয়ার লিগের তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটে। ম্যাচের শেষ ওভারে ৬ উইকেট নিয়ে ক্রিকেট বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে বোলার গ্যারেথ মরগান দলকে জিতে দেন।
ক্যারারা কমিনিউটি সেন্টার মাঠে সার্ফার্স প্যারাডাইসের বিপক্ষে মুখোমুখি হয় মুদগিরাবা নিরাং। এই ম্যাচে মুদগিরাবা আগে ব্যাট করে ৪০ ওভারে তোলে ১৭৮ রান। জবাবে সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে জয়ের লক্ষ্যেই ছিল সার্ফার্স। ইনিংসের শেষ ওভারে তাদের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৫ রান আর হাতে ছিল ৬ উইকেট। এমন অবস্থায় এসে সার্ফার্স হেরে যাবে সেটা হয়ত কেউ কল্পনাতেও ভাবেননি। কিন্তু অধিনায়ক মরগান ভাবছিলেন ভিন্ন কিছু। এই জন্য বোল তুলে নেন নিজের হাতেই।
প্রথম চার বলে প্রত্যেককে ক্যাচ আউটে পরিণত করেন মরগান। পরের দুই বলের দুটিতেই বোল্ড করে দলের জয় নিশ্চিত করেন প্যারাডাইসের অধিনায়ক। ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি লোকাল কাউন্সিলে কাজ করা মরগান বলেন, “এটা অদ্ভুত, ওভারের শুরুতে আম্পায়ার আমাকে বলেছিল যে, এই ম্যাচ জিততে হলে আমাকে হ্যাটট্রিক বা অন্য কিছু করতে হবে। যখন এটা ঘটল (৬ বলে ৬ উইকেট), সে কেবল আমার দিকে তাকিয়েই থাকল।”
এক ওভারের জয়ের জন্য ৫ রান হাতে ৬ উইকেট এমন ম্যাচে যেকোনো বোলারই বোলিং করতে আসবে নিশ্চিত হার মেনে নিয়ে। ঠিক তেমনি ভাবনা নিয়ে বল করতে এসেছিলেন মরগান। প্যারাডাইস অধিনায়ক বলেন, “এই বছর সত্যিই ভালো খেলছি আমরা এবং শেষ ওভারে বল করার জন্য এক তরুণকে বল দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু আমি মনে করলাম যে আমিই বল করবো- বাউন্ডারি মারলে আমাকেই মারুক, সেই ছোট ছেলেটিকে এমন অবস্থায় আনা দরকার নেই। আমার মনে আছে হ্যাটট্রিক নেওয়ার পর ভাবছিলাম যে এখন আর ম্যাচ হারতে চাই। যখন শেষ বলটা স্টাম্পে লাগল তখন নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আমি কখনো এমন কিছু দেখিনি।”
পেশাদার ক্রিকেটে এক ওভারে সর্বোচ্চ পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি আছে মাত্র তিনজন বোলারের। নিউজিল্যান্ডের নিল ওয়্যাগনার, বাংলাদেশের আল-আমিন হোসেন ও ভারতের অভিমন্যু মিথুন। ২০১৩ সালে বিজয় দিবস টি-টোয়েন্টি কাপে আবাহনীর বিপক্ষে ইনিংসের শেষ ওভারে পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন আল-আমিন। সেই ম্যাচে ১৭ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন ইউসিবি-বিসিবি একাদশের এই পেসার।