শুরুতে তাসকিনের তোপ, পাওয়ার প্লে শেষে সাকিব-হাসানের বড় মাছ শিকার। এরপর মিডল ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজের স্পিন জালে ফেঁসে একেবারে লেজেগোবরে অবস্থা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের। এই ম্যাচেই একাদশে ফেরা মিরাজ মাত্র ১২ রান দিয়ে নিয়েছেন চারটি উইকেট।
রোববার (১২ মার্চ) টাইগারদের বোলিং তোপে মাত্র ১১৭ রানে গুটিয়ে গেছে ইংল্যান্ড। এই রান টপকাতে পারলেই প্রথমবারের মতো ইংলিশদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের ইতিহাস গড়বে টাইগাররা।
ইনিংসের প্রথম ওভার করতে এসেই ১০ রান হজম করেন তাসকিন আহমেদ। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে মোস্তাফিজের দারুণ এক ডেলিভারে ইংলিশ ওপেনার সল্টের ব্যাট স্পর্শ করে প্রথম স্লিপের পাশ দিয়ে চলে বাউন্ডারিতে। দারুণ বোলিং করার ফিজের এই ওভার থেকে আসে মাত্র ছয় রান।
ইনিংসের তৃতীয় ওভারে প্রথম উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। তাসকিনের বল উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন ইংলিশ ওপেনার ডেভিড মালান। কিন্তু সেটা এজড হয়ে থার্ডম্যানে উড়ে গেলে তালুবন্দি করেন হাসান মাহমুদ। ফেরারা আগে মাত্র পাঁচ রান করেন তিনি।
এক বলের ব্যবধানে তিন নম্বরে নামা মঈন আলিকে ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। তাসকিনের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে মঈনের ব্যাট স্পর্শ করে প্রথম স্লিপে গেলেও লাফিয়ে সেটার নাগাল পাননি নাজমুল হোসেন শান্ত।
ইনিংসের পঞ্চম ওভারে বল হাতে মাত্র আট রান দেন তাসকিন। একটি চার হজম করলেও পুরো ওভারে মঈন ও সল্টকে রীতিমতো অস্বস্তিতে রেখেছিলেন তিনি।
অন্যরা অস্বস্তিতে থাকলেও আরেক প্রান্তে রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করছেন সল্ট। পাওয়ার প্লের শেষ ওভার করতে নাসুম আহমেদ হজম করেছেন ১৩ রান। পাওয়ার প্লে শেষে ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে জমা হয়েছে ৫০ রান।
তবে পাওয়ার প্লে শেষে বল হাতে নিয়েই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা সল্টকে ফিরিয়েছেন সাকিব। ফেরার আগে ১৯ বলে ২৫ রান করেছেন সল্ট। এরপর ইনিংসের অষ্টম ওভারে বল হাতে নিয়ে সবচেয়ে বড় মাছটাই শিকার করেছেন হাসান মাহমুদ। দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলারের উইকেট উপড়ে ফেলেছেন এই ডানহাতি পেসার।
পরের ওভারে আবারও উইকেট শিকারের আনন্দে মাতে টাইগাররা। এই ম্যাচে একাদশে ফেরা স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ ফেরান মঈন আলীকে। শামিম হোসেনের ক্যাচ হয়ে ফেরার আগে মঈনের ব্যাট থেকে আসে ১৫ রান। পাওয়ার প্লেতে ৫০ রান করা ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে পরের চার ওভারে যোগ হয় মাত্র ১২ রান।
৫৭ রানে চার উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া দলকে টেনে তোলার দায়িত্ব নেন ডাকেট ও কারেন। দুজনে মিলে ধীরে ধীরে চাপ সামাল দেওয়ার সাথে রানের চাকাও সচল রাখেন।
ইনিংসের ১৫তম ওভারে এই জুটি ভাঙেন মিরাজ। ডাউন দ্য উইকেটে গিয়ে মারতে চেয়েছিলেন কারেন, মিস করলে বিদ্যুৎ গতিতে স্টাম্পিং করে উল্লাসে মাতেন টাইগার উইকেটরক্ষক লিটন কুমার দাস। দলীয় ৯১ রানে কারেন ফিরলে ভাঙে তাদের ৩৪ রানের প্রতিরোধ। কারেনের ব্যাট থেকে আসে ১৬ বলে ১২ রান।
এক বলের ব্যবধানে ক্রিস ওকসকেও স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন মিরাজ। ওকসও এগিয়ে এসে মারতে গেলে বল পায়ে লেগে পিছনে চলে যায়। প্রথম দফায় মিস করলেও দ্রুত সেটা ধরে উইকেট ভেঙে দেন লিটন।
ইনিংসের ১৭তম ওভারে বল হাতে নিয়ে আবারও উইকেট শিকারের উল্লাসে মাতেন মিরাজ। এবার তার শিকার ক্রিস জর্ডান। একাদশে ফেরার ম্যাচে চার ওভারে ১২ রান দিয়ে চার উইকেট শিকার করেন খুলনার এই ক্রিকেটার।
শেষদিকে সংগ্রহ বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন ডাকেট ও অভিষিক্ত রেহান আহমেদ। মোস্তাফিজুর রহমানের করা ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে শান্তর দুর্দান্ত ক্যাচ হয়ে ফেরেন ডাকেট। ফেরার আগে ২৮ রান করেন তিনি। শেষ তিন বল দুই উইকেট হারানোর পর ১১৭ রানে অলআউট হয় ইংলিশরা।