পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ হেরে সিরিজ শুরু করে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে সুপার ওভারে রোমাঞ্চকর জয় তুলে নেয় নিগার সুলতানার জ্যোতির দল। সুপার ওভারের শেষ বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করে টাইগ্রেস অধিনায়ক জ্যোতি।
বাংলাদেশ আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ওভার শেষে ৯ উইকেটে ১৬৯ রান সংগ্রহ করে। জবাবে পাকিস্তান নারী ক্রিকেট দল নির্ধারিত ওভারের এক বল বাকি থাকতে অল-আউট হয়ে যায় ১৬৯ রানে। এরপর সুপার ওভারে পাকিস্তান আগে ব্যাট করে রান ৭ রান তোলে। সুপার ওভারে ৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে এক উইকেট হারিয়ে জ্যোতি শেষ বলে চার মেরে দলের জয় নিশ্চিত করে।
বাংলাদেশের দেওয়া মাঝারি রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দারুণ শুরু করে পাকিস্তানের দুই ওপেনার শাদাব শামাস ও সিদরা আমিন। এই দুই জন্য ১০০ বলে ৪১ রানের জুটি গড়েন। ওপেনার সিদরা ২২ করে ফাহিমা খাতুনের শিকার হলে এই জুটি ভাঙে। এই ওপেনারের বিদায়ের পর বিসমাহ মারুফ রানের খাতা খোলার আগেই প্যাভিলিয়ানে ফিরে যান।
এরপর পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ২৯ রান করে বিদায় নেন শাদাব। দলটার হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৭ রান আসে পাকিস্তান অধিনায়ক নিদা দারের ব্যাট থেকে। এই ম্যাচে রোমাঞ্চ শুরু হয় দ্বিতীয় ইনিংসের ৪৭তম ওভারে ২২ রানে থাকা নিজা আলভি নাহিদার আকতারের শিকার হলে। তখন পাকিস্তানের প্রয়োজন ১৮ বলে ১৭ রান। আর বাংলাদেশের প্রয়োজন ৩ উইকেটে। এর পরের দুই ওভারে টাইগ্রেস বোলাররা দুই উইকেট নিয়ে ম্যাচ আরও রোমাঞ্চকর করে তোলেন।
শেষ ওভারে পাকিস্তান নারী দলের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৩ রান। তাদের হাতে ছিল এক উইকেট। এমন সমীকরণের সামনে ফাহিমা খাতুনের ওপর আস্থা রাখেন নিগার সুলতানা জ্যোতি। এই লেগ স্পিনার ডট দিয়ে ওভার শুরু করেন। দ্বিতীয় বলে দেন এক রান। এক বল ডট দিয়ে আবারও এক রান নেয় পাকিস্তান। শেষ ২ বলে যখন ১ রান প্রয়োজন তখন রান আউট হয়েছেন নাশারা সান্ধু। ফলে ম্যাচটি সুপার ওভারে গড়ায়।
সুপার ওভারে শুরুতে ব্যাটিং করে পাকিস্তানের মেয়েরা। নাহিদার করা ওভারের প্রথম ৫ বলে ৭ রান তুলতেই ২ উইকেট হারায় পাকিস্তান। ফলে ৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বাউন্ডারি দিয়ে শুরু করেন সুবহানা মুস্তারি। কিন্তু পঞ্চম বলে তিনি আউট হওয়ার পর শেষ বলে বাংলাদেশের জয়ের জন্য প্রয়োজন হয় ২ রান। এমন সমীকরণ মাথায় নিয়ে ব্যাট করতে নেমে লং অন দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন জ্যোতি। এই জয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল বাংলাদেশ।
এর আগে, মিরপুর শের-ই বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগ্রেস অধিনায়ক জ্যোতি। শুরুতে দেখেশুনেই খেলছিলেন টাইগ্রেস দুই ওপেনার মুর্শিদা খাতুন ও ফারজানা হক। তবে দ্রুতই ব্রেকথ্রু পায় সফরকারীরা। দলীয় ২১ রানের মাথায় ১৮ বলে ১২ রান করে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার মুর্শিদা। এরপর ব্যাটিংয়ে এসে সোবহানা মুস্তারি উইকেটে থিতু হতে পারেননি। দলীয় ৪৩ রানের মাথায় এলবিডব্লিউ হয়ে ১৬ রান করে ফেরেন তিনি।
এরপর ফারজানা হকের সঙ্গে জুটি গড়ে ইনিংস এগিয়ে নেন নিগার সুলতানা। ফারজানা ৮৮ বলে ৪০ রানে ফিরলেও একপ্রান্তে আগলে রাখেন টাইগ্রেস অধিনায়ক। অ্যাংঙ্কর রোল প্লে করে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন জ্যোতি। ফাহিমা খাতুনের ১৬ রানের পর আর কোনো ব্যাটার দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি। বাংলাদেশের ৬ ব্যাটার এদিন সিঙ্গেল ডিজিটে আউট হয়েছেন। একপ্রান্ত আগলে রেখে ইনিংস শেষ হওয়ার এক বলে আগে জ্যোতি আউট হন ১০৪ বলে ৩ চারে ৫৪ রান করে। এতেই টাইগ্রেসরা নির্ধারিত ওভার শেষে ১৭০ রানের লক্ষ্যে ছুড়ে দেয় পাকিস্তান নারী দলকে।