শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের স্বর্ণযুগ ছিল কুমার সাঙ্গাকারা, মাহেলা জয়াবর্ধনে, মুত্তিয়া মুরালিধরন, লাছিথ মালিঙ্গা তিলকারত্নে দিলশানদের সময়। কালের পরিক্রমায় এই সব কিংবদন্তি ক্রিকেটাররা অবসর গ্রহণ কারার পর সোনালি অতীত হারিয়েছে লঙ্কান ক্রিকেট। যা আজও ফিরে পায়নি শ্রীলঙ্কা। সময়ের ক্রমবর্ধমানে তাদের ক্রিকেট দিনকে দিন নিম্নমুখী হচ্ছে। বৈশ্বিক টুর্নামেন্টগুলোতে দলের ভরাডুবি ধারাবাহিক। সবশেষ ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ১০ জাতির টুর্নামেন্টে ৯ নম্বরে থেকে আসর শেষ করেছে যার জন্য তারা ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার যোগ্যতা হারিয়েছে।
এতে গেল মাঠের পারফরম্যান্সের চিত্র, মাঠের বাইরেরও ভালো নেই শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট। ভারত বিশ্বকাপে ভরাডুবি সেই সঙ্গে দেড় মাসের মধ্যে রোহিত শর্মা দলের বিপক্ষে ৫০ ও ৫৫ রানে অল আউট হওয়ার কারণে ক্রীড়ামন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে বোর্ডের সকলকে পদত্যাগে বাধ্য করেছিলেন। সেই হস্তক্ষেপ আবার আইসিসির নিয়মের বাইরে। ফলে বোর্ডে দুর্নীতির অভিযোগ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপের কারণ দেখিয়ে লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের (এসএলসির) সদস্যপদ স্থগিত করেছে আইসিসি।
লঙ্কান ক্রিকেটের মাঠ এবং মাঠের বাইরের ব্যর্থতার জন্য দেশটির ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা দায়ী করেছেন এক ভারতীয়কে। রানাতুঙ্গার দাবি, শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট ধ্বংস করতে পাঁয়তারা করেছেন এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) সভাপতি ও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সচিব জয় শাহক। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র পুত্রকে একহাত নিয়েছেন কিংবদন্তী এই ক্রিকেটার। লঙ্কান সাংবাদিক চামুদিতা সামারাবিক্রমাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই দাবি করেছেন রানাতুঙ্গা।
বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়কের দাবি, তার সিংহল ভাষায় দেওয়া এই সাক্ষাৎকার অনুবাদ করে জয় শাহর কাছে পৌঁছানো হলে বাবার (ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ) প্রভাব খাটিয়ে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটকে ধ্বংস করে দেবেন। রানাতুঙ্গা বলেন, “জয় শাহ এমন মানুষ, আপনি যদি এসব কথা ইংরেজিতে অনুবাদ করে প্রকাশ করেন, তাহলে সে ওর বাবার প্রভাব খাটিয়ে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটের সর্বনাশ করে ছাড়বে। শুধু বাবা ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার কারণেই ওর এত ক্ষমতা।”
উদাহরণ হিসেবে ভারতীয় ক্রিকেট কিংবদন্তি সৌরভ গাঙ্গুলির প্রসঙ্গও টেনেছেন রানাতুঙ্গা। বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক বলেন, “শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটকে জয় শাহ নিয়ন্ত্রণ করছে। সে সৌরভ গাঙ্গুলীকে বিসিসিআইয়ের সভাপতি বানিয়েছিল এবং রাজনীতিতে যোগ দিতে বলেছিল। প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় সে গাঙ্গুলীকে বরখাস্তও করেছে।”
কিন্তু লঙ্কান ক্রিকেটে কিভাবে প্রভাব রাখছেন জয় শাহ? এমন প্রশ্ন তোলা হলে জবাবে রানাতুঙ্গা বলেন, “এসএলসির কর্মকর্তা ও জয় শাহর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে বিসিসিআইয়ের ধারণা, ওরা এসএলসিকে চাইলেই পদদলিত ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ভারতের একটা লোক শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। ওর চাপে এসএলসি তছনছ হয়ে যাচ্ছে।”