খেলার আড়ালে যে কত ধরনের খেলা চলতে পারে তার উদাহরণ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। ক্রিকেটের এ সংষ্করণের সিরিজ মানেই ব্যবসার পোয়াবারো। আর তা যদি হয় ভারতের আইপিএল তবে তো কথাই নেই। এবারের আইপিএলের প্রথম সপ্তাহেই ব্যাপক বাণিজ্যের বার্তা এসেছে এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের অফিশিয়াল ডিজিটাল স্ট্রিমিং পার্টনার জিও সিনেমার কাছ থেকে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এই প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপনের জন্য ২৩টি স্পনসর প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে তারা। এই সংখ্যা ভারতে আয়োজিত যেকোনো অনুষ্ঠানের মধ্যে ডিজিটাল স্ট্রিমিংয়ে সর্বোচ্চ।
ভারতের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গত বছর চেয়ে এবারের আইপিএলের ডিজিটাল স্ট্রিমিং থেকে আয়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে জিও সিনেমা। আর আইপিএলের সম্প্রচারেও তারা এনেছে কিছু অভিনবত্ব। এবার আইপিএলে আছে ভোজপুরি, পাঞ্জাবি, মারাঠি ও গুজরাটি ভাষায়ও ম্যাচের ধারাভাষ্য শোনার ব্যবস্থা। মাঠের খেলা সম্প্রচারে আছে ক্যামেরার চমকপ্রদ ব্যবহার। মাল্টি ক্যাম, ফোরকে, হাইপমুড এসব প্রযুক্তির ছোঁয়া এনেছে জিও সিনেমা। প্রতিটি ম্যাচ দেখতে এই ভিডিও স্ট্রিমিং প্লাটফর্মে প্রথম সপ্তাহের ছুটির দিনে দর্শক গড়ে ৫৭ মিনিট ছিলেন, জানিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যম। গতবারের আইপিএলের প্রথম সপ্তাহের চেয়ে তা ৬০ শতাংশ বেশি। জিও সিনেমা ফ্রি স্ট্রিমিং সার্ভিস। আইপিএলের প্রথম সপ্তাহে এই স্ট্রিমিং সার্ভিসে ভিউ হয়েছে রেকর্ড পরিমাণ—৩৭৫ কোটি। প্রথম সপ্তাহ শেষে ছুটির দিনে জিও সিনেমায় ম্যাচ দেখেছেন ১৪৭ কোটি দর্শক। আর নিবন্ধন করে জিও সিনেমা অ্যাপটি ডাউনলোড করা হয়েছে আড়াই কোটিবার। এক দিনে এটা কোনো অ্যাপের সর্বোচ্চ ডাউনলোডেরও রেকর্ড।
জিও সিনেমার মালিক ভারতের মিডিয়া প্রতিষ্ঠান ভায়াকম ১৮। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী অনিল জয়রাজ সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, দর্শক সংখ্যার যে ধারাবাহিকতা আমরা ধরে রাখছি, তা ভারতে খেলাধুলা দেখার ধারা পাল্টে দেওয়ার দৃষ্টান্ত। আমাদের স্পনসররা পুঁজি লগ্নি করে মুনাফা ফেরত পাবেন, এ বিষয়টি নিশ্চিত।
তবে এত টাকার খেলা মাঠের খেলাকে কতটা প্রভাবিত করে এমন প্রশ্ন অসঙ্গত নয়। প্রতিটি ম্যাচের প্রতিটি ক্ষণ নিয়ে উপমহাদেশ জুড়ে জুয়া বাণিজ্য প্রকাশ্যে ঘটছে। এর আগে আইপিএলে পাতানো ম্যাচের অভিযোগ উঠেছিল। তাই খেলার আড়ালে যে খেলা চলে সেদিকে নজর দেওয়ার সময় এসেছে বলে করেন প্রকৃত ক্রিকেটপ্রেমীরা।