এক ভারতীয় খেলোয়াড়ের হাতেই পুরো ভারত দল এবার ধরাশায়ী হলো। মুম্বাই টেস্টে ভারতের বিপক্ষে সফরকারী নিউজিল্যান্ড ২৫ রানে জয়লাভ করে ৩-০ ব্যবধানে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করে। সেটাও আবার এক ভারতীয় খেলোয়াড়ের সৌজন্যে।
রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলিদের উপর তুরুপের তাস হয়ে এলেন অ্যাজাজ প্যাটেল। একাই গ্রাস করলেন ৬ ভারতীয় ব্যাটারকে। শুভমান গিল, বিরাট কোহলি, রিশাভ পান্ত, সরফরাজ খান, রবীন্দ্র জাদেজা ও ওয়াশিংটন সুন্দরকে আউট করলেন নিউজিল্যান্ড স্পিনার।
বাঁহাতি এই কিউই স্পিনারের ঘূর্ণিতে ১২১ রানেই অলআউট হয়ে গেছে ভারত। দুই ইনিংস মিলিয়ে ১১ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হয়েছেন প্যাটেলই।
ভারতের একক কোনো ভেন্যুতে এখন সবচেয়ে সফল বিদেশি বোলার হলেন প্যাটেল। ওয়াংখেড়েতে মাত্র দুই ম্যাচে ২৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি। এর আগে এই ভেন্যুতেই সর্বোচ্চ ২২ উইকেট শিকারের কীর্তি ছিল ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি ক্রিকেটার ইয়ান বোথামের।
প্যাটেল বোথামের রেকর্ড ভাঙেন রবীন্দ্র জাদেজার উইকেট নিয়ে। মুম্বাইয়ে এটি ছিল বাঁহাতি কিউই স্পিনারের ২৩তম উইকেট। এরপর পান্ত ও ওয়াশিংটন সুন্দরকেও প্যাভিলিয়নের পথ দেখান তিনি।
তবে কে এই প্যাটেল? যার কাছে এমন অসহায় আত্মসমর্পণ করলো ভারত? অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি হলো- প্যাটেল কোনো বিদেশি ক্রিকেটার নন। তিনি নিউজিল্যান্ডের নাগরিক বটে, কিন্তু ভারতের হাতে গড়া ছেলে।
প্যাটেলের জন্ম ১৯৮৮ সালের ২১ অক্টোবর মুম্বাইয়ে। গুজরাটি সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে জন্ম তার। বেড়ে উঠেছেন মুম্বাইয়েই। ৮ বছর বয়স হলে পরিবারের সঙ্গে নিউজিল্যান্ডের অভিবাসন গ্রহণ করেন প্যাটেল।
ছেলেবেলায় যে মাটিতে গড়াগড়ি খেয়েছেন বছরের পর বছর, প্যাটেলের চেয়ে সেই মুম্বাইয়ের মাটিকে বেশি বুঝবে কে? ভারতীয়রাও হয়তো এত কাছ থেকে দেখেনি মুম্বাইয়ের মাটিকে।
২০১২ সালে নিউজিল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে যোগ দেন প্যাটেল। সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিকের হয়ে পেশাদার ক্রিকেটে হাতেখড়ি হয় তার। ২০১৮ সালের ৩১ অক্টোবর নিউজিল্যান্ডের জাতীয় দলে অভিষেক হয় বাঁহাতি এই স্পিনারের। নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম ক্রিকেটার হিসেবে জাতীয় দলে জায়গা পান তিনি।
পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু করেন প্যাটেল। একই বছরের ১৬ নভেম্বর পাকিস্তানের বিপক্ষেই টেস্ট অভিষেকের ক্যাপ পরেন তিনি।