সব ক্রিকেট তারকাই মনে হয় ক্যারিয়ারের শেষ সময়টায় জাতীয় দলের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। বাংলাদেশের মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর বেলায় সেটা দেখা গেছে। সাকিব আল হাসানের অবস্থাও সেই দিকেই যাচ্ছে। ভারতের রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলির পরিনতিও যাচ্ছে একই দিকে। পাকিস্তানের বাবর আজমের অবস্থাও সে পথে যাচ্ছে। ইংল্যান্ডের জেমস অ্যান্ডারসন শোনালেন ঠিক ঐ ধরনের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা।
গত ১২ জুলাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা পেসার অ্যান্ডারসন। জাতীয় দলের বহু যুদ্ধ জয়ের নায়ক তিনি। এবার শোনা গেল, তাকে বাধ্য করা হয়েছিল বয়সের অজুহাত দেখিয়ে অবসর নেওয়ার জন্য।
মূলত অভিযোগ ছিল কোচ ব্র্যান্ডন ম্যাককালাম, অধিনায়ক বেন স্টোকস এবং ইসিবির কিছু শীর্ষকর্তার দিকে। সম্প্রতি তার বই ‘ফাইন্ডিং দ্য এজ’-এ অ্যান্ডারসন ম্যানচেস্টারের একটি হোটেলে স্টোকস, ম্যাককালাম এবং ইসিবির ম্যানেজিং ডিরেক্টর রব কী’র সঙ্গে তার সম্ভাব্য অবসর সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ কথোপকথন বর্ণনা করেছেন।
অ্যান্ডারসন লিখেছেন, ‘আমি যখন তাদের দিকে হেঁটে গেলাম, তখন আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছিল। এটি একটি দলের মূল্যায়ন বৈঠক ছিল না, তাই না? প্রতিটি পদক্ষেপের সঙ্গে তাদের চরিত্র ফুটে উঠছিল। ট্রাম যাত্রাটি হঠাৎ করেই একটি আনন্দময় অতীত জীবনের মতো শেষ হয়ে গেছে, বাইরের সূর্য একটি দিগন্তবিহীন নিওন-লাল অন্ধকারে তলিয়ে গেছে।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘‘আমার মাথায় বিভিন্ন সমীকরণ ঘুরছিল এবং আমার হৃদস্পন্দন বেড়ে গেছিল। আমি তাদের সঙ্গে করমর্দন করি। আমি নিজেকে গুডফেলাসে জো পেসির মতো অনুভব করছিলাম। আমার পুরো বিষয়টা বুঝতে অনেকটা সময় লেগে গেছিল। ম্যাককালামের মুখ থেকে কথাগুলো খুব তীক্ষ্ণ শোনাচ্ছিল। সে আমায় বলে, ‘আমরা ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করছি। এটা শোনার পর আমার চারিদিক যেন ঝাপসা হয়ে উঠেছিল।’’
তিনি আরও লিখেছেন, ম্যাককালাম তাকে বলেছিলেন, ‘আমাদের মনে হয় না তুমি ১৮ মাস পরে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলতে পারবে। তাই আমাদের সেই সিরিজের জন্য উপযুক্ত কে হবে তাকে খুঁজে বের করতে হবে এবং এখন সেই সময়টা এসেছে সেই কাজ করার জন্য।’ অ্যান্ডারসন লিখেছেন, ‘এটা কোনও বৈঠক বা আলোচনা ছিল না। এটা আমার কাছে অবসর গ্রহণের স্পষ্ট বার্তা ছিল।’
উল্লেখ্য, জিমি ইংল্যান্ডের হয়ে ১৮৮টি টেস্ট খেলেছেন। উইকেট নিয়েছেন ৭০৪টি, গড় ২৬.৪৫। তার সেরা বোলিং ফিগার ৭/৪২।