ওভালে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে নামেন স্টুয়ার্ট ব্রড। পঞ্চম দিনের শেষ সেশনে এলেক্স ক্যারিকে আউট করে ক্যারিয়ারের শেষ উইকেটটি নেন তিনি। এর মধ্যে দিয়ে টেস্টটিও জিতে নেয় ইংল্যান্ড। আর জয়ের সুখকর অনুভূতি নিয়ে বিদায় নিলেন ব্রড।
এর থেকে ভালো বিদায় হতে পারে না কোনো খেলোয়াড়ের জন্য। ব্যাট হাতে টেস্ট ক্রিকেটে ক্যারিয়ারের শেষ বলে ছক্কা হাঁকান তিনি। যা ইতিহাসে ঘটেছে দ্বিতীয়বার মাত্র। আবার বল হাতেও নিয়েছেন শেষ বলে উইকেট। তাতেই ৪৯ রানের জয় পায় ইংলিশরা। এ জয়ে ২-২ তে শেষ হলে এবারের অ্যাশেজ।
অ্যাশেজে পঞ্চম ম্যাচে দুই দল নানা সমীকরণ মেলাতে মাঠে নামে। ২০০১ সালের পর ইংল্যান্ডের মাটিতে সিরিজ জয়ে স্বপ্ন দেখতে থাকে অজিরা। চতুর্থ ম্যাচ ড্র হওয়ায় অ্যাশেজের ট্রফি অস্ট্রেলিয়ার ঘরেই থেকে যায়। অন্যদিকে ইংলিশদের সিরিজে সমতায় ফিরতে হলে জয়ে কোনো বিকল্প ছিলো না এই ম্যাচে। এরপর ম্যাচ শুরু হওয়ার পর ব্রড অবসর ঘোষণার দিয়ে ম্যাচে রোমাঞ্চ আর বাড়িয়ে দেন।
এই সব সমীকরণের জন্য অ্যাশেজ সিরিজের শেষ ম্যাচে শেষ দিন রোমাঞ্চকর হয়ে ওঠে। থ্রি লায়ন্সদের দেওয়া ৩৮৪ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে থাকা উসমান খাজা ও ডেভিড ওয়ার্নার পঞ্চম দিন শুরু করতে আসেন। আগের দিন অজি দুই ওপেনার জিমি অ্যান্ডারসন, স্টুয়ার্ট ব্রডদের শাসন করেন। খাজা ৬৯ রানে এবং ওয়ার্নার ৫৮ রানে অপরাজিত থেকে চতুর্থ দিন শেষ করেন।
শেষ দিনে অজিদের জয়ের জন্য ২৪৯ রান দরকার ছিলো। এদিন শুরুতে ওয়ার্নারকে ৬০ রানে ফিরিয়ে ব্রেক থ্রু এনে দেন ক্রিস ওকস। এক ওপেনারের বিদায়ের পর ওকসের দ্বিতীয় ওভারেই ফিরে গিয়েছেন খাজা। মারনাস ল্যাবুসানে ৩ নম্বর পজিশনে ব্যাট করতে এসে দ্রুত বিদায় নিয়েছেন ব্যক্তিগত ১৩ রান করে।
স্কোর বোর্ডে ২০ রান যোগ করতেই ৩ উইকেট হারায় প্যাট কামিন্সরা। এরপর স্টিভ স্মিথ ও ট্রাভিস হেড দলের হাল ধরতে জুটি গড়েন। এই জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় সফরকারীরা। লাঞ্চ বিরতির আগের ওভারে মঈন আলীর করা বল স্মিথের গ্লাভসে লেগে জমা হয় লেগ স্লিপে থাকা বেন স্টোকসের হাতে। ইংলিশ অধিনায়ক লাফিয়ে এক হাত দিয়ে ক্যাচ নিয়ে উদযাপন করার সময় তার হাঁটুতে লেগে বল মাটিতে পড়ে যায়। ফিল্ডাররা আউটের আবেদন করলে ফিল্ড আম্পায়ার নট-আউট দেন। স্টোকস রিভিউ নেন। তাতেও লাভ হয়নি। এ যাত্রায় বেঁচে যান এই স্মিথ।
লাঞ্চ বিরতির পরই নামে বৃষ্টি। তাতে ভেসে যায় দ্বিতীয় সেশন। বৃষ্টি থামলে শেষ সেশন নির্ধারিত হয় ৪৭ ওভারে। এই সেশনে এসে জ্বলে ওঠেন মঈন আলী। হেডকে ফিরিয়ে ভাঙেন স্মিথের সঙ্গে দার জুটি। এরপরে ওকসের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন স্মিথও (৫৪)।
মিচেল মার্ককে (৬) দাঁড়াতেই দেননি মঈন। আর মিচেল স্টার্ক রানের খাতা খোলার আগেই ওকসের শিকার হয়ে মাঠ ছাড়েন। মঈন আলীর তৃতীয় শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। তখনও জয় থেকে ১০০ রান দূরে অস্ট্রেলিয়া, হাতে ২ উইকেট। তখন আসলে জয়ের পাল্লা হেলে ছিল ইংল্যান্ডের দিকে। এ সময় প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন এলেক্স ক্যারি।
কিন্তু শেষ দুই উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ারের শেষ অধ্যায়টা সোনালি করে রাখেন ব্রড। প্রথমে টড মার্ফি (১৮) ও শেষে ক্যারিকে (২৮) বিদায় করে দলকে জয় এনে দেন তিনি।