শুরু থেকে বাংলাদেশ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করলেও রানের চাকা ঠিকই সচল রেখেছিলেন দুই ইংলিশ ওপেনার। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে দুই ওপেনারকেই ফেরানোর সুযোগ মিস করে টাইগাররা। নতুন জীবন পেয়ে রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়েছেন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার।
তবে বাটলার ছাড়া আর কোনো ইংলিশ ব্যাটারই এদিন ইনিংস বড় করতে পারেননি। ১৫ ওভারে ১২৬ রান তুললেও শেষদিকে ডেথ ওভারে টাইগার বোলারদের তোপের সামনে স্কোর বড় করতে পারেনি ইংল্যান্ড। শেষ পাঁচ ওভারে ইংলিশদের স্কোরবোর্ডে উঠেছে মাত্র ৩০ রান।
বাটলারের ঝড়ো পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস ও বাকিদের ছোট ছোট ক্যামিওতে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকে ১৫৭ রানের লক্ষ্য দিয়েছে ইংল্যান্ড। বাংলাদেশের হয়ে চার ওভারে ২৬ রান দিয়ে দুই উইকেট নিয়ে সেরা বোলার হাসান মাহমুদ। এছাড়া সমান একটি করে উইকেট নেন নাসুম, সাকিব, মোস্তাফিজ ও তাসকিন।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নাসুম ও তাসকিনের করা প্রথম দুই ওভার থেকে ১৮ রান তুলতে সক্ষম হয় ইংল্যান্ড। তৃতীয় ওভারে এক চার হজম করলেও মাত্র পাঁচ রান দেন মোস্তাফিজুর রহমান।
টাইগারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে স্বভাবসুলভ অতি আগ্রাসী ব্যাটিং করতে পারছিল না ইংল্যান্ড। তবে ইনিংসের পঞ্চম ওভারে মোস্তাফিজকে এক চার ও ছক্কা মেরে যেন সেটাই শুরু করতে চাইলো ইংলিশরা।
পাওয়ার প্লের শেষ ওভারের প্রথম বলেই জীবন পান ইংলিশ ওপেনার সল্ট। নিজের বলে নিজেই ক্যাচ ফেলেন নাসুম আহমেদ। একই ওভারে জস বাটলারকে নতুন জীবন দেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। নাসুমের বলে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন বাটলার, কিন্তু সোজার উপরে উঠে গেলেও সহজ ক্যাচ ফেলে দেন সাকিব।
পরের বলেই চার মেরে দলের রান পঞ্চাশ পূর্ণ করেন সল্ট। নতুন জীবন পেয়ে দুই ওপেনার ইংলিশদের স্কোরবোর্ডে পাওয়ার প্লেতে জমা করেন ৫১ রান।
এরপর বল হাতে নিয়ে রানের গতি কিছুটা কমাতে সক্ষম হন অধিনায়ক সাকিব। তবে সাকিবকে ছক্কা হাকিয়েই রানের গতি আবারও বাড়ানো শুরু করেন বাটলার ও সল্ট। নতুন জীবন পেয়ে তার পুরোটাই কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছেন দুই ইংলিশ ওপেনার।
ইনিংসের ১০ম ওভারে নিজের বোলিং কোঠা পূরণ করতে এসে দলকে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন নাসুম আহমেদ। ওভারে শেষ বলে সল্টকে লিটনের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান তিনি।
তিন নম্বরে নেমে খুব বেশিক্ষণ উইকেটে টিকতে পারেননি ডেভিড মালান। দলীয় ৮৮ রানে নাজমুল হোসেন শান্তর দারুণ ক্যাচে তাকে ফিরিয়ে দেন সাকিব।
তবে অন্যপ্রান্তে ঠিকই ইংল্যান্ডের রানের গতি বাড়িয়েছেন অধিনায়ক বাটলার। ৩২তম বলে হাসান মাহমুদকে লং অনের উপর দিয়ে উড়িয়ে মেরে স্পর্শ করেছেন হাফ সেঞ্চুরি। পরের বলে আবারও মিড উইকেট দিয়ে উড়িয়ে মারেন আরও একটি ছক্কা।
বাটলারের তোপে ১৫ ওভারে ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে জমা হয় ১২৬ রান। চার নম্বরে নেমে আগ্রাসী ব্যাটিং করে অধিনায়ককে যোগ্য সঙ্গ দেন বেন ডাকেট।
এরপর টানা দুই বলে দুই উইকেট তুলে নেয় টাইগাররা। ১৬তম ওভারের শেষ বলে মোস্তাফিজ ডাকেটের স্টাম্প উপড়ে ফেলার পর ১৭তম ওভারের প্রথম বলে বাটলারকে শান্তর ক্যাচ বানিয়ে ফিরিয়ে দেন হাসান মাহমুদ।
দলীয় ১৩৪ রানে ফেরার আগে ১৩ বলে তিন চারে ২০ রান করেন ডাকেট আর বাটলারের ব্যাট থেকে আসে ৪২ বলে সমান চারটি করে চার ও ছক্কায় ৬৭ রানের ইনিংস।
১৯তম ওভারে নিজের দ্বিতীয় উইকেট শিকার করেন হাসান মাহমুদ। ম্যাচে নিজের তৃতীয় ক্যাচ নিয়ে স্যাম কুরানকে বিদায় করেন শান্ত। ইনিংসের শেষ ওভারে বল হাতে নিয়ে প্রথম বলেই ক্রিস ওকসকে ফিরিয়ে দেন তাসকিন আহমেদ।
টাইগার বোলারদের তোপের মুখে শেষ পাঁচ ওভারে মাত্র ৩০ রান তুলতে সক্ষম হয় ইংল্যান্ড। সবমিলিয়ে ছয় উইকেট হারিয়ে ২০ ওভার শেষে ১৫৬ রান করেছে ইংল্যান্ড।