বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই ইরানের বিপক্ষে আধিপাত্য দেখানো শুরু করেছে ইংল্যান্ড। প্রথমার্ধ জুড়ে ইংলিশদের একের পর এক আক্রমণ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে ইরানের রক্ষণভাগ।
ইরানের উপর ছড়ি ঘোরানোর ফলও পেয়েছে ইংল্যান্ড। দাপট দেখিয়ে প্রথমার্ধেই তারা এগিয়ে ৩-০ গোলের ব্যবধানে। ইংলিশদের জার্সিতে বিরতিতে যাওয়ার আগে গোল করেছেন জেড বেলিংহ্যাম, সাকা ও রহিম স্টার্লিং।
ম্যাচের প্রথম থেকে ইরানের রক্ষণে হামলে পড়ে ইংলিশ ফুটবলাররা। প্রথম আক্রমণেই পেনাল্টির আবেদন করেছিল ইংল্যান্ড। তবে ভিএআর দেখে সে আবেদন নাকচ করে দেন রেফারি।
ম্যাচের ষষ্ট মিনিটে ডান পাশ থেকে দারুণ ক্রস দিয়েছিলেন ইংলিশ ফুটবলার লুক শ। তবে সাকা তার ক্রসে পা লাগাতে না পারায় সুযোগ হাতছাড়া হয় ইংল্যান্ডের।
এরপর ম্যাচে অষ্টম মিনিটে ইংলিশ ফুটবলার ট্রিপারের মারা ফ্রি কিকক্লিয়ার করতে এসে নিজ দলের সতীর্থের সঙ্গে সংঘর্ষে মারাত্মকভাবে নাকে আঘাত পান ইরান গোলরক্ষক বেইরানব্যান্ড। দীর্ঘসময় ধরে চলে তার শুশ্রূষা। এতে করে খেলা বন্ধ ছিল প্রায় প্রায় সাত মিনিট।
এরপর আবার খেলা শুরু হলেও মাত্র এক মিনিটের ব্যবধানে নিজেকে উঠিয়ে নেওয়ার সংকেত দেন ইরান গোলরক্ষক। ফলে ম্যাচের প্রথম ১৭ মিনিটের মধ্যেই বাধ্য হয়ে গোলরক্ষক বদল করতে হয় তাকে।
এরপর আবার খেলা শুরু করলে আবারও আধিপাত্য দেখানো শুরু করে ইংল্যান্ড। তবে এর মাঝে মাঝে আক্রমণের চেষ্টা চালিয়েছে ইরানও।
ম্যাচের ৩০তম মিনিটে দারুণ এক সুযোগ হাতছাড়া করে ইংল্যান্ড। ডান পাশ থেকে মারা রহিম স্টার্লিয়ের দারুণ পাস সাকা নেটের বাইরে মারলে হতাশ হতে হয় ইংলিশ শিবিরকে।
পরের মিনিটেই আরও একবার হতাশ হতে হয় ইংল্যান্ডকে। কর্ণার থেকে উড়ে আসা বলে হ্যারি ম্যাগুয়ের হেড করলেও সেটাও ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে।
তবে গোলের জন্য এরপর আর বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি ইংল্যান্ডকে। ম্যাচের ৩৫তম মিনিটে সাকার ক্রসে দুর্দান্ত হেডে ইংলিশদের এগিয়ে দেন এই ম্যাচেই ইংল্যান্ডের হয়ে অভিষেক হওয়া জেড বেলিংহ্যাম। অভিষেক ম্যাচেই গোল করে রাঙিয়ে রাখলেন সদ্য কৈশোর পেরোনো এই ইংলিশ ফুটবলার।
বেলিংহ্যাম এই ম্যাচেই তৃতীয় সর্বকনিষ্ট ফুটবলার হিসেবে ইংল্যান্ডের হয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়েছেন। এই রেকর্ডে সবার উপরে মাইকেল ওয়েনের, যিনি ১৯৯৮ সালে মাত্র ১৮ বছর ১৯৮ ইংল্যান্ডের জার্সি পড়েছিলেন। বর্তমান দলে থাকা লুক শ’র অভিষেক হয়েছিল ২০১৪ সালে মাত্র ১৮ বছর ৩৪৭ দিন বয়সে।
গোল হজম করার পর শোধ দেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে ইরান। তবে ইংলিশদের শক্ত রক্ষণে থুবড়ে পড়েছে তাদের আক্রমণ।
বিরতিতে যাওয়ার আগ মুহূর্তে আবারও গোলের দেখা পায় পায় ইংল্যান্ড। প্রথম গোলে অ্যাসিস্ট করে এবার নিজেই গোলদাতার আসনে বসেন সাকা। কর্ণার থেকে উড়ে আসা বলে প্রথমে সতীর্থ ভালো করে হেড দিতে না পারলে বল যায় সাকার সামনে, সেখান থেকেই দুর্দান্ত শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।
এক মিনিটের ব্যবধানে ম্যাচে এবার গোলদাতা রহিম স্টারলিং। বক্সের ডান পাশ থেকে অধিনায়ক হ্যারি কেনের ক্রসে নিখুঁত দক্ষতায় পা লাগিয়ে ইংল্যান্ডকে ৩-০ এগিয়ে দেন এই ইংলিশ ফুটবলার।
অতিরিক্ত সময়ের খেলা ১৪ মিনিট পার হলেও প্রথমার্ধে আর কোনো গোল পায়নি ইংল্যান্ড। তবে শেষদিকে একটি গোলের সুযোগ পেলেও হাতছাড়া করেছে ইরান। ফলে তিন গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় ইংল্যান্ড।