অ্যাশেজের চতুর্থ টেস্টের প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের নাস্তানাবুদ করছে ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে করা ৩১৭ রান ‘বাজবল’ আদলে খেলে ইংলিশরা টপকে গেছে ৫৪.৩ ওভারে। দিন শেষে ৪ উইকেটে ৩৮৪ রান করা ইংলিশদের লিড ৬৭ রানের। ক্রিজে ২৪ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন বেন স্টোকস। তার সঙ্গী হ্যারি ব্রুক আছেন ১৪ রানে।
৮ উইকেটে ২৯৯ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করেছিল অস্ট্রেলিয়া। এরপর প্রথম বলেই অ্যান্ডারসনের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন পেট কামিন্স। আউট হন ১ রান করে। এরপর স্কোরবোর্ডে ১৮ রান যোগ হতেই অস্ট্রেলিয়ার বাকি উইকেটিও পড়ে। ৪ রান করা জশ হ্যাজেলউডকে ফেরান ক্রিস ওকস। ইংলিশদের হয়ে ৬২ রান খরচায় ৫ উইকেট শিকার ক্রিস ওকসের।
প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে প্রথম বলে চার মেরে শুরু ইংলিশ ব্যাটার জ্যাক ক্রলির। তবে দলীয় ৯ রানের মাথায় ইংলিশরা হারায় তাদের প্রথম উইকেট। ১ রান করা বেন ডাকেট শিকার হন মিচেল স্টার্কের।
মঈন আলী কেন তিন নম্বরে খেলতে চেয়েছেন, তা বুঝিয়ে দিলেন ৮২ বলে ৭ চারে ৫৪ রানের ইনিংসে। দ্বিতীয় উইকেটে ক্রলির সঙ্গে তার জুটি ১৫২ বলে ১২১ রানের। তাদের এই জুটি ভাঙেন প্রথম উইকেট নেওয়া মিচেল স্টার্ক।
ক্রলি তো এক প্রান্তে ওয়ানডে গতিতে ব্যাট করেই যাচ্ছিলেন, চারে নেমে জো রুটও যোগ দিলেন বাজবল-উৎসবে। মঈন আলী ক্রিজে থাকার সময়ে ৬৭ বলে ৭ চারে ফিফটিতে পৌঁছেছিলেন ক্রলি, জো রুট ক্রিজে আসার কিছুক্ষণ পর সেঞ্চুরিতে পৌঁছালেন। যাতে বল খরচা করেন ৯৩টি। শতক হাঁকানোর ইনিংসটি তিনি সাজান ১২ চার আর ১ ছক্কায়। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্টে যা ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তৃতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি। ১৯০২ সালে ওভালে ৭৬ বলে সেঞ্চুরি করে চূড়ায় আছেন গিলবার্ট জেসপ।
রুট-ক্রলি জুটি ১০০ পেরোল কিছুক্ষণ পর, তাতে বল খরচ মাত্র ৮২টি। চা-বিরতিতে যাওয়ার আগে ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ড ৪১ ওভারে ২ উইকেটে ২৩৯ রান।
চা-বিরতি থেকে ফেরার পর কামিন্সকে স্কুপ করে চার মেরে ফিফটিতে পৌঁছালেন রুট। ৭ চার ও ১ ছক্কায় অর্ধশতক করা রুট খেলেন ৪৫ বল।
১৫২ বলে দেড় শ ছুঁয়ে ক্রলি ছুটছিলেন দ্বিতীয় দ্বিশতকের পথে। কিন্তু মাইলফলক থেকে ১১ রান দূরে থাকতে গ্রিনের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারিতে শট খেলতে গিয়ে স্টাম্পে টেনে এনে বোল্ড ক্রলি। থামল ১৮২ বলে ২১ চার ৩ ছক্কায় ১৮৯ রানের অসাধারণ ইনিংস। ভাঙল তৃতীয় উইকেটে ক্রলি-রুটের ২০৬ রানের জুটি। ১৯৯৭ সালে এজবাস্টনে নাসের হুসেইনের ২০৭ রানের পর ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের কারও সর্বোচ্চ ইনিংস এটিই।
দেশের মাটিতে অ্যাশেজে ইংল্যান্ডের ওপেনারদের মধ্যে ক্রলির চেয়ে বড় ইনিংস আছে স্রেফ তিনটি- ১৯৩৮ সালে ওভালে লেন হাটনের ৩৬৪, একই মাঠে ১৯৮৫ সালে গ্রাহাম গুচের ১৯৬ ও লিডসে ১৯৭৭ সালে জেফ বয়কটের ১৯১।
ইনিংসের ৬২তম ওভারের প্রথম বলে হ্যাজলউডের বলে বোল্ড রুট। ৯৫ বলে ৮ চার ১ ছক্কায় সাজানো ইনিংসটা থামে সেঞ্চুরি থেকে ১৬ রান দূরে থাকতে। রুট আউট হলেন ৮৪ রানে। দলের রান তখন ৩৫১।
এরপর আর কোন উইকেট না হারানো ইংশিরা শেষ পর্যন্ত দিন শেষে করে ৩৮৪ রানে। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২ উইকেট নেন মিচেল স্টার্ক।