এশিয়া কাপে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন-আপে সাকিব, মুশফিক বাদে সবাই তরুণ। ওপেনিংয়ে দলটার ভরসা সেই তরুণরাই। তামিম ইকবাল ও লিটন দাস আগেই এশিয়া কাপের দল থেকে ছিটকে গেছেন। তাই এই টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টাইগারদের হয়ে গোড়াপত্তন করেন আন্তর্জাতিক কিছু ম্যাচ খেলা নাঈম শেখ ও অভিষিক্ত তানজিদ হাসান তামিম। দল নির্বাচকরা আস্থা রাখেন এই অনভিজ্ঞ দুই ওপেনারের উপরে। কিন্তু তারা নির্বাচকদের আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি।
এদিন দলের দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার সাকিব, মুশফিকও হয়েছেন ব্যর্থ। লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ৫ উইকেটে ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণে হারতে হয় টাইগারদের। ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ম্যাচ হারের দায়টা ব্যাটাদের উপরেই চাপান। তবে বাংলাদেশ অধিনায়কের এই মন্তব্য ভালো লাগেনি পাকিস্তান সাবেক ক্রিকেটার রমিজ রাজার। পাকিস্তানের সাবেক এই ব্যাটারের মতে, সাকিবের মন্তব্যর কারণে দলের মনোবল ভেঙে যাবে। রমিজ রাজার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে সাকিবের মন্তব্য নিয়ে কথা বলেন।
রমিজ বলেন, “আমার ভালো লাগেনি, যখন ম্যাচ পরবর্তী প্রেজেন্টেশনে সাকিব বললেন যে লিটন ও তামিম নেই। এটা বলা ঠিক নয়। কারণ এমন মন্তব্যের পর সব দলই ভেঙে পড়ে। তারা মনে করে, আমাদের ওপর ভরসা নেই, আমাদের স্কিলের ওপর অধিনায়কের ভরসা নেই, আমাদের গোনায় ধরছেন না এবং তার চোখে আমরা ম্যাচ উইনার নই।”
রমিজ আরও বলনে, “আপনাকে কৌশলগত ও বিশ্লেষণগতভাবে এই হারের কারণ বের করতে হবে। দ্রুত এর সমাধান করতে হবে। কারণ বাংলাদেশের পরের ম্যাচ আফগানিস্তানের বিপক্ষে। আর আফগানিস্তান বাংলাদেশের বিপক্ষে অনেক ভালো ম্যাচ জিতেছে। বাংলাদেশকে হারিয়েছে। তাই সাকিবের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো দলের মানসিকতা ভালো অবস্থায় রাখা এবং এই হার থেকে শেখা। কারণ এটা কঠিন উইকেট ছিল।”
বাংলাদেশ দলে সাকিব মতো মানসম্মত আর কোনো অলরাউন্ডার নেই। যেটা বাংলাদেশ দলের জন্য বড় সমস্যা বলে মনে করেন পাকিস্তানের সাবেক বোর্ড সভাপতি। রমিজ রাজা বলেন, “সাদা বলের ক্রিকেটের জন্য শ্রীলঙ্কা কঠিন উইকেট থাকে। কারণ এখানে বল আটকে আসে, এখানে হাফ স্পিনারও পুরো স্পিনার হয়ে যায়। সাকিবের বলেও স্পিন হচ্ছিল। সাধারণত সে খুব বেশি বল স্পিন করে না। বাংলাদেশের জন্য আরেকটি সমস্যা হলো, তাদের কাছে দুই-একজন কোয়ালিটি অলরাউন্ডার নেই। সাকিব বাদে বাকি কোনো অলরাউন্ডার নেই।”
পাকিস্তানি ব্যাটার আরও বলেন, “দ্বিতীয়টা হলো বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার অপরিপক্ক বোলারদের চড়াও হওয়ার সুযোগ দিয়েছে। ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ১০ ওভারে ৩৫ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছে। ২১ বছর বয়সী ওয়েললাগের থেকে ওভারে মাত্র ৪ এর ওপর রান নিয়েছে, এটাও এক ভুল ছিল। পাথিরানার কাছে ক্লাস, স্পিড আছে, স্লিংগিং অ্যাকশনের কারণে কিছুটা মুশকিল বোলার। কিন্তু থিকশানাকে চড়াও হতে দিয়েছে। কোনো জায়গায় মনে হয়নি, যে পরিকল্পনা ছিল।”
টাইগারদের কালকে ম্যাচে কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তারা বোলারদের বুঝতে পারেননি তাদের কোন বোলারের উপরে চড়াও হতে হবে আর কোন বোলারকে দেখে শুনে খেলতে হবে। এই জন্য এশিয়ার দলগুলোর পাকিস্তান ব্যাটারদের অনুসরণ করতে বলেন পাকিস্তান ব্যাটার। সাবেক পিসিবি সভাপতি বলেন, “পরিকল্পনা এই কারণে ছিল না যে, এসব বোলারদের ঠিকমতো বুঝে উঠতে পারেনি। এমনকি আগ্রাসন দেখায়নি, জুটিও হয়নি। যখন উইকেট পড়তে থাকে, তখন জুটি গড়া জরুরি। ভারত বাদে এশিয়ান দলগুলোর বাবর আজমকে অনুসরণ করা উচিত।”