এবার যুক্তরাষ্ট্রে আয়োজন হয়েছে দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের আসর কোপা আমেরিকা। আয়োজক দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবল ফেডারেশন (কনমেবল) হলেও উত্তর, মধ্য আমেরিকা ও ক্যারিবিয় ফুটবল সংস্থা বা কনকাকাফ অঞ্চলের একাধিক দলও আমন্ত্রিত হিসেবে খেলছে আসর।
কোপা আমেরিকার টুর্নামেন্টে এবারই প্রথম খেলতে এসে ১৪টি হলুদ কার্ড হজম করেছে কানাডা। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে সেমিফাইনালে কানাডা কোচ জেসে মার্শ নিজেও পেয়েছেন হলুদ কার্ড। এই কার্ড দেওয়ার বিষয়ে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তার। মার্শের ভাষ্য, “কনকাকাফ অঞ্চলের দলগুলোর বেলায় কার্ড পাওয়ার হার অনেক বেশি।”
মার্শের মনে হচ্ছে, কোপা আমেরিকায় তাদের সঙ্গে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকদের মতো আচরণ করা হয়েছে। শুধু মার্শেই নন, উরুগুয়ের কোচ মার্সেলো বিয়েলসাও অভিযোগ করে বলেছেন, “কনমেবল অপেশাদারভাবে কোপা আয়োজন করেছে।”
টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচের পর ঘাস নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি। উরুগুয়ের আর্জেন্টাইন কোচ বিয়েলসা তো সার্বিক আয়োজন নিয়েই প্রচণ্ড বিরক্ত। বিয়েলসার কথা, “মাঠগুলো উপযুক্ত না থাকার পরও সংবাদ সম্মেলনে এগুলো ঠিক আছে বলতে আমাদের হুমকি দেয়া হয়েছে।”
আর্জেন্টাইন কোচের আরও অভিযোগ, “ফুটবলারদেরও কোনো কথা বলতে বারণ করা হয়েছে। অনুশীলন মাঠগুলো ছিলো অগোছালো। বলিভিয়া তো অনুশীলনই করেনি। দলটি বলভিয়া বলে কিছু হয়নি। এই টুর্নামেন্ট আমার কাছে পেশাদার মনে হয়নি। অনেক অব্যবস্থাপনা ছিলো।”
কলম্বিয়া-উরুগুয়ে সেমিফাইনালের পর দর্শকদের সঙ্গে মারামারিতে জড়ান উরুগুয়ের ফুটবলাররা। কানাডা কোচ জেসে মার্শ মনে করেন, “এই ঘটনা কানাডার কেউ ঘটালে এতক্ষণে নিষিদ্ধ করা হতো।” উরুগুয়ের বিপক্ষে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচেও অনেক কিছু তাদের বিপক্ষে যাবে বলে শঙ্কা করেন কানাডা কোচ।
এবার কোপা আমেরিকার রেফারিং নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলো ব্রাজিলও। কলম্বিয়ার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ব্রাজিলকে ন্যায্য পেনাল্টি দেওয়া হয়নি। পরে কনমেবল আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্লেষণ করে রেফারির ভুল স্বীকারও করে নেয়।
কানাডা কোচ মার্শ মনে করেন দক্ষিণ আমেরিকান দলের তুলনায় তাদের সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, “পুরো আসর জুড়ে আমরা সামাজিক মাধ্যমে ও সামনাসামনি বর্ণবাদের শিকার হয়েছি। আমাদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকদের মতো ব্যবহার করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র-উরুগুয়ে ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী রেফারিং হয়েছে।”
কানাডা ও মেক্সিকোর সঙ্গে মিলে আগামী ২০২৬ সাল যুক্তরাষ্ট্রেই আয়োজন হবে বিশ্বকাপ ফুটবল। তবে তার আগেই কোপা আমেরিকায় বেশ কিছু স্টেডিয়ামের ঘাস ও অনুশীলন সুবিধা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। এমনকি রেফারিং নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কিছু দল। ফলে আগামী বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজন ঘিরে এসব প্রশ্ন অস্বস্তি বাড়াবে।