বেশ কয়েক বছর ধরে ওয়ানডেতে দারুণ খেলছে বাংলাদেশ। আর তাদের এই পারফরমেন্সই কোটি-কোটি ভক্তদের স্বপ্ন দেখাচ্ছে বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপে ভালো কিছু করার। নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমনও মনে করেন গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতা যদি ধরে রাখতে পারে বাংলাদেশ তাহলে এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়া সম্ভব।
২০১২ সালে এশিয়া কাপে প্রথমবারের মতো ফাইনাল খেলে বাংলাদেশ। সেই বার তীরে এসে তরী ডুবে টাইগারদের। পাকিস্তানের বিপক্ষে হেরে যায় ২ রানে। সেই ম্যাচ শেষে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে মুশফিক-সাকিব-রিয়াদরা। এরপর আরও দুই বার ফাইনালে উঠে টাইগাররা। ২০১৬ এবং ২০১৮ সালে। দুই বারিই ভারতের কাছে হেরে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন ভঙ্গ হয় সাকিব-তামি-মাশরাফিদের।
বিশ্বকাপের আগে এবার শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানে যৌথভাবে হবে ওয়ানডে সংস্করণের এশিয়া কাপ। স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা ছাড়াও বাংলাদেশের গ্রুপে রয়েছে আফগানিস্তান। তাদের বিপক্ষে লড়েই জায়গা করতে হবে সুপার ফোরে ।
ওয়ানডে সংস্করণ হওয়ায় এবার বড় আশা দেখছেন বলে মিরপুরে শনিবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানালেন জাতীয় দলের নির্বাচক হাবিবুল। তবে কাজটি যে সহজ হবে না, সেটিও ভালোই জানা তার।
সুমন বলেন, “এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টগুলো খুব কঠিন হয়। এখানে সেরা ক্রিকেটটা খেলতে হবে। বাকি যে দলগুলো, সবাই কিন্তু সময়ের সঙ্গে অনেক এগিয়েছে। গত ৪-৫ বছর আগের চেয়ে আফগানিস্তান অনেক এগিয়েছে। শ্রীলঙ্কাও গুছিয়ে নিয়েছে। ভারত, পাকিস্তান অনেক শক্তিশালী। আমাদের সেরা ক্রিকেটটাই খেলতে হবে, যদি ভালো করতে হয়।”
এশিয়া কাপে তিন বার ফাইনালে উঠেও সঙ্গী হয়েছে হতাশা। এবার তেমন সুযোগ এলে সেটি দল লুফে নেবে বলেই আশার সাবেক অধিনায়কের।
বাংলাদেশ দলের নির্বাচক বলেন, “এটি অবশ্যই অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। এই ধরনের টুর্নামেন্ট সবসময়ই চ্যালেঞ্জ হয়। এশিয়া কাপে বাংলাদেশ আগেও ফাইনাল খেলেছে। তখন আমরা জিততে পারিনি। আশা করছি, যদি এরকম পরিস্থিতিতে যেতে পারি, এবার হয়তো মিস করব না। ”
সাম্প্রতিক সময়ের এই পারফরম্যান্স এশিয়া কাপেও ধরে রাখায় জোর দিলেন হাবিবুল।
বাশার বলেন,“গত এক বছরের পারফরম্যান্স যদি দেখেন, তাহলে আমরা আশাবাদী হতেই পারি। তবে সেই পারফরম্যান্সের পুনরাবৃত্তি করাটা খুব জরুরি। কারণ বড় টুর্নামেন্টে সেরা ক্রিকেটটাই খেলতে হবে। আমার মনে হয়, দল হিসেবে আমরা প্রস্তুত আছি। দল হিসেবে আমরা ভালো করছি।”
এশিয় কাপে তামিমের না থাকায় চিন্তার জায়গা বেড়েছে ওপেনারদের নিয়ে। নাঈম শেখ এখন অবধি চার ওয়ানডে খেলেছেন, করেছেন স্রেফ ১০ রান। তানজিদ হাসান তামিমের এখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকই হয়নি। ওপেনার হিসেবে এশিয়া কাপে একাদশে থাকার কথা লিটন দাসের, কিন্তু তিনিও খুব একটা ভালো অবস্থায় নেই।
তবুও উদ্বোধনী ব্যাটিং নিয়ে চিন্তিত নন নির্বাচক হাবিবুল বাশার। তিনি বলছেন, ভয়ডরহীন ক্রিকেটের জন্য ক্রিকেটারদের পাশে করার কথা।
হাবিবুল বাশার বলেনন, “ আমার মনে হয় না চিন্তিত হওয়ার কিছু আছে। আমাদের লক্ষ্য একদম পরিষ্কার। আমরা যে ক্রিকেটটা খেলার চেষ্টা করছি। যদি দেখেন, আমাদের খেলার ধরনটা কিন্তু বদলেছে। আমরা যে ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলার কথাটা বলছিলাম, সেটা কিন্তু আমরা গত ২-৩ সিরিজ ধরে খেলছি। আমাদের পারফরম্যান্সে দেখতে পারবেন। ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে গেলে কিন্তু ক্রিকেটারদের পাশে থাকতেই হবে। কারণ এই ধরনের ক্রিকেটের যে মূলমন্ত্র যে, আপনি আপনার ইতিবাচক ক্রিকেটটা খেলবেন। এতে করে যদি ১-২ ম্যাচ রান নাও করেন, আপনাকে আপনার দল ব্যাক করবে। সেই আত্মবিশ্বাস দেওয়াটা কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ। ”
লিটনকে নিয়ে বাশার আরও বলেন, “ লিটন দাস ক্লাস ক্রিকেটার। বড় মাপের ক্রিকেটার। আমি নিশ্চিত এই অফ ফর্মটা সময়মতো কাটিয়ে উঠবে লিটন। অনেক সময় ভালো ফর্মে থাকতে থাকতে ক্রিকেটারদের তো খারাপ সময় আসে। আমি মনে করি ওর এখন খারাপ সময় চলছে। সামনে ঠিক হয়ে যাবে। আর যারা আছে, নাঈম শেখ পুরোনো ক্রিকেটার। আগেও খেলেছেন। হয়তো ফিরে এসেছেন অনেক দিন পরে। যখন একজন ক্রিকেটার অনেক দিন পর ফিরে আসে, তাকে একটু সময় দেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। তাদের স্কিল নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। সবাই স্কিলফুল প্লেয়ার। বড় মঞ্চে তাদের ভালো খেলার সম্ভাবনা বেশি, আমি বিশ্বাস করি। ”