বলা হয় আপনি যদি বড় স্বপ্ন না দেখেন, তাহলে আপনি বড় হবেন না। বড় স্বপ্ন দেখলেই বড় হওয়া যায় না; কিন্তু স্বপ্ন না দেখে, পরিকল্পনা না করে কেউ বড় কিছু অর্জন করেছে, তা-ও হয় না। কাজেই স্বপ্ন বড় হতে হবে। ২০২৩ আইসিসি ছেলেদের ক্রিকেট বিশ্বকাপ জিতবে বাংলাদেশ, এই স্বপ্নের কথাই বলছি। এই স্বপ্ন দেখার কারণ একটাই বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ওয়ানডে পারফরমেন্স।
তার ওপরে এটাই সম্ভবত শেষ বিশ্বকাপ সাকিব-তামিম-মুশফিকদের। তাই শেষ বিশ্বকাপটা রাঙ্গিয়ে রাখতে চান তারা। খেলোয়াড়দের মতো এই দুই আসর নিয়ে টাইগার সমর্থকরা স্বপ্ন দেখছেন নিজ দলের ভালো কিছু করার। অন্য সবার মতো ক্রিকেট কোচ ও বিশ্লেষক নাজমুল আবেদিন ফাহিমও বলছেন বিশ্বকাপে বাংলাদেশ এবার ভালো পারফর্ম করবে
তার মতে “ভারত বা ইংল্যান্ডের ক্ষেত্রে যতটা ইতিবাচক ভাবে বলা যায় ফাইনাল খেলবে কাগজে-কলমে হিসাব করলে তা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বলা যায় না। তবে বাংলাদেশ এখন যে দল, তাদের যদি সমন্বয় ভালো থাকে এবং তারা যদি ইতিবাচক ক্রিকেট খেলতে পারে তাহলে ১৯৮৩ সালে ভারত বা ১৯৯৬ সালে শ্রীলঙ্কার মতো কিছু ঘটলে অবাক হবো না আমি। আর চ্যাম্পিয়ন হওয়ার যে মানসিকতা সেটাই হয়তো ভালো করার রসদ জোগাবে আমাদের।”
সাত নম্বর পজিশনটাই কে খেলবে? চলছে নানা আলোচনা। অনেকের মতে ফিরিয়ে আনা হোক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে। নাজমুল আবেদিন ফাহিমও চান তেমনটাই। তবে বিবেচনায় রাখতে হবে তার ফিটনেসও।
রিয়াদ নিয়ে তার ভাষ্য, “অবশ্যই ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে রিয়াদকে রাখবো। কারণ দুইটা। একটা- দলের কঠিন সময়ে যে প্রেসার তা নেওয়ার ক্ষমতা, তার আছে; যা হয়তো তরুণরা নিতে পারবে না। পাশাপাশি যে কন্ডিশনে খেলা হচ্ছে সেখানে রিয়াদ ভালো করবে। সে আগের বিশ্বকাপগুলোতে ভালো খেলেছে, যা কাজে দেবে। তবে পাশাপাশি এটাও দেখতে হবে ওর ফিল্ডিং বা বোলিং এর অবস্থা কী।”
পুরোপুরি ফিট নন তামিম ইকবাল খান। যদি ইনজুরির কারণে ছিটকে যান তিনি তাহলে তার জায়গা কে নেবেন। বাংলাদেশের এই ক্রিকেট বিশ্লেষকের মতে তামিমের জায়গা নিতে পারেন আরেক তামিম।
এই তরুণ তুর্কি নিয়ে নাজমুল আবেদিন বলেন, “বিশ্বকাপে যদি তামিম না খেলে বা তৃতীয় ওপেনার হিসেবে কাউকে বিবেচনা করা হয়, তাহলে আমি তানজিদ হাসান তামিমকে এগিয়ে রাখবো। কারণ তার খেলার ভেতরে ধারাবাহিকতা রয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতিতে ও নিজেকে মানিয়ে নিজের সেরাটা দিতে পারবে।”
বিশ্বকাপে মাশরাফি দলের মেন্টর হিসেবে থাকলে ভালোও হতে পারে কিংবা হিতের বিপরীতও হতে পারে। এমনটাই জানান তিনি।
ফাহিম বলেন, “মাশরাফি দলে সঙ্গে থাকলে ভালো কিছুই হবে। কারণ ও ভালো একজন মেন্টর। ও যখন দলে সাথে ছিলো তখন খেলোয়াড়রা স্বাচ্ছন্দ্যভাবে ক্রিকেট খেলেছে। কারণ সে জানতো খেলোয়াড়রা স্বাচ্ছন্দ্যে থাকলে নিজের সেরাটা দিতে পারবে। এ ছাড়াও এই দলে আরও ২-৩ জন সিনিয়র ক্রিকেটার রয়েছে তারা জানে কীভাবে একটা খেলোয়াড়ের কাছ থেকে ভালো কিছু বের করে আনা যায়। মাথায় রাখতে হবে দলে যারা প্রধান (কোচ এবং অধিনায়ক) তাদের একমত হওয়া জরুরি। তাদের এক হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কারণ আমরা যদি বাইরে থেকে কিছু চাপিয়ে দেই আর তা যদি দুজন মেনে না নেয় সেটা খুব একটা ভালো হবে না।”
সবশেষে আশার কথা শুনিয়ে বাংলাদেশের এই ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ বলেন, “বাংলাদেশ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হতে পারে যদি আমরা বিশ্বাস করি যে আমরা পারব। আর সে লক্ষ্যে সাধনা করব। কারণ মিরাকল ক্যান হ্যাপেন।”